কক্সবাজার, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

আওয়ামী লীগ সবসময় ইসলামের সেবক: শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রগুলো থেকে জনগণ ইসলামী মূল্যবোধ ও সংস্কৃতি সম্পর্কে প্রকৃত জ্ঞান লাভ করবে, যা সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও নারী নির্যাতন বন্ধে ব্যাপক অবদান রাখার পাশাপাশি ধর্মের নামে বিভ্রান্তি দূর করতে সহায়তা করবে।

প্রধানমন্ত্রী সোমবার গণভবন থেকে সারা দেশে ভার্চুয়ালি আরও ৫০টি মডেল মসজিদের উদ্বোধনকালে এ কথা বলেন। খবর বাসসের।

আওয়ামী লীগ সব সময় ইসলামের সেবক উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মাদ্রাসা বোর্ড প্রতিষ্ঠা, বায়তুল মোকাররম মসজিদ ও ইজতেমা মাঠের জায়গা দেয়ার পাশাপাশি ঘোর দৌড় ও জুয়া খেলা এবং মদ খাওয়া বন্ধ করেছিলেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশে বিশ্ব ইজতেমা আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছিলেন এবং বাংলাদেশকে ওআইসির সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন।

সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমরা মডেল মসজিদ নির্মাণের প্রকল্প হাতে নিয়েছি, কারণ, এতে ইসলামের নামে কেউ মানুষকে বিভ্রান্ত করতে পারবে না এবং তাদের মধ্যে ইসলামি মূল্যবোধ সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মডেল মসজিদে ইসলামি মূল্যবোধের চর্চা হবে, ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে মানুষের জ্ঞান আরও বাড়বে, ইসলামী সংস্কৃতি লালন ও বিকাশের আরো সুযোগ থাকবে এবং ইসলাম ধর্মকে আরও উন্নতভাবে পালনের সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে।

‘ইসলাম ধর্মের দোহাই দিয়ে কেউ যেন মানুষকে বিপথে নিতে না পারে, প্রকৃত ইসলামের মূল্যবোধ সম্পর্কে মানুষের মাঝে যেন সচেতনতার সৃষ্টি হয় সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি রেখেই এই মডেল মসজিদ নির্মাণের প্রকল্প আমরা নেই এবং নির্বাচনী ইশতেহারেও সেটার ঘোষণা দেই,’ বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত মসজিদগুলোতে ওজু ও নামাজের জন্য আলাদা জায়গা রয়েছে।

এছাড়া হাজিদের জন্য রেজিস্ট্রেশন ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, ইমাম প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, গবেষণা কেন্দ্র ও ইসলামিক লাইব্রেরি, অটিজম কর্নার, দাফনের আগে আচার, প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা ও কুরআন শিক্ষার ব্যবস্থা, ইসলামি সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের জন্য সম্মেলন কক্ষ ও থাকবে। ইসলামিক দাওয়াত, ইসলামি বই বিক্রয় কেন্দ্র, দেশি-বিদেশি অতিথিদের জন্য বোর্ডিং সুবিধাও এখানে থাকছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের সমাজে যেসব অসঙ্গতি রয়েছে-যে বাল্যবিবাহ, মাদকাশক্তি, নারীর প্রতি সহিংসতা, গৃহকর্মী ও অধীনস্থদের নির্যাতন, খাদ্যে ভেজাল এবং দুর্নীতি ইত্যাদি দূরীকরণে ইমাম ও খতিব সাহেবদের আমার অনুরোধ থাকবে, আপনারা যখন মসজিদে কোনো বয়ান দেন বা জুম্মার নামাজে খোতবা পড়েন সে সময় উপরোক্ত বিষয়গুলো থেকে মানুষ যাতে বিরত থাকে সে বিষয়গুলো আপনারা মানুষের সামনে তুলে ধরবেন এবং এর বিপরীতে সঠিক মানবিক গুণগুলো যাতে উঠে আসে সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দেবেন।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ থেকে যেন প্রত্যেকের ছেলে-মেয়েরা বিরত থাকে, এটা যে ইসলাম ধর্মের প্রতি কোনো সম্মান নয় বরং ইসলামের বদনাম হয় সেই বিষয়টার দিকে সকলে যাতে সচেতন হয়। নিজেদের সন্ততির দিকে নিজেরা যেমন তেমনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরাও তাদের শিক্ষার্থীদের প্রতি লক্ষ রাখবেন। আপনাদের ছেলে-মেয়ে কোথায় যায় এবং কার সঙ্গে মেশে-জঙ্গিবাদ এবং সন্ত্রাসের সঙ্গে যেন কোনোভাবে সম্পৃক্ত না হয়। আর এ বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির ক্ষেত্রেও আপনারা অবদান রাখতে পারেন।’

ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান এবং মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী এনামুল হাসান বক্তব্য দেন।

কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম, রাজশাহী ও শরীয়তপুর থেকেও কর্মসূচিতে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক দল, সরকারি কর্মকর্তা ও সাধারণ মানুষ।

অনুষ্ঠানে মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ওপর একটি ভিডিও-ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম, সৌহার্দ্যের ধর্ম, ভ্রাতৃত্যের ধর্ম। দলমত নির্বিশেষে ধর্মপ্রাণ সকল মুসলমানই অন্যান্য ধর্মের প্রতি সমান ভাবে সম্মান দেখিয়ে আমাদের দেশটা অসাম্প্রদায়িক চেতনায় উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ হিসেবে যাতে গড়ে ওঠে সেই প্রচেষ্টাই আমরা চালাব।

পাঠকের মতামত: