কক্সবাজার, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

করোনায় আক্রান্ত প্রায় ৫১ লাখ, মৃত্যু বেড়ে সাড়ে ৩ লাখ

মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে বিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যা ৫১ লাখের কাছাকাছি পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়। এছাড়া এতে আক্রান্ত হয়েছে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ মানুষ।

বৃহস্পতিবার জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৫০ লাখ ৯০ হাজার ৬৫ জন। মারা গেছেন ৩ লাখ ২৯ হাজার ৭৩২ জন।

বিশ্বে এখন পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যায় শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে এ পর্যন্ত ১৫ লাখ ৯৩ হাজারেরও বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ৯৪ হাজার ৯৯৪ জন।

করোনায় সর্বোচ্চ আক্রান্তের সংখ্যায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে রাশিয়া। দেশটিতে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লাখ ৮ হাজার ৭০৫ জন। দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ব্রাজিল রয়েছে করোনায় সর্বোচ্চ আক্রান্ত সংখ্যার তালিকায় তৃতীয় স্থানে।

করোনা আক্রান্ত প্রায় প্রায় সাড়ে ৮ লাখ রোগী রয়েছে এশিয়া মহাদেশে। এ পর্যন্ত মারা গেছেন সাড়ে ২৫ হাজার। রোগীর সংখ্যার দিক থেকে এই অঞ্চলে শীর্ষে রয়েছে তুরস্ক। দেশটিতে রোগী শনাক্ত হয়েছে দেড় লাখের বেশি। মারা গেছেন ৪ হাজারের কিছু বেশি। তবে মৃত্যুর হিসাবে এই অঞ্চলে শীর্ষে রয়েছে ইরান। দেশটিতে এ পর্যন্ত ৭ হাজারের বেশি রোগীর মৃত্যু হয়েছে। রোগী শনাক্ত হয়েছে প্রায় ১ লাখ ২৭ হাজার। এর পরেই তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ভারত। এই দেশে শনাক্ত হওয়া রোগীর সংখ্যা ১ লাখ ১১ হাজার ছাড়িয়েছে সোমবারই। গতকাল পর্যন্ত ৩ হাজার ৪০০ জনের বেশি রোগী মারা গেছেন। পাকিস্তানে শনাক্ত হওয়া রোগীর সংখ্যা প্রায় ৪৭ হাজার। মৃত্যু ১ হাজার ছাড়িয়েছে গতকাল। তবে এশিয়ার যে দেশ থেকে করোনা মহামারি বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে, সেই চীনে এক মাসের বেশি সময় ধরে করোনায় কারও মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি।

দক্ষিণ আমেরিকায় রোগী আছে প্রায় ৫ লাখ। এর মধ্যে মারা গেছেন প্রায় সাড়ে ২৫ হাজার। এর মধ্যে ব্রাজিলেই রোগী শনাক্ত হয়েছেন প্রায় পৌনে ৩ লাখ। মারা গেছেন প্রায় ১৮ হাজার। দেশটিতে মঙ্গলবার মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ১৩০ জনের। ব্রাজিলে করোনা মহামারিতে এ পর্যন্ত এ দিনই সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। লাতিন আরেক দেশ পেরোতে রোগী লাখ ছুঁই ছুঁই। দেশটিতে মারা গেছেন প্রায় ৩ হাজার রোগী।

তুলনামূলক কম সংক্রমিত মহাদেশ আফ্রিকায় শনাক্ত হয়েছেন ৯৩ হাজারের কিছু বেশি। মারা গেছেন প্রায় ৩ হাজার। এর মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকায় সবচেয়ে বেশি ১৭ হাজার রোগী শনাক্ত হয়েছেন। দেশটিতে মারা গেছেন তিন শতাধিক। মৃত্যুতে এই অঞ্চলে শীর্ষে রয়েছে মিসর। দেশটিতে এ পর্যন্ত মারা গেছেন প্রায় ৭০০ রোগী। মিসরে রোগী শনাক্ত হয়েছেন প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার। এ ছাড়া আলজেরিয়ায় মারা গেছেন পাঁচ শতাধিক।

এছাড়া ওশেনিয়া অঞ্চলে রোগী শনাক্ত হয়েছেন সাড়ে ৮ হাজারের কিছু বেশি। মারা গেছেন ১২১ জন। এর মধ্যে অস্ট্রেলিয়ায়ই মারা গেছেন ১০০ জন। দেশটিতে রোগী শনাক্ত হয়েছেন ৭ হাজারের বেশি। নিউজিল্যান্ডে শনাক্ত হওয়া দেড় হাজার রোগীর মধ্যে মারা গেছেন ২১ জন। এই দেশে এখন চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৩৫ জন রোগী। বাকিরা সুস্থ হয়ে উঠেছেন। ওশেনিয়ার বাকি দেশগুলোয় রোগী শনাক্ত হলেও করোনায় কারও মৃত্যু হয়নি।

প্রসঙ্গত, বিগত বছরের ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে বৈশ্বিক মহামারিতে পরিণত করোনাভাইরাসে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৫১ লাখ ছুঁই ছুঁই। মারা গেছেন তিনলাখ ২৯ হাজারেরও বেশি মানুষ। তবে ২০ লাখ ২৪ হাজারেরও বেশি রোগী ইতিমধ্যে সুস্থ হয়েছেন।

বাংলাদেশে গত ৮ মার্চ প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পাওয়া যায়। এরপর প্রথম দিকে কয়েকজন করে নতুন আক্রান্ত রোগীর খবর মিললেও এপ্রিলের শুরু থেকে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে এ সংখ্যা।

বুধবার পর্যন্ত দেশে করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে ২৬ হাজার ৭৩৮ জন। মৃত্যবরণ করেছে ৩৮৬ জন। এছাড়া সুস্থ হয়ে উছেন ৫ হাজার ২০৭ জন।

প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সাধারণ ছুটি ঘোষণার পাশাপাশি নানা পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে; যার মূলে রয়েছে মানুষে মানুষে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। মানুষকে ঘরে রাখতে রাজপথের পাশাপাশি পাড়া-মহল্লায় টহল দিচ্ছে সশস্ত্র বাহিনী, র‌্যাব ও পুলিশ।

পাঠকের মতামত: