কক্সবাজার, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

ইয়াছিনের এই কান্না থামাবে কে?

লক্ষ্মীপুরে পরিবারের হাল ধরতে কিশোর ইয়াছিন (১৩) অটোরিকশার প্যাডেলে পা রেখেছে দেড় মাস আগে। রবিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কৌশলে তার অটোরিকশাটি চুরি করে নিয়ে যায় যাত্রীবেশে অচেনা দুই ব্যক্তি। এতে যেন ইয়াছিনের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে। তার কান্নায় চোখের কোণে জল এসেছে উপস্থিত অনেকের।

ইয়াছিনের চারপাশ যেন এখন অন্ধকার।

বিভিন্ন স্থানে ঘুরে সুযোগ বুঝে চালকের চোখ ফাঁকি দিয়ে মুহূর্তেই রিকশা নিয়ে দুই চোর লাপাত্তা। লক্ষ্মীপুর পৌরসভার দক্ষিণ মজুপুর এলাকার পলোয়ান মসজিদ এলাকা থেকে রিকশাটি চুরি হয়। চালক ইয়াছিনের বাড়ি লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের চরভূতা গ্রামে।

ইয়াছিন জানায়, রবিবার সকাল ১১টার দিকে জেলা শহরে আসার কথা বলে ভবানীগঞ্জের চৌরাস্তা বাজার থেকে তার অটোরিকশায় দুজন যাত্রী ওঠে। বিভিন্ন স্থানে ঘুরিয়ে দেড়টার দিকে আসে পৌরসভার পলোয়ান মসজিদের পাশে। সেখানে ওই যাত্রীরা নেমে চা পান করে। এ সময় তারা (যাত্রী) তাকে পাশের একটি ভবন দেখিয়ে একটি সাউন্ড বক্স আনার জন্য পাঠায়। এই সুযোগে রিকশাটি নিয়ে পালিয়ে যায় তারা।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে ইয়াছিন আরো জানায়, দেড় মাস ধরে সে রিকশাটি ভাড়ায় চালাচ্ছে। দৈনিক ৩০০ টাকা জমা দিয়েও ২০০-৩০০ টাকা তার থাকত। ওই টাকায় সংসার চলত। রিকশার মালিককে কী জবাব দেবে এখন সেই চিন্তায় ভয় পাচ্ছে ইয়াছিন।

ইয়াছিনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অভাবের কারণে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত সে পড়ালেখা করেছে। কয়েক বছর আগে তার বাবা মো. ইব্রাহিম মিয়া অন্যত্র বিয়ে করে তাদের রেখে চলে গেছেন। মা ও তিন বোনকে নিয়ে রিকশা চালিয়ে কোনোমতে সে দিনাতিপাত করছিল। অভাব আর সংসারে টানাটানি ছিল প্রতিদিনের চিত্র। ছয় মাস আগে ব্রেন ক্যান্সারে তার এক ছোট ভাই মারা গেছে। তার চিকিৎসা করাতে গিয়েও ধারদেনা ও ঋণ করতে হয়েছে ইয়াছিনকে।

এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর শহর ফাঁড়ির পরিদর্শক (তদন্ত) মো. জহিরুল আলম বলেন, বিষয়টি কেউ জানায়নি। খোঁজখবর নিয়ে রিকশাটি উদ্ধারের চেষ্টা করা হবে।

পাঠকের মতামত: