কক্সবাজার, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

কর্ণফুলী টানেলেও করোনা, ব্যয় করা যাচ্ছে না ১৪৬ কোটি টাকা

প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের থাবা পড়েছে ‘কন্সট্রাকশন অব মাল্টি লেন রোড টানেল আন্ডার দ্য রিভার কর্ণফুলী’ অর্থাৎ পরবর্তীকালে নাম দেওয়া ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল’ প্রকল্পেও। চলমান প্রকল্পটি ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সংশয় দেখা দিয়েছে এর গুরুত্বপূর্ণ নির্মাণসামগ্রী চীন থেকে আনা যাচ্ছে না বলে।

প্রকল্পটির আওতায় ২০১৯-২০ অর্থবছরের সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ১৪৬ কোটি ৪৩ লাখ টাকা খরচ করা যাচ্ছে না। এতে ব্যহত হচ্ছে প্রকল্পের কাজ। ফলে প্রকল্পটি আবারও সংশোধন হতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

সূত্র জানায়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে সংশোধিত এডিপিতে এর প্রকল্প সাহায্য ছিল ৯৫০ কোটি টাকা। এরমধ্যে খরচ হবে ৮৭৮ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। এ হিসেবে ৭১ কোটি ৪৩ লাখ টাকা খরচ করা বাকি থেকে যাবে। আবার একই সময়ে সরকারি খাতে বরাদ্দ ছিল ৬৭০ কোটি ৫২ লাখ টাকা। এরমধ্যে খরচ হচ্ছে ৫৯৫ কোটি ৫২ লাখ টাকা। ফলে এখান থেকেও ৭৫ কোটি টাকা খরচ হচ্ছে না। এতে প্রকল্পের সময় আবারও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

নয় হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে দেশে প্রথমবারের মতো কর্ণফুলী নদীর তলদেশে এই টানেল নির্মাণের কাজটি বাস্তবায়ন করছে চায়না কমিউনিকেশন্স কনস্ট্রাকশন কোম্পানি (সিসিসিসি)।

করোনা ভাইরাসের কারণে কোম্পানিটির সংশ্লিষ্টদের অনেকে চীন যাতায়াত করতে পারছেন না। এমনকি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইক্যুইপমেন্ট ও নির্মাণসামগ্রী চীন থেকে দেশে আনা সম্ভব হচ্ছে না। মূলত এসব কারণেই সংশোধিত এডিপির টাকা খরচ হচ্ছে না।

পরবর্তী অর্থবছরে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। একইসঙ্গে সঠিক সময়ে প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়নও হবে না। তাই সংশোধিত এডিপি থেকে চলতি অর্থবছরে বরাদ্দ কমানোর জন্য পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগে চিঠি দিয়েছে সেতু বিভাগ।

পরিকল্পনা কমিশনের সিনিয়র সহকারী প্রধান সাইফুল ইসলাম মণ্ডল বলেন, কর্ণফুলী টানেল চায়না কমিউনিকেশন্স কনস্ট্রাকশন কোম্পানি (সিসিসিসি) নির্মাণ করছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে অনেক যন্ত্রপাতি ও নির্মাণসামগ্রী চীন থেকে আনা হচ্ছে। কিন্তু বর্তমানে করোনা ভাইরাসের কারণে তা স্থবির হয়ে আছে।

তিনি বলেন, এডিপিতে প্রকল্পটির আওতায় জিওবি ও প্রকল্প সাহায্য মিলে এক হাজার ৬২০ কোটি ৫১ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে ১৪৬ কোটি ৪৩ লাখ টাকা খরচ করা যাচ্ছে না। এই বরাদ্দ পরবর্তী অর্থবছরে আবারও সমন্বয় করতে হবে।

সেতু বিভাগ সূত্র জানায়, চীনের বাণিজ্যিক নগর সাংহাইয়ের ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’র আদলে গড়ে তোলা হচ্ছে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামকে। এ ধরনের উন্নয়ন কাজ বাংলাদেশে এবারই প্রথম। ২০১৫ সালের নভেম্বরে এই টানেল নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। এর দৈর্ঘ্য হবে তিন দশমিক ৩২ কিলোমিটার। আর নির্মাণ ব্যয় নয় হাজার ৮৮০ কোটি টাকা। এরমধ্যে ঋণ হিসেবে চাইনিজ এক্সিম ব্যাংক দেবে পাঁচ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা।

পাঠকের মতামত: