কক্সবাজার, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

‘একদিন কাম না করলে চুলাত হাড়ি ওঠে না, প্যাটোত হয় লকডাউন’

করোনা মোকাবিলায় সারা দেশের মতো রংপুরেও চলছে সরকার ঘোষিত লকডাউন। জনসমাগম রোধে চলাফেরায় কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হলেও মানুষের আনাগোনা কমেনি।

লকডাউনের দ্বিতীয় দিন আজ। ট্রেন, বিমান, গণপরিবহন চলাচল বন্ধ থাকলেও স্বাভাবিক রয়েছে প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, ট্রাক, পিকআপ ভ্যান, থ্রি-হুইলার, অটোরিকশা, মোটরসাইকেল, রিকশাসহ হালকা যানবাহন চলাচল। সড়কে মানুষের উপস্থিতিও অন্যান্য দিনের মতোই।

মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) সকাল সাতটা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত রংপুর নগরের শাপলা চত্বর, পায়রা চত্বর, জাহাজ কোম্পানি মোড়, সিটি বাজার, মডার্ন মোড়, বাস টার্মিনাল এলাকা ঘুরে দোকানপাট, হোটেল-রেস্তোরাঁ, কাঁচা বাজার খোলা রাখতে দেখা যায়। তবে নগরের বিপণী বিতান, শপিং মল, মার্কেটসহ বেশির ভাগ দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। খোলা রয়েছে ব্যাংকসহ সরকারি ও জনসেবামূলক প্রতিষ্ঠান।

সকাল থেকে নগরীতে চাকরিজীবীরা ছাড়াও বিভিন্ন পেশায় জড়িত কর্মজীবী, দিনমজুর, শ্রমিক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সড়কে দেখা যায়। তারা গন্তব্যে পৌঁছাতে ব্যক্তিগত বাহন ছাড়াও অটোরিকশা এবং রিকশায় ভর করে যাতায়াত করেন। তবে পুরো নগর জুড়ে থ্রি-হুইলার সিএনজি, ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা ও রিকশা চলাচলে দাপট দেখা গেছে। সকাল থেকে ভিড় ছিল আলমনগর স্টেশন রোডের শতরঞ্জি ও হস্তশিল্প উৎপাদনখ্যাত কারুপণ্য কারখানা এলাকায়।

নগরীর শাপলা চত্ত্বর এলাকায় কথা হয় শ্রমিক মকবুল হোসেনের সাথে। তিনি রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘বাড়িত থাকলে যদি পেটেত ভাত যায়, তাইলে তো কথা ছিল না। কিন্তু হামার তো একদিন কাম না করলে চুলাত হাড়ি ওঠে না প্যাটোত হয় লকডাউন। সরকার হঠাৎ করি লকডাউন দিচে, কিন্তু হামার তো লকডাউনোত ঘরোত থাকি দিন পার করার মতো পুঁজি নাই।’

পার্কমোড় এলাকার রিকশাচালক জাহিদুর রহমান বলেন, ‘মুখে মাস্ক দিয়্যা বের হইচি। যাত্রীদেরকেও মাস্ক পরার জন্যে বলছি। কিন্তু কায়ো শুনে, ফির কায়ো শুনে না। আর লকডাউনোত হামার অন্য কোনো উপায় নেই। ওই তকনে গাড়ি নিয়্যা আস্তাত বের হইচি। কামাই না করলে তো পেট চলইবার নয়।’

রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আব্দুল আলীম মাহমুদ বলেন, ‘করােনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার কারণে সারাদেশে লকডাউন দেওয়া হয়েছে। এই লকডাউনের ফলে মানুষ যাতে ভােগান্তিতে না পরে এর জন্য অটোরিকশা দুইজন যাত্রী নিয়ে চলাচল করছে। তবে আমরা সবাইকে সচেতন হবার আহবান করছি। যাতে সংক্রমণ ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব হয়।’

উল্লেখ্য, সারাদেশে এখন পর্যন্ত ৩১ জেলায় করোনাভাইরাসের উচ্চ সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে রংপুরের অবস্থান ২৭ নম্বরে।

পাঠকের মতামত: