কক্সবাজার, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

গাফেলিত ও অবহেলার দায়ে এবার উখিয়া থানার এসআইয়ের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থার নির্দেশ

তদন্তে গাফিলতি ও অবহেলা এবং আদালতে ত্রুটিপূর্ণ অভিযোগপত্র দেওয়ায় উখিয়া থানার সাবেক সাব-ইনস্পেক্টর (এসআই) মো. ফারুক হোসেনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন কক্সবাজার চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। বর্তমানে ফারুক হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং থানায় সাব ইনস্পেক্টর হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।

মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে একটি ডাকাতি প্রস্তুতি মামলার অভিযোগপত্রে নানা ত্রুটি দেখে কক্সবাজার চীফ জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আলমগীর মুহাম্মদ ফারুকী ওই আদেশ দেন। আদেশের কপিটি বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিচালকের (আইজিপি) কাছে পাঠানো হয়েছে।

এজাহার মতে, ২০১৮ সালের ১৭ অক্টোবর উখিয়া থানার তৎকালীন এসআই নুরুল হক বাদী হয়ে একই উপজেলার হলদিয়া পালং ইউপির ৬নম্বর ওয়ার্ডের রুমখার মৌলভী পাড়ার তোফায়েল আহমেদের ছেলে মো. মনির (২৭)-কে আটক দেখিয়ে অজ্ঞাতনামা ৮/৯ জনের বিরুদ্ধে একটি ডাকাতি প্রস্তুতি মামলা করেন। পরে উখিয়া থানার এসআই মো. ফারুক হোসেন তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে ২০২০ সালের ২ সেপ্টেম্বর আদালতে এজাহারের আসামিসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন।

অভিযোগ শুনানিকালে আদালত পর্যবেক্ষণ দেন, এজাহারে নাম না থাকার পরও ২ জনকে আসামি করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষীরা ১৬১ ধারার জবানবন্দিতে কোনো বক্তব্য তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে দেননি। এমনকি ওই দুই জনের নামও সাক্ষীরা তদন্ত কর্মকর্তার কাছে প্রকাশ করেননি। তাছাড়া সাক্ষী মো. শাহাজাহানের নাম রেকর্ডকরা জবানবন্দীতে মো. শামসুল আলম বলে উল্লেখ করা হয়। এছাড়া আদালত অভিযোগপত্রে ও তদন্তে আরও নানা ত্রুটি দেখেন।

পর্যবেক্ষণে আরও রয়েছে, তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্তকালে চরম অবহেলা ও গাফিলতি দেখিয়েছেন। তিনি কেন এবং কীভাবে ওই ২ জন আসামিকে অভিযোগপত্রে অন্তর্ভুক্ত করেছেন তা আদালতের কাছে বোধগম্য হয়নি। তদন্ত কর্মকর্তার এ ধরনের কার্যক্রম কাম্য নয়। তার এ ধরনের অবহেলা, ত্রুটি ও বিচ্যুতির বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আসা দরকার বলে মনে করছেন আদালত।

এ বিষয়ে কক্সবাজার চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. আশেক ইলাহী শাহাজাহান নূরী বলেন, অভিযোগপত্র বিশ্লেষণ করে আদালত এজাহার নামীয় ৬ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করলেও বাকি আসামিদের অব্যাহতি দিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, তদন্তে গাফিলতি, অবহেলা এবং নানা ত্রুটিতে ভরা অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করায় তদন্ত কর্মকর্তা ফারুক হোসেনেরর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আলমগীর মুহাম্মদ ফারুকী।

আদালতের নির্দেশনার বিষয়ে অভিযুক্ত তদন্ত কর্মকর্তা মো. ফারুক হোসেন বলেন, ‘আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আমাকে যেভাবে নির্দেশনা দিয়েছে আমি সেভাবেই প্রতিবেদন তৈরি করেছি। আর সেই প্রতিবেদন আমার সিনিয়ররা দেখেছেন’।

পাঠকের মতামত: