চট্টগ্রামের দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইনে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে প্রায় ১০ মাস হচ্ছে। কিন্তু যাত্রী সংকটে কাঙ্ক্ষিত সুফল মিলছে না। বলা হয়েছিল, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কক্সবাজারে পর্যটকদের মধ্যে ৫০ শতাংশ যাত্রী ট্রেন সার্ভিসে যাতায়াত করবে। দৈনিক ২৬টি ট্রেন চলার কথা থাকলেও চলছে আসা-যাওয়া মিলিয়ে ৬টি। তার মধ্যে ঢাকা থেকে দুই জোড়া ও চট্টগ্রাম শহর থেকে এক জোড়া ট্রেন কক্সবাজার আসা-যাওয়া করছে।
গত ডিসেম্বর থেকে আগস্ট পর্যন্ত ৪ লাখ ৬০ হাজার যাত্রী যাতায়াত করেছে। এতে আয় হয়েছে প্রায় ৩৪ কোটি টাকা। এই প্রকল্পটি রেলের ওপর আরেকটি ঋণের বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গত বছরের ১২ নভেম্বর তড়িগড়ি রেলপথটি উদ্বোধন করা হয়। ডিসেম্বর থেকে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। ট্রেন চালুর প্রায় এক বছরের কাছাকাছি হলেও প্রকল্পের নির্মাণকাজ পুরোপুরি শেষ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এখনো বুঝিয়ে দিতে পারেনি। লাইনে অনেক স্টেশন ও সাইট কাজ শেষ হয়নি। লাইনের কাজ শেষ না করে সার্ভিস চালু করা হয়েছে। প্রকল্প কর্মকর্তা প্রকৌশলী সুবক্তগীন বলেন, গত জুন পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ ছিল। কিন্তু কাজ এখনো বাকি থাকায় শেষ করতে এক বছর সময় বাড়ানো হয়েছে। আগামী বছরের জুনের মধ্যে কাজ শেষ হবে। প্রকল্পের কিছু অর্থ সাশ্রয় হচ্ছে।’
সংশ্লিষ্টরা জানান, দোহাজারি-কক্সবাজার ট্রেন সার্ভিস চালু করতে অনেক কিছুর ঘাটতি রয়েছে। এই সার্ভিস পুরোপুরি চালু করতে যে পরিমাণ কোচ ও ইঞ্জিনের প্রয়োজন তার ঘাটতি রয়েছে। রেলে এমনিতে ইঞ্জিনের ব্যাপক সংকট রয়েছে। এতে এই সার্ভিসের জন্য নতুন করে কোচ ও ইঞ্জিন ক্রয় করতে হবে। এই সার্ভিসের জন্য জনবলের চাহিদাপত্র প্রায় এক বছর আগে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এখনো জনবলের অনুমোদন মেলেনি। বিভিন্ন স্টেশন ও রেলক্রসিংয়ের জন্য জনবলের প্রয়োজন রয়েছে। এখন অন্যান্য জায়গা থেকে ডেপুটেশনে জনবল দিয়ে সার্ভিস চালু রাখা হয়েছে।
যাত্রী সংকটে সম্পর্কে রেলের কর্মকর্তারা জানান, কক্সবাজার পর্যটন শহর। মানুষ শুরু বেড়াতে যায়। এখনো পর্যটনের মৌসুম নয়। পর্যটন মৌসুম শুরু হলে যাত্রী সংকট কেটে যাবে। কখন লাইনে সার্ভিসের চাহিদা আরও বাড়াতে হবে।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা তারেক মোহাম্মদ ইমরান বলেন, দোহাজারি-কক্সবাজার পুরোদমে চালু হলে লাভজনক সার্ভিসে পরিণত হবে। এখনো প্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়ায় দোহাজারি থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত আটটি রেল স্টেশন নির্মাণ করা হচ্ছে। এসব স্টেশনের মধ্যে রয়েছে—সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চকরিয়া, ডুলাহাজারা, ঈদগাঁও, রামু, কক্সবাজার সদর ও উখিয়া। কক্সবাজারে নির্মাণ করা হয়েছে আইকনিক রেলওয়ে স্টেশন। তার মধ্যে সাতকানিয়া, চকরিয়া, ডুলাহাজারা, রামু ও কক্সবাজার স্টেনের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। এই পাঁচ স্টেশনে যাত্রী ওঠানামা হচ্ছে। আর চট্টগ্রাম শহর থেকে দোহাজারি পর্যন্ত ষোলশহর, জানালীহাট, পটিয়া ও দোহাজারি স্টেশন আগে থেকেই চালু রয়েছে।
পাঠকের মতামত: