কক্সবাজার, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ ২২ দিন, হতাশায় জেলেরা

ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে লক্ষ্মীপুরের রামগতি থেকে চাঁদপুরের ষাটনল পর্যন্ত ২২ দিন মেঘনা নদীর ১০০ কিলোমিটার এলাকায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার।

মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) মধ্যরাত থেকে উল্লেখিত মেঘনা এলাকায় এ নিষেধাজ্ঞা শুরু হবে। ৪ নভেম্বর মধ্য রাত পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা চলবে। মে মাস থেকে মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) পর্যন্ত ২০ হাজার মেট্টিক টন লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও ধরা পড়েছে ৬০ শতাংশ ইলিশ। তবে জেলেদের দাবি, এ মৌসুমে ৫০ ভাগ ইলিশও তারা পায়নি।

এদিকে মার্চ-এপ্রিল দুই মাস নিষেধাজ্ঞা শেষে প্রায় ৬৫ হাজার জেলে মেঘনায় ইলিশ শিকারে যায়। কিন্তু গত সাড়ে পাঁচ মাসে মেঘনায় জেলেদের জালে কাঙ্খিত ইলিশ ধরা পড়েনি। তবে জীবিকা নির্বাহের জন্য মেঘনার অধিকাংশ জেলেকেই ঝুঁকি নিয়ে বঙ্গোপসাগরে ইলিশ শিকারে যেতে হয়েছে। এতে এ মৌসুমে লক্ষ্মীপুরের বাজারগুলোতে সাগরের ইলিশই বেশি দেখা গেছে। এরমধ্যে মেঘনায় নিষেধাজ্ঞা নিয়ে হতাশায় রয়েছেন জেলেরা।

জানা গেছে, ১ মে থেকে ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত সাড়ে ৫ মাসে নদীতে তেমন ইলিশ মেলেনি। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে এ মৌসুমে ২০ হাজার মেট্টিক টন ইলিশ ধরার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু গত কয়েক মাসে মেঘনায় তেমন ইলিশ মেলেনি। প্রায় ১২ হাজার মেট্টিক টন ইলিশ ধরা পড়েছে। এতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪০ শতাংশ ইলিশ কম ধরা পড়েছে।

অন্যদিকে আগামি ২২ দিন রামগতি থেকে চাঁদপুরের ষাটনল পর্যন্ত মেঘনায় সকল ধরনের মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞাকালীন নদী এলাকার বরফ কারখানা ও মাছঘাটগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে জরিমানা, সর্বোচ্চ দুই বছরের জেল ও উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রয়েছে।

৪ নভেম্বর মধ্য রাত পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা চলবে। ছবি: বার্তা২৪.কম
জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, লক্ষ্মীপুরের ৭৬ কিলোমিটার ও চাঁদপুরের ২৪ কিলোমিটার মেঘনা এলাকায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এটি সফল করতে নদী এলাকার হাট-বাজারে লিফলেট বিতরণ, মাইকিং ও সেমিনার করা হয়েছে। একই সঙ্গে বরফ কারখানাগুলোর বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ২২ দিন মৎস্য বিভাগ, কোস্টাগার্ড ও নৌ-পুলিশ সরকারি এ আদেশ সফল করতে কাজ করবে। নদীতেও নিয়মিত টহল চলবে। লক্ষ্মীপুর সদর, রামগতি, কমলনগর ও রায়পুর উপজেলায় প্রায় ৫২ হাজার নিবন্ধিত জেলে রয়েছে। তবে নিষেধাজ্ঞার এ সময় প্রায় ৪০ হাজার জেলে ২০ কেজি করে চাল পাবে।

কমলনগর উপজেলার মতিরহাট এলাকার জেলে সিরাজ মাঝি ও জয়নাল মিয়া জানায়, তাদের পুঁজি কম, এজন্য সাগরে যেতে পারেনি। মেঘনায় জাল ফেলে যা ইলিশ মিলেছে তা দিয়েই তাদের জীবিকা নির্বাহ করতে হয়েছে। এবার মেঘনায় ইলিশের পরিমাণ খুবই কম ছিলো।

লক্ষ্মীপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন জানান, জেলার অধিকাংশ জেলেই বঙ্গপোসাগর ও তার কাছাকাছি এলাকায় গিয়ে ইলিশ শিকারে জাল পেলতো। এজন্যই ইলিশ মেঘনায় আসার সুযোগ পাচ্ছে না। এতে মেঘনায় জেলেদের জালে কাঙ্খিত ইলিশ মেলেনি। একই কারণে লক্ষ্মীপুরে এবার সাগরের ইলিশ বেশি দেখা গেছে।

পাঠকের মতামত: