কক্সবাজার, মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪

কক্সবাজারে মাছের ট্রলারে রহস্যময় বিস্ফোরণ নিয়ে ধোঁয়াশা

বাংলাদেশের কক্সবাজার উপকূলে মাছ ধরার সময় ট্রলারে বিস্ফোরণে শুক্রবার রাত পর্যন্ত সাত জনের মৃত্যু হয়েছে আর ঢাকায় শেখ হাসিনা বার্ণ ইন্সটিটিউটে চিকিৎসাধীন আছেন আরও চার জন কিন্তু এ ঘটনাটি নিয়ে কৌতুহল ছড়িয়ে পড়েছে জেলে ও ট্রলার মালিকদের মধ্যে। বিবিসি।

নিহত ও আহত জেলেদের বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে । সেখানকার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল মোমিন বিবিসিকে বলেছেন, নিহতদের পরিবারকে ইতোমধ্যেই জেলা প্রশাসন থেকে বিশ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেয়া হচ্ছে।

কিন্তু এই বিস্ফোরণের কারণ জানা গেছে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন জেলেদের যারা সুস্থ হয়ে এসেছে তাদের সাথে কথা বলেছেন কিন্তু তারা কারণ কিছু বলতে পারেনি। বিষয়টি নিয়ে কক্সবাজারে গিয়ে মামলা করার জন্যও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের পরামর্শ দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মোমিন। ‘মামলা ও তদন্ত হলে জানা যাবে আসলে কি ঘটেছে সেখানে,’ বলছিলেন তিনি।

তবে কক্সবাজার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেছেন এখনো কোন মামলা দায়ের করেনি কেউ। কোস্ট গার্ডের চট্টগ্রাম জোনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন ঘটনাটিও তাদেরকেও জানানো হয়নি। তবে কোস্ট গার্ড কক্সবাজার ইউনিটে যোগাযোগ করা হলে সেখানকার একজন কর্মকর্তা প্রসঙ্গটি উত্থাপনের সাথে সাথে ফোন কেটে দেন এবং পরে কয়েক দফা যোগাযোগ করা হলে পরে যোগাযোগের পরামর্শ দেন।

তবে দুর্ঘটনা কবলিত ট্রলারটির মালিক শহিদুল হক সোহেল বলছেন, ‘এটি একটি রহস্যময় ঘটনা। কারণ জাহাজের ইঞ্জিন, ব্যাটারি, গ্যাস সিলিন্ডার সব অক্ষত। হঠাৎ করে কিছু একটা এসে উপরিভাগের কেবিনে বিধ্বস্ত হয়ে বিস্ফোরণ ঘটায় যাতে সেখানে থাকা ১২ জন জেলে আহত হয়। শুক্রবার রাত পর্যন্ত তাদের মধ্যে সাত জন মারা গেছে’।

২১ জন জেলে ট্রলারটি নিয়ে কক্সবাজার উপকূল থেকে রওনা দিয়েছিলো ২৭ ফেব্রুয়ারি। বাকখালী নদী পেরিয়ে আরও অন্তত ১০/১২ ঘণ্টা ট্রলার চালানোর পর রাত তিনটা থেকে সাগরে জাল ফেলার কাজ করে ২৮ ফেব্রুয়ারি সকাল দশটা নাগাদ সকালের খাবার খান তারা। তিনি জানান জেলেদের প্রায় সবাই উপরের অংশের কেবিনে ভেতরে ও বাইরে বসে খাবার খাওয়া মাত্র শেষ করেছিলেন আর একজন নীচে বসে জাল পাহারা দিচ্ছিলেন।

‘সকাল সাড়ে এগারটার মতো বাজে। হঠাৎ প্রচণ্ড শব্দ। কেবিন তছনছ হয়ে গেলো। সবাই লাফিয়ে পড়লো পানিতে। পরে যে একজন উপরে ছিলো যে রশি ফেললে আমরা একে একে উঠে আসি। কম বেশি সবাই আহত হল। বেশ কিছুক্ষণ পর কাছাকাছি এলাকা দিয়ে আরেকটি ফিশিং বোট যাচ্ছিলো। তখন আমরা অনুরোধ করলাম মোবাইল নেটওয়ার্ক পাওয়া যাবে এমন এলাকায় এগিয়ে দিয়ে আসতে,’ বলছিলেন তিনি। পরে মোবাইল নেটওয়ার্ক পাওয়ার পর ট্রলারের মালিককে ঘটনা জানান আহত জেলেরা এবং তাদের দ্রুত উদ্ধারের অনুরোধ করেন।

মালিক শহিদুল হক সোহেল বলেন, খবর পেয়েই আরেকটা বোট ও দুইটা স্পীড বোট ভাড়া করে তখনি রওনা দিয়ে তাদের উদ্ধার করে নিয়ে এসে হাসপাতালে ভর্তি করান তিনি। তিনি জানান আহতদের দ্রুত প্রথমে চট্টগ্রাম ও পরে কয়েকজন ঢাকায় পাঠানো হয়েছে এবং পুরো ঘটনা সেখানকার ফিশিং বোট মালিক সমিতিকে জানানো হয়েছে। বিডি জার্নাল

পাঠকের মতামত: