কক্সবাজার, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

কক্সবাজার সৈকতে হঠাৎ ডলফিনের খেলা

ভোরের কুয়াশা ছেদ করে সূর্য মাত্রই রশ্মি ঢেলেছে সাগরের নীল জলে। সৈকতে পর্যটকদের আনাগোনা থাকে না তখনও। ওই সময়টাতেই কক্সবাজারের সৈকতের লাবণী থেকে কলাতলী পয়েন্টের সমুদ্রের একটু দূরে দেখা মিলছে ডলফিনের পালের। কখনও দু’একটা করে, আবার কখনও কখনও দলবেঁধে— সাগরজলে সাঁতার-ডোবা খেলায় মাতে ডলফিন বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।

শুক্র ও শনিবার সকালে ডলফিনের ছোটাছুটির দৃশ্য ক্যামরা বন্দি করেন সৈকতের জেট স্কিচালক সোনা মিয়া। ডলফিনের পালের সঙ্গে ১৩ মিনিট ধরে খেলায় মেতেছিলেন তিনি। সোনা মিয়া জানান, গত বছর করোনার সময় সৈকতের তীরবর্তী স্থানে ডলফিনের দেখা মিলেছিল। এক বছর পর আবারও কক্সবাজার সৈকতে ডলফিনের দেখা মিলল। সাগরের সঙ্গে সবসময় যাদের সখ্যতা, সেই লাইফ গার্ডকর্মীরা বলছেন, শীত মৌসুমে মাছ চলে আসে সাগরের কিনারায়। তাই ডলফিনও মাছ শিকারে আসে সমুদ্রপাড়ের কাছাকাছি। এদিকে ভোরে কক্সবাজার সৈকতে আবারও ডলফিনের পালের দেখা মিলেছে, এমন খবর ছড়িয়ে পড়ার পর রোববার ভোরে পর্যটকসহ স্থানীয় অনেকেই সৈকতের লাবণী এবং কলাতলী পয়েন্টে ছুটে আসেন। তবে এদিন আর ডলফিনের পালের দেখা মেলেনি।

সৈকতের লাইফ গার্ডকর্মী মো. ওসমান বলেন, ডলফিনের ওই দৃশ্য প্রতিদিন দেখা মেলে না। এর পরও রোববার ভোরে ডলফিনের পাল দেখতে অনেকে ছুটে এসেছেন। আমাদের কাছে জানতে চাচ্ছেন ডলফিনেরে পাল দেখা গেছে কিনা। উখিয়া ইনানী এলাকার বাসিন্দা ও জেলে আবদু সালাম মাঝি জানান, সাগরে মাছ ধরতে গেলে গভীর সাগরে মাঝেমধ্যে ঝাঁকে ঝাঁকে ডলফিনের দেখা মেলে। বিশেষ করে শীত মৌসুমের শেষের দিকে এসব ডলফিনের দল সাগরে ঘুরে বেড়ায়। তবে গত দুই-তিন বছর আগেও একবার এসব ডলফিন সাগর উপকূলের কাছাকাছি চলে আসতে দেখা গেছে। তবে এটি অহরহ ঘটে এমন না।

বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের বায়োলজিক্যাল ওশানোগ্রাফি বিভাগের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আবু সাঈদ মুহাম্মদ শরীফ বলেন, কক্সবাজারের সোনা দিয়া ও মহেশখালী বঙ্গোপসাগর চ্যানেলে দুটি ডলফিন পরিবার দীর্ঘদিন ধরে রয়েছে। একেকটি পরিবারে ১০-১২টির বেশি ডলফিন থাকে। সাগরে মূলত তারা দলবেঁধে চলাফেরা করে। বর্তমানে চ্যানেলগুলোতে প্রতিনিয়ত তাদের দেখা মেলে। তিনি বলেন, যেহেতু তারা নিরিবিলি পছন্দ করে, সেহেতু সাগরের জনমানবহীন নীরবতার সুযোগে সাগরের লাবণী পয়েন্টে চলে এসেছে হয়তো।

পাঠকের মতামত: