চলতি বছর সেপ্টেম্বরের ২৩ তারিখ থেকে চালু হচ্ছে ‘স্মার্ট কার্ড’ বিতরণ৷ তাই জাতীয় পরিচয় পত্রের বিপরীতে এই কার্ড নিয়ে নাগরিকদের মধ্যে এরইমধ্যে সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক আগ্রহ৷ তবে কার্ডটি এখনই সবাই পাচ্ছেন না৷ এটি ২০০৮ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত যারা ভোটর হয়েছে তাঁরাই স্মার্ট কার্ডের আওতায় চলে আসবে আগামী এক মাসের মধ্যে৷ এতে স্মার্ট কার্ডে পাবে তিন স্তরের ২৫টি নিরাপত্তা৷
উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্র জানা যায়, স্মার্ট কার্ড হবে ১০ ডিজিটের৷ এনআইডি-র মতো ১৩ কিংবা ১৬ ডিজিটের লম্বা লাইন থাকছে না এতে৷ তাছাড়া দেখতে অনেকটা ব্যাংকের এটিএম কার্ডের আদলে হবে এই কার্ড৷ আর এটি ব্যবহার করেই নাগরিকদের সব রকম সুযোগ-সুবিধা নিতে হবে৷
স্মার্ট কার্ড পাওয়ার পর, তিন স্তরের ২৫টি নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্যের এই স্মার্ট কার্ড নাগরিকদের পরিচিতির গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়াবে৷ অর্থাৎ নাগরিকরা নানা ধরনের কাজে এই স্মার্ট কার্ড ব্যবহার করতে পারবেন৷ এর মধ্যে থাকবে ড্রাইভিং লাইসেন্স, টিআইএন, পাসপোর্ট, চাকরির আবেদন, স্থাবর সম্পত্তি কেনাবেচা, বিয়ে রেজিস্ট্রেশন, ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খোলা ও ব্যাংক ঋণ, শেয়ার-বিও অ্যাকাউন্ট, সরকারি বিভিন্ন ভাতা উত্তোলন, সরকারি কর্মচারীদের বেতন ও অবসরপ্রাপ্তদের পেনশন উত্তোলন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি, বিমানবন্দরে আগমন ও বহির্গমন, বিমা স্কিম, গ্যাস-বিদ্যুৎ সংযোগ, বিভিন্ন ধরনের ই-টিকিটিং, মোবাইল সংযোগ, হেল্থকার্ড, ই-ক্যাশসহ আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় কাজ করা যাবে এর মাধ্যমে৷ মোট কথা, নাগরিকদের শনাক্তকরণের প্রশ্নে এই স্মার্ট কার্ডই হবে যথেষ্ঠ৷
তবে প্রচলিত এ সব কাজের বাইরেও আরো অনেক কাজে এই কার্ড ব্যবহার করা যাবে বলে জানান উখিয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা (অতিরিক্ত) মোহাম্মদ বেদারুল ইসলাম৷
জানা গেছে, জাতীয় পরিচয়-পত্র বা এনআইডি-র উন্নত প্রযুক্তি নির্ভর স্মার্ট কার্ড বিতরণ শুরু হচ্ছে ২৩ সেপ্টেম্বর৷ প্রাথমিক পর্যায়ে পাঁচ ইউনিয়নের ২০০৭ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত যারা ভোটর হয়েছে তাদেরকে এই স্মার্ট কার্ড বিতরণ করা হবে৷ পর্যায়ক্রমে ২০২০-২৩ সালের সব ভোটারকেই স্মাট কার্ড দেওয়া হবে৷ তবে এই কার্ড নেওয়ার সময় নাগরিকদের পুরনো ভোটার আইডি কার্ড জমা দেওয়ার পাশাপাশি ১০টি আঙুলের ছাপ ও চোখের মণির ছবি দিতে হবে৷ এক্ষেত্রে কারও কার্ড হারিয়ে গেলে প্রথমে পুরনো কার্ডটি তুলে তা জমা দিয়ে তারপর স্মার্ট কার্ড নিতে হবে৷
উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার যে অভিলক্ষ্যে দেশকে এগিয়ে নিচ্ছেন, তা বাস্তবায়নে সকল পর্যায় থেকে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। বাংলাদেশকে সব দিক থেকে স্মার্ট দেশে পরিণত করার মূল চাবিকাঠি হলো ডিজিটাল সংযোগ।
উখিয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা (অতিরিক্ত) মোহাম্মদ বেদারুল ইসলাম জানান, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশেও চলছে স্মার্ট কার্ড বিতরণ৷ তাই স্মার্ট কার্ড হচ্ছে স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র। এটি বর্তমান সরকারের অনন্য একটি উদ্যোগের বাস্তবায়ন। আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে সবার হাতে হাতে পৌঁছে যাচ্ছে স্মার্ট নাগরিকের পরিচয় স্মার্ট কার্ড। ভবিষ্যতের চাহিদাকে অগ্রাধিকার দিয়েই নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধার রেখে এই স্মার্ট কার্ড তৈরি করা হয়েছে৷
তিনি আরও জানান, উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৪৭ হাজার ৩০৭ জন৷ গত ২০২১ সালে স্মার্ট কার্ড বিতরণ করা হয়েছে ৯ হাজার ২ শত ৮৪ জন৷ চলতি মাসে ১ লাখ ১২ হাজার ১শত ৯৯ জনকে স্মার্ট কার্ডের আওতায় নিয়ে আসতে সময় লাগবে একমাস৷ যারা ২০২০ সাল থেকে ২২ সাল পর্যন্ত ভোটার হয়েছে তারাও পরে স্মার্ট কার্ড পাবেন৷ স্মার্ট কার্ড নিতে নাগরিকদের কোনো অর্থ খরচ করতে হবে না৷
পাঠকের মতামত: