কক্সবাজার, বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪

ওসি প্রদীপের স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলায় আরও তিনজনের সাক্ষ্য

চট্টগ্রামে দুর্নীতি মামলার আসামি টেকনাফ থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার দাশের স্ত্রী চুমকি কারণের বিরুদ্ধে আদালতে তিনজন সাক্ষ্য দিয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার এ সাক্ষ্য নেওয়া হয়। চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ মুনশি আবদুল মজিদ সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।

সাক্ষ্যদাতারা হলেন, চট্টগ্রাম কর অঞ্চল-১ এর উপ-কর কমিশনার হারেছ আহমেদ, অফিস সহকারী মো. শওকত আলী ও কর অঞ্চল-৩ এর উচ্চমান সহকারী মো. আবুল কালাম।

এ মামলায় প্রদীপ ও তাঁর স্ত্রী চুমকি দুজনই আসামি হলেও অভিযোগ গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে প্রদীপ হাইকোর্টে আবেদন করেন। তাই ১৭ ফেব্রুয়ারি সাক্ষ্য গ্রহণের শুরুর দিন থেকে শুধু পলাতক চুমকির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য গ্রহণ চলছে। সেদিন মামলার বাদী দুদক চট্টগ্রাম কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন মামলায় সাক্ষ্য দেন। এ নিয়ে এ মামলায় চারজন সাক্ষ্য দিয়েছেন।

দুদকের আইনজীবী মাহমুদুল হক মাহমুদ এ তথ্য নিশ্চিত করে আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রদীপ দুর্নীতি মামলায় গত বছর ১৫ ডিসেম্বর ডিসচার্জ পিটিশন দিয়ে অব্যাহতি চেয়েছিলেন। তাঁর দরখাস্ত নামঞ্জুর করে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। ওই আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে প্রদীপ হাইকোর্টে (মামলা কোয়াশমেন্ট) আবেদন করেছেন। তাই আদালত এ মামলায় শুধু পলাতক আসামি চুমকীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। প্রদীপের দরখাস্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বা উচ্চ আদালতের নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত তাঁর বিরুদ্ধে এই আদালতের (চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্পেশাল জজ) কার্যক্রম স্থগিত থাকবে।

জানা যায়, ২০২০ সালের ২৩ আগস্ট দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন বাদী হয়ে প্রদীপ ও তাঁর স্ত্রী চুমকি কারণের বিরুদ্ধে মামলা করেন ৷

গত বছরে ২৬ জুলাই দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পত্তি অর্জনের মামলায় প্রদীপ ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে আদালতে দুদক অভিযোগপত্র দেয়। একই বছর ১৫ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগ গঠন হয়।

প্রদীপ ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে দেওয়া অভিযোগপত্রে অবৈধ আয়ে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। তার মধ্যে চট্টগ্রাম নগরীর পাথরঘাটায় ছয়তলা বাড়ি ও পাঁচলাইশ থানার ষোলোশহরের একটি বাড়ি, একটি ব্যক্তিগত গাড়ি, একটি মাইক্রোবাস, ৪৫ ভরি স্বর্ণ, কক্সবাজারে চুমকির নামে নামে একটি ফ্ল্যাট। বৈধ-অবৈধ মিলিয়ে প্রদীপ দম্পতির ৪ কোটি ৮০ লাখ ৬৪ হাজার ৬৫১ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের হদিস মেলে। যার মধ্যে বৈধ আয় থেকে ২ কোটি ৪৪ লাখ ৬৬ হাজার ২৩৪ টাকার সম্পদ পায় দুদক। বাকি ২ কোটি ৩৫ লাখ ৯৮ হাজার ৪১৭ টাকার অবৈধ সম্পদ বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়। চুমকি নিজেকে মৎস্য ব্যবসায়ী বলে আয়কর নথিতে উল্লেখ করলেও তার সমর্থনে প্রমাণ দিতে পারেননি। এ মামলার অভিযোগপত্রে সাক্ষীর তালিকায় ২৯ জনের নাম রয়েছে।

২০২০ সালের ৩১ জুলাই মাসে টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের গুলিতে সিনহা মো. রাশেদ খান নিহত হন। সিনহা সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর। এ ঘটনায় করা সিনহার বোনের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে প্রদীপ ২০২০ সালের ৬ আগস্ট থেকে কারাগারে আছেন। ওই মামলায় গত বছর ২৭ জুন প্রদীপসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে ২৭ জুন অভিযোগ গঠন করা হয়। কক্সবাজার আদালতে এ বছর ৩১ জানুয়ারি প্রদীপ ও পরিদর্শক লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ড এবং অপর ছয়জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত।

পাঠকের মতামত: