কক্সবাজার, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪

উখিয়ার ক্যাম্পে মাতৃভাষা দিবসে মাতৃভূমিতে ফেরার দাবি রোহিঙ্গাদের সমাবেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক::

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে মাতৃভূমি মিয়ানমারের আরাকানে ফেরার দাবি জানিয়েছেন রোহিঙ্গারা। আরাকানে ফিরতে না পারলে ক্যাম্পে আশ্রিত রোহিঙ্গারা আমরণ অনশন পালন করবেন বলেও জানান তারা।

মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) উখিয়া উপজেলার কুতুপালং লম্বাশিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে সহস্রাধিক রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ অংশ নেন।

আশপাশের ক্যাম্প থেকে অনেকে প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন ও ব্যানার নিয়েও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের সমাবেশে যোগ দেন। সমাবেশে রোহিঙ্গা নেতা মাস্টার কামাল, মৌলভী সৈয়দ উল্লাহ, মাস্টার মুসা, আলম শাহ বক্তব্য দেন।

সমাবেশে মৌলভী সৈয়দ উল্লাহ বলেন, বাঙালিরা একমাত্র জাতি যারা মাতৃভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছেন। ভাষার জন্য তারা প্রাণ দিয়ে সারা পৃথিবীর সব জাতির মাতৃভাষার মানকে মর্যাদাপূর্ণ করেছেন। আমরা দিবসটি পালনের শুরুতে বাঙালি সেই বীর পুরুষদের গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করছি এবং তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।

তিনি আরো বলেন, আমরা জাতিগতভাবে মিয়ানমারের নাগরিক। রোহিঙ্গাদের জাতি হিসেবে স্বতন্ত্র একটি মাতৃভাষাও রয়েছে। মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের দেশছাড়া করে ভিটামাটি ও নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার পাশাপাশি আমাদের ভাষার অধিকারও কেড়ে নিতে চায়। আমরা আমাদের মাতৃভূমি আরাকানে ফিরে রোহিঙ্গাদের পূর্ণ অধিকার নিশ্চিত করে আমাদের মাতৃভাষা রোহিঙ্গা ভাষার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি আদায় করতে চাই।

রোহিঙ্গা যুবনেতা মাস্টার মুসা বলেন, রোহিঙ্গা জাতির নিজেদের ভূমি আছে এবং সমৃদ্ধ ভাষা আছে। সারা পৃথিবীর মানুষ নিজ দেশে বাস করে নিজেদের মাতৃভাষায় কথা বলছে। নিজেদের জন্মভূমি থাকার পরও আমরা রোহিঙ্গা জাতি অন্য দেশে আশ্রিত হয়ে আছি এখনো। আমরা বারবার বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে আমাদের মাতৃভূমিতে ফেরার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়ে আসছি; কিন্তু ফেরার স্বপ্ন এখনো অন্ধকারে ঘুরপাক খাচ্ছে।

ক্যাম্পে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ৮-আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক (অতিরিক্ত ডিআইজি) আমির জাফর বলেন, ‘ক্যাম্পে শান্তিপূর্ণভাবে রোহিঙ্গারা অনুষ্ঠান শেষ করেছে। মূলত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে তারা একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।

সমাবেশে যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সে জন্য পুলিশ সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে ছিলেন বলে জানিয়েছেন উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী।

পাঠকের মতামত: