কক্সবাজার, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

আরও ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হবে

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: মোহসীন জানিয়েছেন, কক্সবাজারের শরণার্থী শিবির থেকে আরও ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে নোয়াখালীর ভাসানচরে নেয়া হবে চলতি মাস থেকে আগামী এপ্রিল মাসের মধ্যে৷

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর’এর সঙ্গে শনিবার সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার কথা জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব এ কথা জানান।

বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসীন ও বাংলাদেশে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর-এর প্রতিনিধি ইয়োহানেস ভন ডার ক্লাও চুক্তিতে স্বাক্ষর করবেন।

মিয়ানমার থেকে নির্যাতনের মুখে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরে জাতিসংঘ শুরু থেকেই আপত্তি জানিয়ে আসছিল। ওই সময় থেকেই ইউএনএইচসিআরের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে আসছিল সরকার। তাদের বোঝানো ও রাজী করানোর চেষ্টার অংশ হিসেবে বেশ কয়েকবার পরিদর্শনের ব্যবস্থাও করা হয়। দীর্ঘ আলাপ আলোচনার পর গেল জুনে ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের সহায়তা কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হওয়ার ইংগিত দেয় জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর।

মো: মোহসীন বলেন, শনিবার ইউএনএইচসিআর এর সঙ্গে সরকারের এ সমঝোতা স্মারক সই হবে। ভাসানচরে ইতোমধ্যে প্রায় ২০ হাজারের মতো রোহিঙ্গা নেওয়া হয়েছে। আরও ৮০ হাজার নিয়ে যাব। এ ব্যাপারে ইউএনএইচসিআর আমাদের সঙ্গে যেভাবে কক্সবাজারে কাজ করেছে, একইভাবে ভাসানচরেও কাজ করে যাবে- এ নিয়ে সমঝোতা স্মারক হবে। আশা করি, অক্টোবরের শেষ দিকে শুরু করব। ভাসানচরে এক লাখের একোমোডেশনের ব্যবস্থা রয়েছে। আপাতত এ ব্যবস্থা। পরে কী করা যায় দেখা যাবে।”

চার বছর আগে মিয়ানমারে নির্যাতনের মুখে পালিয়ে আসা প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা এখন কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরগুলোতে অবস্থান করছে। এদের প্রত্যাবাসন আটকে থাকায় সেখানে সামাজিক সমস্যা সৃষ্টির প্রেক্ষাপটে তাদের একটি অংশকে হাতিয়ার কাছে মেঘনা মোহনার দ্বীপ ভাসানচরে স্থানান্তরের কার্যক্রম শুরু করে সরকার।

১৩ হাজার একর আয়তনের ওই চরে ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করে এক লাখের বেশি মানুষের বসবাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে।জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর বিরোধিতার মধ্যে গত ৪ ডিসেম্বরে ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর করা শুরু হয়। এ পর্যন্ত ছয় দফায় ১৮ হাজার ৩৩৪ জন শরণার্থীকে স্থানান্তর করেছে সরকার।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব বলেন, ভাসানচরে আমরা আগে যে কয়জনকে নিয়ে গিয়েছি, এতদিন পর্যন্ত সেখানে ইউএনএইচসিআর বা ইউনাটেড নেশন্স এর সঙ্গে জড়িত নেই। এ সমঝোতা সইয়ের জন্য গত কয়েক মাস ধরে কাজ করছি। ইতোমধ্যে যারা ভাসানচরে গেছে তাদেরও কক্সবাজারের মতো করেই সহায়তা করবে ইউএনএইচসিআর।

এর আগে বাংলাদেশ সফরকালে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সহকারী কমিশনার (অপারেশন) রাউফ মাজৌ বলেছিলেন, এখন আলোচনা চলছে, ভাসানচরে বর্তমানে প্রায় ২০ হাজার লোক আছে, যারা বাংলাদেশে থাকা শরণার্থী। তাদেরকে সহযোগিতা ও সহায়তা দেওয়া দরকার।

এদিকে বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন জানান, কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে নোয়াখালীর ভাসানচরে স্থানান্তরিত রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তায় জাতিসংঘের মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরুর বিষয়ে সবকিছু চূড়ান্ত। যেকোনো সময় তারা যাবে।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অপেক্ষা করুন। আমরা সবসময় আশাবাদী। এবার জাতিসংঘে যে বড় ইভেন্ট হয়েছে, সেখানে বড় বড় দেশগুলো সবাই এক বাক্যে এর ওপর জোর দিয়েছে। আশা রাখুন, ভালো কিছু হবে।

পাঠকের মতামত: