কক্সবাজার, মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪

খুলছে স্কুল, বাবা-মা যা করবেন

 

আগামীকাল থেকে আবার ফিরছে সকাল-সকাল ঢুলুঢুলু চোখ নিয়ে ইউনিফর্ম পরা আর ক্লাসের ফাঁকে স্কুলের মাঠে ছোটাছুটি করার দুরন্ত দিনগুলো। স্কুলগামী সন্তানের পাশাপাশি আবার বদলে যাচ্ছে মা-বাবার দৈনিক রুটিন।

তবে সবাই মানছেন, অনেক দিন পর বিষয়টা খুব সহজ হবে না। ব্যাপারটা শিশু ও মা-বাবা দুই পক্ষের জন্যই চ্যালেঞ্জিং হবে বলে মনে করেন ফিনিক্স ওয়েলনেস সেন্টার বাংলাদেশের চিকিৎসক ও সাইকোথেরাপি প্র‍্যাকটিশনার সানজিদা শাহরিয়া।

মা-বাবার প্রস্তুতি
সানজিদা শাহরিয়া বলেন, শিশুর স্কুলে যাওয়ার দৈনিক রুটিন ব্যাহত হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, হোম অফিসের কারণে অনেক মা-বাবারও রুটিন অনেকটাই অন্য রকম হয়েছে; বিশেষ করে মায়েদের কথাই যদি বলি, এটা মাথায় রাখতেই হবে যে প্রথম কয়েকটা মাস খুব কষ্ট হবে। সকালে ঘুম থেকে ওঠা, টিফিন তৈরি করা, বাচ্চাকে প্রস্তুত করা, স্কুলে দিয়ে আসা, আনা—এগুলোয় চাপবোধ হবে স্বাভাবিকভাবেই।

সন্তানকে একটু করে বোঝাতে হবে যে আবার তোমাকে স্কুলে যেতে হবে এবং প্রথম কিছুদিন খারাপ লাগতে পারে। সানজিদা শাহরিয়া বলেন, শিশুদের যেহেতু পাঁচ-ছয় ঘণ্টা স্কুলে ফরমাল সেটআপে বসে ক্লাস করার অভ্যাস একদমই চলে গেছে; ফলে ক্লাস এটিকেট আবার নতুন করে আত্মস্থ করতে হবে। শুরুতে শিশুদের রেজাল্ট খারাপ হবে এবং অন্যদের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে সমস্যা হবে। শিশুদের স্কুল পারফরম্যান্স খারাপ হবে। শিক্ষকদের কাছ থেকেও অনেক অভিযোগ আসবে। এসবে মায়েদের হতাশ হওয়া যাবে না।
আমাদের দেশে শিশুরা স্কুলের পরীক্ষায় খারাপ করলে প্যানিকড হয়ে যান মা-বাবা। এই পারফরম্যান্স অ্যাংজাইটিতে ভোগা যাবে না। স্কুল খোলার পর আগামী ছয় মাস একটা বিষয়েই ফোকাস করতে হবে সেটি হচ্ছে, শিশুরা স্কুলের রুটিনে অভ্যস্ত হচ্ছে কি না। এই ছয় মাস তারা অভিভাবকের আশানুরূপ রেজাল্ট করবে না। এটা মেনে নেওয়ার মানসিকতা থাকতে হবে।
করোনাকালে শিশুদের ডিভাইসে আসক্তি দেখা দিয়েছে। শিশু প্রথম দিন স্কুলে গিয়েই বিরক্ত হতে পারে দীর্ঘক্ষণ ডিভাইসহীন থাকার কারণে। এ জন্য শিশুরা ঘরে এসে চট করে ডিভাইস নিয়ে বসতে চাইবে। স্কুল খোলার পর মায়েদের প্রথম চ্যালেঞ্জ হবে শিশুদের ডিভাইসে ফিরতে না দেওয়া। তবে বিষয়টি ধাপে ধাপে করতে হবে।
যেকোনো আসক্তি কাটাতে ২১ দিন সময় লাগে বলে জানান সানজিদা শাহরিয়া। ফলে মায়েদের অনেক ধৈর্য ধরতে হবে। হাতে এক মাস সময় রাখুন। এই এক মাস শিশুকে কোনো রকম বকাঝকা করা যাবে না। প্রথম মাসে টার্গেট হবে তার নিয়মিত স্কুলে যাওয়ার অভ্যাস তৈরি করা। দ্বিতীয় মাসে আচরণগত দিকগুলোর দিকে নজর দিতে হবে।
বেশি ভুক্তভোগী হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে চাকরিজীবী মায়েদের। যেহেতু সন্তান শুরুতেই স্কুলের নিয়মের ব্যাপারে উৎসাহী হবে না, ডিভাইসে আসক্তি থেকে চট করে তাকে সরানো কঠিন হবে, ঘুম ভাঙতে ও ঘুমাতে যেতে দেরি হবে। ফলে মাকে খুব সুন্দর ও সহজভাবে এটা নিয়ে কাজ করতে হবে।
কোনো ধরনের গুজবে কান দেওয়া যাবে না। স্বাস্থ্যগত বিষয়গুলো মেনে চলতে হবে। কোনো বিষয়ে কোথাও সন্দেহ তৈরি হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতে হবে।

পাঠকের মতামত: