কক্সবাজার, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

ইয়াবা রেখে ফাঁসাতে গিয়ে ফেঁসে গেলেন নিজেরাই

পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তাকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসাতে গিয়ে পুলিশের হাতে ধরা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের একজন পরিচালকসহ চক্রের ৩ সদস্য। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে সদর থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন।

আজ বুধবার দুপুরে গ্রেফতার ৩ জনকে আদালতে হাজির করলে জেলহাজতে পাঠান আদালত। আসামিরা হলেন- মো. মাছুম গাজী (৩০), মো. আসাদুজ্জামান তুহিন (২৪) ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের এক পরিচালক মো. মেহেদী হাসান শিবলি (৩১)।

এর আগে, মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সদর থানা পুলিশের একটি দল অভিযান চালায় হাসপাতালের হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তার কক্ষে। এসময় ওই কক্ষ থেকে ১১০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করে পুলিশ। পরে সন্দেহভাজন হিসেবে হিসাব রক্ষক হাসানুজ্জামানকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। অনেক নাটকীয়তার পরে বিকেলে হাসানকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত মাছুম গাজীর বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, মাসুম গাজী পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আউট সোসিংয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মচারী ছিল। পরবর্তী সময়ে চাকরিচ্যুত হওয়ায় উক্ত হাসপাতালের হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামান হাসানের উপর ক্ষিপ্ত হয়। প্রতিশোধ নিতে তাকে মাদকের মামলায় ফাঁসানোর ষড়যন্ত্রে যুক্ত হয় মো. মাছুম গাজী, মো. আসাদুজ্জামান তুহিন ও মো. মেহেদী হাসান শিবলি। ষড়যন্ত্র ও পরিকল্পনার অংশ হিসাবে ১১০ পিস ইয়াবা মাদক কারবারি জনৈক সবুজ নামক ব্যক্তির নিকট থেকে ৩০ হাজার টাকায় ক্রয় করে। পরে নিজেই গতকাল ২২ ফেব্রুয়ারি ভোরে ঘটনাস্থলে কৌশলে রেখে যায়। যা মাসুম এবং অপর সহযোগী মো. আসাদুজ্জামান তুহিন ও মো. মেহেদী হাসান শিবলিকে অবহিত করেন। পরে সদর থানা পুলিশ মঙ্গলবার পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবনের ২য় তলায় হিসাব রক্ষকের কক্ষে রক্ষিত প্রিন্টারের টোনার বক্সের মধ্যে দুইটি জিপার ব্যাগে ১১০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করে।

গ্রেফতার মো. মাছুম গাজী শহরের মৃধা বাড়ী সড়কের মো. ইউসুফ গাজী, মো. আসাদুজ্জামান তুহিন পল্লী বিদুৎ এলাকার মো. মোতাহার হোসেন ও মো. মেহেদী হাসান শিবলি স্বাধীনতা সড়কের মো. জসিম উদ্দিনের পুত্র।

হাসপাতালের একাধিক সূত্র জানায়, হাসপাতাল থেকে বিভিন্ন ধরনের সুবিধা নিতে একটি চক্র হিসাব রক্ষক কর্মকর্তার উপর ক্ষিপ্ত। এমনকি তাকে মাদক দিয়ে ফাঁসিয়ে চাকরিচ্যুত করার জন্য উঠে পরে লাগে তারা। চক্রটি আউটসোসিংয়ের চাকরিচ্যুত মাসুম গাজীকে ব্যবহার করে হাসানকে ফাঁসানোর পরিকল্পনা শুরু করে। চক্রটির একজন শহরের নিউমার্কেট এলাকার একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালকদের একজন মেহেদী হাসান শিবলি। হিসাব রক্ষক হাসানকে থানায় নেয়ার পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিলে পুলিশ অধিকতর অভিযান চালিয়ে চক্রের এক সদস্য মেহেদী হাসান শিবলিকে গ্রেফতারর করে। পরে আরও দুই আসামিকে কালিকাপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

পটুয়াখালী সদর থানার ওসি মো. মনিরুজ্জামান বলেন, তিনজনকে আসামি করে মামলা করেছে পুলিশ। এ ঘটনার সাথে জড়িত একটি বড় চক্র রয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে তদন্তে পাওয়া গেছে। পুলিশ বিষয়টিকে অতি গুরুত্বের সাথে তদন্ত করছে। তবে জড়িত কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না। মো. হাসানুজ্জামান হাসানকে থানার এনে কয়েকঘন্টা রাখার পরে ছেড়ে দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি বলেন, তাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

পাঠকের মতামত: