কক্সবাজার, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

কক্সবাজারে থামছে না করোনার মৃত্যু মিছিল : একদিনে আরও ২ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ২৩৩ জন

কক্সবাজার জেলায় মহামারি করোনা ভাইরাসে প্রতিদিনই প্রাণহানি ঘটছে। বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যাও। মাত্র চব্বিশ ঘন্টার ব্যবধানে করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে ২৩৩ জন।একই সময়ে মারা গেছেন আরও ২ জন। এর আগের দিন রবিবার করোনাক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২৩৪ জন এবং মৃত্যূ হয়েছিল ৪ জনের। শনাক্তের দিক দিয়ে জেলায় আবারও ডাবল সেঞ্চুরী ছুঁল করোনা। আর চব্বিশ ঘন্টায় ২ জন সহ টানা ছয় দিনে ২০ করোনা রোগীর মৃত্যূ দেখল জেলাবাসী। এর আগের দিন রবিবার মৃত্যূ হয় ৪ জনের,শনিবার ৩ জন,শুক্রবার ৩ জন, বৃহস্পতিবার হয় ৪ জন এবং বুধবার ৪ জনের। আর পুরো জেলায় করোনায় মৃতের সংখ্যা ২৮ রোহিঙ্গাসহ ১৯৬ জন। এদের মধ্যে ৮৯ জনই কক্সবাজার সদর ও পৌরসভার বাসিন্দা। সুস্থ হয়েছেন ১৭৯জন। জেলায় আক্রান্তের হার ২২.১%।

আজ সোমবার ২ আগস্ট দুপুর আড়াইটায় কক্সবাজার সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে প্রেরিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

তারা জানায়, রবিবার সকাল ৮টা থেকে সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত সময়ে ৮১৯টি টেস্টে কক্সবাজারের আট উপজেলায় করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন ২৩৩ জন। এর মধ্যে কক্সবাজার সদর ও পৌরসভাতেই শনাক্ত হয়েছেন ৫৮ জন । উখিয়া উপজেলায় ৫১ জন,টেকনাফ উপজেলায় ৫৭ জন,রামু উপজেলায় ১৪ জন,পেকুয়া উপজেলায় ১২ জন,মহেশখালি উপজেলায় ৪ জন,চকরিয়া উপজেলায় ২৫ জন,কুতুবদিয়া উপজেলায় ১২ জন।

রবিবার এ সংখ্যা ছিল ২৩৪ জন,শনিবার ছিল ১৮৫ জন,শুক্রবার ছিল ২০১ জন, বৃহস্পতিবার ছিল ২০২ জন,বুধবার ছিল ৩২৪ জন এবং মঙ্গলবার ছিল রেকর্ড ৩২৬ জন।

জেলা সিভিল সার্জন অফিস আরও জানায়,২৪ ঘন্টায় জেলায় করোনা আরও ২ জনের মৃত্যূ হয়েছে। এদের মধ্যে একজন মহেশখালী উপজেলার,অন্যজন চকরিয়া উপজেলার।

তারা হলেন-চকরিয়া উপজেলার এমডি ইসলাম(৭৮)। কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি ২১ জুলাই মৃত্যূ ১ আগস্ট। এবং মহেশখালী উপজেলার বড় মহেশখালীর মো: মোজাফ্ফর(৫৫)।কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি ৩০ জুলাই মৃত্যূ ৩১ জুলাই।

সিভিল সার্জন অফিস আরও জানায়, জেলায় ২৪ ঘন্টায় ২৩৮টি র‌্যাপিড এন্টিজেন টেস্টে ৩২ জন পজিটিভ হয়েছেন। এর মধ্যে সদরে ১২ জন,উখিয়ায় ১ জন,রামুতে ৮ জন,চকরিয়ায় ৩ জন,,কুতুবদিয়ায় ২ জন,মহেশখালিতে ১ জন,পেকুয়ায় ১ জন এবং টেকনাফে ৪ জন। এ পর্যন্ত জেলায় ৬ হাজার ৯২০ টি র‌্যাপিড এন্টিজেন টেস্টে করোনা পজিটিভ হয়েছেন ১ হাজার ৮৪৯ জন। এর মধ্যে স্থানীয় ১ হাজার ৭৬৯ জন এবং রোহিঙ্গা ৮০ জন।

২ আগস্ট পর্যন্ত জেলায় করোনার পরীক্ষা করা হয়েছে ১ লাখ ৭২ হাজার ৭০২ জনের।এর মধ্যে আক্রান্ত হয়েছে ১৮ হাজার ৩০৩ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১৪ হাজার ৬৭০ জন। প্রতিষ্ঠানিক আইশোলেসনে রয়েছেন ৫১২ জন। মৃত্যূবরণ করেছেন ২৮ রোহিঙ্গাসহ ১৯৬ জন। তার মধ্যে সদর ও পৌরসভার ৮৯ জন,উখিয়ায় ৪২ জন,টেকনাফে ১৯ জন,চকরিয়ায় ২১ জন,রামুতে ১২ জন,পেকুয়ায় ৫ জন,মহেশখালিতে ৫ জন এবং কুতুবদিয়ায় ৩ জন ।

২৪ ঘন্টায় কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের শরনার্থী শিবিরের ১৪২টি টেস্টে পজিটিভ হয়েছে ১৮ জন। শরনার্থী শিবিরে এ পর্যন্ত ৫৩ হাজার ৬১৬ রোহিঙ্গার নমুনা পরীক্ষায় করোনাক্রান্ত‘র সংখ্যা ২ হাজার ৫২০ জন।এর মধ্যে উখিয়া শরনার্থী শিবিরে ২ হাজার ৯৯ জন এবং টেকনাফ শরনার্থী শিবিরে ৪৬০ জন। সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ২২৩ জন। আইসোলেশনে রয়েছেন ২০৬ জন।মৃত্যূবরণ করেছেন ২৮ জন। আক্রান্তের হার ৪.৭%।

এদিকে জেলা প্রশাসন কক্সবাজার শহরসহ বি‌ভিন্ন উপজেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় বিশেষ তৎপরতা চলালেও সংক্রমন কমার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। কোরবাণী ঈদের পর ২৪ জুলাই থেকে কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নের পাশাপাশি করোনা রোগীরা যাতে সাধারণ মানুষের স্পর্শে আসতে না পারে ও মানুষ যা‌তে স্বাস্থ্য‌বি‌ধি মে‌নে চ‌লে সে বিষয়ে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। তা সত্তেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছেনা। তবে করোনার পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে রোগীর সংখ্যা কমানো তথা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের উপর জোর দিয়ে আরো বেশি করে গণসচেতনতা তৈরির উপর গুরুত্ব এবং লকডাউন অর্থবহ করতে জনপ্রশাসন ও পুলিশ প্রশসানকে আরো কঠোর ভূমিকা রাখার আহবান জানিয়েছে সচেতন মহল।

পাঠকের মতামত: