কক্সবাজার, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

চকরিয়ায় পানি নিষ্কাশনের প্রতিবন্ধকতায় দুর্ভোগ চরমে, প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা

কক্সবাজারের চকরিয়ায় পানি নিষ্কাশনের চলাচল পথ বন্ধ করে দেওয়ায় জলাবদ্ধতায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন ৬০ পরিবারের বাসিন্দারা। বর্তমানে কোনো ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকার ফলে একটু বৃষ্টি হলেই বাড়ির রাস্তা ও উঠান পানিতে ডুবে সয়লাব। শিশু, বয়োবৃদ্ধসহ এলাকার বেশ কয়েকটি পরিবারকে স্থায়ী জলাবদ্ধতায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

গত দুই বছর ধরে পানি নিষ্কাশনের চলাচলের একমাত্র পথটি বন্ধের অভিযোগ উঠেছে উপজেলার বিএমচর ইউনিয়নের ৮নম্বর ওয়ার্ডের বেতুয়া চৌমুহনী সংলগ্ন স্কুল পাড়া এলাকার রুহুল কাদের ও তার ভাই জসিমের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত রুহুল কাদের ও জসিম উদ্দিন ওই এলাকার মরহুম পুতন আলীর ছেলে। চলতি বর্ষা মৌসুমের শুরুতে টানা ভারিবর্ষণে বৃষ্টির পানি জমে থাকায় এলাকার বাসিন্দারা জলাবদ্ধতা ও পানিবন্দি হয়ে চরম দূর্ভোগে পড়ে। এনিয়ে স্থানীয় এলাকাবাসী প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়, বিএমচর ইউনিয়নের ৮নম্বর ওয়ার্ডস্থ বেতুয়া চৌমুহনী সংলগ্ন স্কুল পাড়া এলাকার পুতন আলীর ছেলে রুহুল কাদের ও তার ভাই জসিম উদ্দিন ওই এলাকার দীর্ঘদিনের পানি নিষ্কাশনের চলাচল পথটি বাউন্ডারি ওয়াল দিয়ে বন্ধ করে দেওয়ায় বিগত দুই বছর ধরে পুরো এলাকায় বড় ধরণের জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এতে ওই সব পানিবন্দি পরিবারের রান্নাঘর ও টয়লেট পানিতে ডুবে যাওয়ায় পানি দূষিত হয়ে দুর্গন্ধ ছড়ায় এবং পানিবাহী রোগ বিরাজ করতে পারে বলে স্থানীয় এলাকাবাসী অভিযোগ করেন। প্রতি বর্ষা মৌসুম আসলেই বৃষ্টির পানি জমে জলবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয় বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

দীর্ঘদিনের এ জলাবদ্ধতা নিরসনে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা প্রশাসন ও বিএমচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর একাধিকবার লিখিত অভিযোগ জানালেও এখনও কোনো ধরণের প্রতিকার পায়নি এলাকাবাসী।

বিএমচর স্কুল পাড়া এলাকার ভুক্তভোগী নুরুল আমিন বাবুল, রহিম, মন্নান, জাহাঙ্গীর, আবছার, নুরুল আলম খলিফা ও মোস্তাক আহমদসহ বেশ কয়েকজন এলাকাবাসী অভিযোগ করে জানায়, তাদের এলাকার পানি নিষ্কাশনের চলাচল পথটি সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রতি বর্ষা মৌসুমে এলাকাবাসীকে প্রতিদিন পানি দিয়ে হেঁটে চলাচল করতে হচ্ছে। এ বছরও বর্ষার শুরুতে তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। গত দুইদিনের টানা বৃষ্টিতে পানি জমে এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে অন্তত ৬০পরিবারের বাসা-বাড়িতে ময়লা ও আবর্জনাযুক্ত পানি ঢুকে থাকায় রান্নার কাজ করাও দুর্বিসহ হয়ে পড়েছে।

তারা আরও বলেন, এলাকাবাসী জলাবদ্ধতা নিরসনে ও পানি নিষ্কাশনের চলাচল বন্ধ পথটি উম্মুক্ত করে দেয়ার জন্য গত বছর উপজেলা প্রশাসন (ইউএনও) বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ইউএনও বিষয়টি আমলে নিয়ে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মহোদয়কে জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দেয়া হলে তিনি সরেজমিন বিষয়টি পরিদর্শন করে অভিযুক্ত ব্যাক্তিদের ডেকে স্থানীয় চেয়ারম্যান উপস্থিতিতে বন্ধ নিষ্কাশনের চলাচল পথটি উম্মুক্ত করার নির্দেশনা দেন। দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও অভিযুক্তরা পানি নিষ্কাশনের চলাচল পথ উম্মুক্ত না করায় বর্তমানে এ জলাবদ্ধতা ও দুর্ভোগের সৃষ্টি বলে তারা দাবি করেছেন। তাই এলাকাবাসীর দাবীর প্রেক্ষিতে পানি নিষ্কাশনের পথটি সম্পূর্ণ উম্মুক্ত করে দুর্ভোগ থেকে বাঁচাতে প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ৬০পরিবারের বাসিন্দা ও স্থানীয় এলাকাবাসী।

এ ব্যাপারে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ সামসুল তাবরীজ কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পানি নিষ্কাশনের চলাচল পথ বন্ধের বিষয়ে বেশ কয়েকজন লোক সকালে আমাকে মুঠোফোনে অবহিত করেছে। বিষয়টি জানার পর খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে দ্রুত এ বিষয়ে সমাধানের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।

পাঠকের মতামত: