মোহাম্মদ ইব্রাহিম মোস্তফা, উখিয়া বার্তা::
উখিয়ার উপজেলার গাছে গাছে ফুটে উঠা আমের মুকুল থেকে যে ঘ্রাণটুকু বাতাসে ছড়াচ্ছে তাতে আম বাগানিরা পাগল প্রাণ। এ মুকুলের ঘ্রাণ বাতাসে মিশে মৌ মৌ গন্ধ। যে গন্ধ মানুষের মনকে এক রকমের প্রভাবিত করে। সনাতনীরা এ মাসটিকে মধুমাস বলে আখ্যায়িত করে।
উখিয়া উপজেলা আমের জন্য বিখ্যাত না হলেও এখানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পরিবার বাণিজ্যিক ভাবে আম চাষ করে আসছে। এসব আম গাছে শোভা পাচ্ছে কেবলই মুকুল। এ যেন হলুদ আর সবুজের মহামিলন। সর্বত্র মুকুলে ছেয়ে আছে গাছের প্রতিটি ডালপালা। চারদিকে ছড়াচ্ছে সেই মুকুলের সুবাসিত পাগল করা ঘ্রাণ। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবছর আমের বাম্পার ফলন হতে পারে বলে মনে করছেন আম চাষীরা।
এদিকে মৌসুমের শুরুতে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মুকুলে ছেয়ে গেছে বাগানসহ ব্যক্তি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত আম গাছগুলো। তবে বড় আকারের চেয়ে ছোট ও মাঝারি আকারের গাছে বেশি মুকুল ফুটেছে। সেই মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে বাগান মালিকদের চোখে মুখে ভাসছে আনন্দ আর আগত দিনে অর্থ উপার্জনের স্বপ্ন। গাছে পুরো মুকুলে আম আসতে আরও কয়েক সপ্তাহ লাগতে পারে বলে বাগান মালিক হাজিরপাড়ার মো: হোছন জানান।
প্রত্যন্ত জনপদ লম্বাঘোনা গ্রামের দু”একর টিলা শ্রেনীর জমিতে ৬ বছর আগে প্রায় দু`শতাধিক আমগাছ লাগানোর কথা স্বীকার করে ওই আমচাষী বলেন, তার বাগানের গাছে যেভাবে মুকুল এসেছে তাতে আম ধরলে গাছের শাখা ভেঙ্গে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য সে দিনরাত বাগানে পরিশ্রম করছেন যেন পরিবেশগত কারণে আমের মুকুল ঝড়ে না যায়।
দোছরী গ্রামের বাগান মালিক জাফর ও মো: বেলাল জানান, প্রায় সপ্তাহ খানেক আগে থেকে তাদের বাগানের আম গাছে মুকুল আসা শুরু করেছে। পুরো বাগানের আম গাছ গুলো মুকুলে ছেয়ে গেছে। তারা বলেন, প্রাকৃতিক দূযোর্গ না হলে এবার আমের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। তারা জানান, মুকুল আসার পর থেকেই তারা গাছের প্রাথমিক পরিচর্যা অব্যাহত রেখেছেন। মুকুলে রোগ বালাইয়ের আক্রমন থেকে রক্ষা করতে স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ওষুধ স্প্রে করছেন।
উখিয়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুয়ারী, উখিয়ায় দু`শত ২০ হেক্টর জমিতে আম বাগান থাকার কথা উল্লেখ করা হলেও স্থানীয় ভুক্তভোগীদের তথ্য মতে প্রায় সাড়ে ৪শ’ হেক্টর টিলা ও কৃষি জমিতে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে আমগাছ রোপন করা হয়েছে। চাষীরা বলছেন, তারা আম বাগান করে লাভবান হওয়ার সুবাদে বাগান সম্প্রসারিত করেছে। তাদের দেখাদেখিতে অন্যান্যরাও আম চাষে উদ্ধুদ্ধ হচ্ছে। মৌসুমে এখানে বিপুল পরিমাণ আম উৎপাদন হয়ে থাকে। এখানকার উৎপাদিত আম স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে দেশের অন্যান্য জায়গাও চালান হয়ে থাকে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) জাকিরুল ইসলাম বলেন, উপজেলায় দুশত ২০ হেক্টর জমিতে আম চাষ করেছে কৃষকরা। আম বাগানগুলো পরিদর্শন করে চাষীদের আম চাষের পাশাপাশি কমলা, মাল্টা ও লেবু চাষে উদ্ধুদ্ধ করা হয়েছে। এবং প্রয়োজনীয় চাহিদা মতে সহযোগিতা করার আশ্বাস প্রদান করা হয়।
পাঠকের মতামত: