কক্সবাজার, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

করোনা আক্রান্ত ২ রোহিঙ্গা পালিয়েছে

কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হওয়ায় অন্যদের থেকে আলাদা রাখতে তাদের ‘নোয়াখালীর ভাসানচর ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হতে পারে ভেবে’ দুই রোহিঙ্গা আইসোলেশন সেন্টার থেকে পালিয়েছে৷

গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্তের তিনদিন পরই সংক্রমণ ঠেকাতে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প সম্পূর্ণ অবরুদ্ধ করে দেওয়া হয়েছিল৷ তারপরও শেষ রক্ষা হয়নি৷ সংক্রমণ ক্যাম্পে ছড়িয়ে পড়ে; গত মঙ্গলবার করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ক্যাম্পে প্রথম এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়৷
তারপর কোভিড-১৯ আক্রান্ত অন্তত দুই রোহিঙ্গাকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানান রোহিঙ্গা নেতারা৷
বর্তমানে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা কক্সবাজারের শরণার্থী ক্যাম্পগুলোতে আশ্রয় নিয়ে আছে৷ তাদের বেশিরভাগই ২০১৭ সালে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনা অভিযানের সময় প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে৷ শরণার্থী ক্যাম্পগুলোতে রোহিঙ্গারা গাদাগাদি করে থাকে৷ সেখানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এক কথায় অসম্ভব৷
সরকারি হিসাব অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ২৯ রোহিঙ্গা করোনা পজিটিভ হয়েছেন৷ এছাড়া আরো প্রায় ১৬ হাজার রোহিঙ্গাকে ক্যাম্পের ভেতর কোয়ারান্টাইন জোনে আলাদা করে রাখা হয়েছে৷ ক্যাম্পে এখন পর্যন্ত কতজনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি৷

স্থানীয় একজন জ্যেষ্ঠ স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এএফপিকে বলেন, ‘‘করোনা আক্রান্ত দুই রোহিঙ্গা ‘হাসপাতালের আইসোলেশন বিভাগ থেকে পালিয়েছেন৷

গত দুই দিনে মাত্র ২০ জন রোহিঙ্গাকে নমুনা পরীক্ষা করাতে রাজি করানো গেছে৷ তাদের ভয়, করোনা পজিটিভ হলে তাদের ভাসানচরে পাঠিয়ে দেওয়া হবে৷ আমরা তাদের বলেছি তাদের কোথাও পাঠানো হবে না৷ তারপরও তাদের আতঙ্ক যাচ্ছে না৷’’
রোহিঙ্গা নেতা আবু জামান বলেন, ‘‘ভাসানচর নিয়ে রোহিঙ্গাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে৷ এজন্য তারা টেস্ট করাতে যেতে ভয় পাচ্ছে৷’’
নোয়াখালীর ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের জন্য একটি ক্যাম্প নির্মাণ করেছে বাংলাদেশ সরকার৷ ওই ক্যাম্পে প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করতে পারবে৷ কিন্তু মূল ভূখণ্ড থেকে একেবারে বিচ্ছিন্ন ওই চরে যেতে রাজি না রোহিঙ্গারা৷ সম্প্রতি সমুদ্রে ভাসমান রোহিঙ্গাদের দুইটি দলের ৩০৬ জনকে ভাসানচরে রাখা হয়েছে৷
এদিকে, কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের আইসোলেশনে রাখার জন্য ক্যাম্পে প্রায় ৫০০ শয্যা প্রস্তুত রাখা করা হয়েছে, যদিও সেগুলোর বেশির ভাগই খালি পড়ে আছে৷ ক্যাম্পে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া নিয়ন্ত্রণে পরীক্ষা বাড়ানোর চেষ্টা করা হলেও রোহিঙ্গারা তাতে অংশ নিতে রাজি হচ্ছে না বলে জানান ‘ওয়ান ক্যাম্প ব্লক’ এর দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা খলিলুর রহমান খান৷
মোহাম্মদ শাফি নামে এক রোহিঙ্গা বলেন, ‘‘আমি সবাইকে বোঝানোর চেষ্টা করছি চিকিৎসা নিলে এই রোগ ভালো হয়ে যায়৷ কিন্তু তারা আমার কথা বিশ্বাস করছে না৷’’

পাঠকের মতামত: