কক্সবাজার, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

কক্সবাজারে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিমা বিসর্জন

লাখো ভক্তের উপস্থিতিতে বিশ্বের দীর্ঘতম কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার বিকালে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে প্রতিমাগুলো বিসর্জন দেওয়া হয়। এতে কোথাও কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা দেখা যায়নি।

প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠানে যারা উপস্থিত ছিলেন, তাদের বেশির বেশিরভাগের মুখে মাস্ক পরা ছিল।

আগের মতো এবার প্রতিমাগুলো একসঙ্গে সমুদ্রে বিসর্জন দেওয়া হয়নি। এবার বিসর্জন দেওয়া হয়েছে একটার পর একটা করে।

কিন্তু এবার করোনাভাইরাস সংক্রমণরোধে লোকসমাগম সীমিত করার উদ্যোগ নেয় জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ।

জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের তথ্য মতে, এবার জেলার আটটি উপজেলার ২৯৯টি পূজামণ্ডপে দুর্গাপূজা হয়েছে। এরমধ্যে চকরিয়া উপজেলায় ৮৮টি, কক্সবাজার সদরে ৭৪টি, রামুতে ৩০টি, মহেশখালীতে ৩১টি, কুতুবদিয়ায় ৪২টি, উখিয়ায় ১৪টি, পেকুয়ায় ১৩টি, টেকনাফে ৬টি এবং উখিয়ার পশ্চিম কুতুপালং হিন্দু শরণার্থী শিবিরে একটি।

করোনা সংক্রমণরোধে এবার শুধু কক্সবাজার সদর, কক্সবাজার পৌরসভা, রামু ও উখিয়া উপজেলার শতাধিক মণ্ডপের প্রায় ৩০০ প্রতিমা বিসর্জনের জন্য সৈকতের লাবণী পয়েন্টে আনা হয়।

সনাতন ধর্মের নেতারা বলেন, গত বছর লাবণী পয়েন্টের বিজয়া মঞ্চে প্রতিমা বিসর্জন উৎসবে যোগ দিয়েছিল আড়াই লাখ মানুষ। এর মধ্যে দেশি-বিদেশি পর্যটকও ছিল চোখে পড়ার মতো।

চকরিয়া, টেকনাফ, মহেশখালী, কুতুবদিয়া, পেকুয়া উপজেলার প্রতিমাগুলো সেখানকার নদী, পুকুর ও দিঘিতে বিসর্জন দেওয়া হয়েছে। সেখানেও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করা হয়।

বিকাল ৩টার দিকে কক্সবাজার পৌরসভার বিভিন্ন মণ্ডপ থেকে ট্রাকযোগে প্রতিমাগুলো সৈকতের লাবণী পয়েন্টে আনা হয়। এরপর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের শতাধিক স্বেচ্ছাসেবী ও ভক্তরা মিলে প্রতিমাগুলো সাগরের কাছাকাছি নিয়ে যান। তারপর পূজার কাজ শেষ করে ভক্তরা মা দুর্গা প্রতিমাকে বিসর্জন দেন বঙ্গোপসাগরে।

সন্ধ্যা পর্যন্ত এভাবে চলে প্রতিমা বিসর্জন।

গত বছর সৈকতের লাবণী পয়েন্টে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে তৈরি হয়েছিল বিশাল বিজয়ামঞ্চ। সেখানে অনুষ্ঠিত হয় মুক্ত আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বিকাল ৫টায় মন্ত্রপাঠের মাধ্যমে একে একে ৫০০ প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়েছিল সাগরে। তখন সময় লেগেছিল মাত্র ২০-২৫ মিনিট। করোনা সংক্রমণরোধে এবার সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে প্রতিমাগুলো বিসর্জন দেওয়া হয়েছে। বিকালে লাবণী পয়েন্টে অনুষ্ঠিত হয় সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা।

জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ সভাপতি অ্যাডভোকেট রনজিত দাশের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক বাবুল শর্মার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন কক্সবাজার-৩ ( সদর-রামু) আসনের সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমল, জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন, পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান, কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, কক্সবাজার সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কায়সারুল হক জুয়েল, কক্সবাজার পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নজিবুল ইসলাম, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক উজ্জল কর প্রমুখ। করোনা সংক্রমণরোধে সীমিত আকারে শারদীয় দুর্গোৎসব পালন করায় হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন বক্তারা।

পাঠকের মতামত: