কক্সবাজার, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

উখিয়ায় ১৭৩ কোটি টাকায় ৪৮ কি:মি সড়ক ও ৭ টি সাইক্লোন সেন্টার নির্মাণ!

কক্সবাজারের উখিয়ায় ১৭৩ কোটি ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে ৪৮ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়ন, ৭ টি বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ,রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ১১ কিলোমিটার খাল খনন ও ৪টি ই-ভাউচার সোপ নির্মাণ করা হয়েছে।

এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের ( এডিবি) অনুদানের অর্থায়নে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ( এলজিইডি) প্রকল্পসমূহের বাস্তবায়ন করেছেন। প্রকল্পসমুহ বাস্তবায়ন হওয়ায় উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে গ্রামীণ অভ্যন্তরীণ সড়ক যোগাযোগের দৃশ্যমান আমূল পরিবর্তন হয়েছে।

একই সাথে আধুনিক মানসম্মত ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করায় শতশত শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

উখিয়া-টেকনাফের সংসদ সদস্য শাহীন আক্তার চৌধুরী ও সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির একান্ত প্রচেষ্টায় প্রকল্পসমূহ বাস্তবায়নে আলোর পথ দেখেছেন।

উখিয়া উপজেলা প্রকৌশলী ( বর্তমানে নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে পদায়িত) মোঃ রবিউল ইসলাম জানান , ইমারজেন্সি অ্যাসিস্ট্যান্স প্রজেক্ট ( এলজিইডি পার্ট) কর্মসূচির আওতায় এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মসূচি বাস্তবায়নে হাতে নেন। গ্রামীণ জনগুরুত্বপূর্ণ কার্পেটিং সড়ক , ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র কাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণে ১৭৩ কোটি ১২ লাখ বরাদ্দ দেন । একই সাথে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৪ টি ফুড ডিস্ট্রিবিউশন সেন্টার নির্মাণ ও খাল খনন করেন। উক্ত প্রকল্পসমূহ বাস্তবায়ন করেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ( এলজিইডি )।

উপজেলা প্রকৌশলী আরও বলেন, বর্তমান সরকারের মহা উন্নয়নের পরিকল্পনার অংশ হিসাবে উখিয়ায় অভূতপূর্ব উন্নয়ন হচ্ছে। এবারে এডিবির অর্থায়নে বাস্তবায়িত ৪৮ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে হোষ্ট কমিউনিটি উখিয়ার ৫ টি ইউনিয়নে ২৬ কিলোমিটার এবং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অভ্যন্তরে ২২ কিলোমিটার সড়ক।

উপজেলা প্রকৌশল অফিস সূত্রে জানা গেছে , সদ্য নির্মাণ হওয়া ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র গুলো হচ্ছে ফলিয়া পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, এনআই চৌধুরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তুতুরবিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় , দক্ষিণ হলদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় , ঘোনারপাড়া শফী প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাগলির বিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও গুরাইয়ারদ্বীপ দ্বীপ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ।

এছাড়াও জনগুরুত্বপূর্ণ বাস্তবায়িত উল্লেখ যোগ্য কার্পেটিং সড়কগুলো হচ্ছে , রাজাপালং ইউনিয়নের নুরুল ইসলাম চৌধুরী সড়ক (২.৫০) কিলোমিটার , ফলিয়া পাড়া সড়ক (১.০৫) কিলোমিটার , রত্নাপালং ইউনিয়নের কোট বাজার – ভালুকিয়া সড়ক (৪.৩০) কিলোমিটার, কোট বাজার ঝাউতলা (৪.৪৩৫) কিলোমিটার , আলী আহমদ পিনজিরকুল সড়ক (২.৩২৭) কিলোমিটার। এসব প্রকল্পের অগ্রগতি হার ৯৫ ভাগ।

উখিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী জানান, মিয়ানমারে বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়েছে লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গা উখিয়ায় আশ্রয় নিয়েছে। রোহিঙ্গা অধ্যুষিত হওয়ার কারণে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক রোহিঙ্গাদের সেবার পাশাপাশি হোস্ট কমিউনিটিতে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প বাস্তবায়ন করছেন। বিশেষ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণার কারণে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মানবিক সেবা এবং একই সাথে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা হিসেবে উখিয়া সহ পুরো কক্সবাজারে অগ্রাধিকার মুলক প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে।

সরজমিন পরিদর্শন কালে দেখা যায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অভ্যন্তরে মধুর ছড়া – বালুখালী হয়ে নাফ নদী ক্যাপ ২০ এক্সটেনশন হতে নাফ নদী পর্যন্ত ১১.০ কিলোমিটার খাল খননের ফলে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অভ্যন্তরে পানি নিষ্কাশন সহ বর্ষার মৌসুমে জলাবদ্ধতা দূরীকরণ করতে সক্ষম হয়েছে । খাল খননের ফলে হোষ্ট কমিউনিটি ও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বর্ষা কালীন সময়ে পানি বন্দী রক্ষা পেয়েছে ।

ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গণ জানান, এলজিইডির বাস্তবায়িত উন্নয়নমূলক প্রকল্প যোগাযোগ ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন হয়েছে।স্থানীয় বাসিন্দারা আজ এর সুফল ভোগ করছেন।

উখিয়া উপজেলা প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম আরো জানান , উন্নয়ন কাজের গুণগতমান নিশ্চিত করতে পরিদর্শন করছেন এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর ও এডিশনাল ডিরেক্টর সহ উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল । এছাড়াও এলজিইডির পিডি সহ কক্সবাজার নির্বাহী প্রকৌশলী সিডিউল অনুযায়ী কাজ সম্পন্ন করতে সার্বক্ষণিক মনিটরিং সহ পর্যবেক্ষণ করেন ।

পাঠকের মতামত: