কক্সবাজার, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক: জুলাইয়ে উন্মুক্ত হচ্ছে ৬ লেনের বরুমতি সেতু

উপজেলার দোহাজারী পৌরসভায় শঙ্খনদী ও বরুমতি খালের ওপর সেতুসহ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে ছয় লাইনবিশিষ্ট ৪টি নতুন সেতুর কাজ এ বছরের ডিসেম্বর নাগাদ শেষ হবে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে উপজেলার বরুমতি খালের ওপর মাজার পয়েন্ট সেতুর ছয় লাইনের কাজ সম্পন্ন করে আগামী জুলাই মাসের মধ্যে যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে বলে জানা যায়। এছাড়া শঙ্খ, মাতামুহুরি ও ইন্দ্রপুল সেতুর ৬ লাইনের মধ্যে প্রথমে তিন লাইনে কাজ সম্পন্ন করে আগামী জুন মাসের মধ্যে যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে চন্দনাইশের দোহাজারী শঙ্খ নদী, বরুমতি খাল, পটিয়ার ইন্দ্রপুল, চকরিয়ার মাতামুহুরিসহ ৪টি সেতু ছয় লাইনবিশিষ্ট হলেও যানবাহন চলাচলের সুবিধার্থে শঙ্খ, মাতামুহুরি ও ইন্দ্রপুল সেতু প্রথমে তিন লাইনে কাজ সম্পন্ন করে আগামী জুন মাসের মধ্যে যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। পরে বিদ্যমান পুরনো সেতুগুলো ভেঙে বাকি তিন লাইনের কাজ করা হবে।

আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ঐ তিনটি সেতুর বাকি তিন লাইনের কাজও সম্পন্ন হবে বলে জানা যায়। তবে উপজেলার বরুমতি খালের ওপর মাজার পয়েন্ট সেতুর ছয় লাইনের কাজ সম্পন্ন করে আগামী জুলাই মাসের মধ্যে যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। চারটি সেতুর নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করছে স্পেক্ট্রা ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের জন্য বিখ্যাত পর্যটন নগরী কক্সবাজারকে ঘিরে অনেক মেগাপ্রকল্প অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে বাস্তবায়ন করছে বর্তমান সরকার। এসব প্রকল্পকে ঘিরে দেশি-বিদেশিদের পদচারণা বেড়ে চলেছে। তাদের যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক। পর্যটন খাতের ব্যবসার প্রায় পুরোটাই নির্ভরশীল এ সড়কপথে।

জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) বেশিরভাগ আর্থিক সহায়তায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে ছয় লাইনের চারটি নতুন সেতু নির্মাণকাজ এগিয়ে চলছে। সরকার ও জাইকার যৌথ অর্থায়নে ক্রস বর্ডার রোড নেটওয়ার্ক ইমপ্রুভমেন্ট প্রকল্পের অধীনে নির্মাণাধীন চারটি ছয় লাইনের সেতু হচ্ছে মহাসড়কের পটিয়া ইন্দ্রপুল সেতু ৬০ মিটার লম্বা ও পাশে ৩১.২০ মিটার, চন্দনাইশের বরুমতি খালের ওপর মাজার পয়েন্ট সেতু ৬০.১৫ মিটার লম্বা ও পাশে ৩১.২০ মিটার, একই উপজেলার দোহাজারীতে শঙ্খ নদীর ওপর সেতুটি ২৩৮ মিটার লম্বা ও পাশে ৩১.২০ মিটার, এবং কক্সবাজার জেলার চকরিয়ায় মাতামুহুরী নদীর ওপর মাতামুহুরী সেতু ৩২১ মিটার ও পাশে ৩১.২০ মিটার। অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে নির্মিত এসব সেতু ও কালভার্টের দুইপাশে হালকা যানবাহন চলাচলের জন্য বিশেষ সুবিধা রাখা হয়েছে বলে জানা যায়।

কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে ক্রস বর্ডার রোড নেটওয়ার্ক ইমপ্রুভমেন্ট প্রকল্পের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মো. জাহেদ হোসেন মুঠোফোনে জানান, চন্দনাইশ উপজেলায় শঙ্খ নদীর ওপর সাঙ্গু সেতুর সাতটি পিলারের মধ্যে পাঁচটির নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। পাঁচটি পিলারের ওপর গার্ডার বসানো শেষে স্ল্যাব বসানোর কাজও সম্পন্ন হয়েছে। বরুমতি খালের ওপর মাজার পয়েন্ট সেতুর পিলার নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। পুরোদমে চলছে গার্ডার ও স্ল্যাব বসানো এপ্রোচ সড়কের কাজ।

অপরদিকে পটিয়া উপজেলার ইন্দ্রপুল সেতুর তিন লেনের পাইলিংয়ের কাজশেষে এখন চলছে পিলার নির্মাণের কাজ। কক্সবাজার জেলার চকরিয়া মাতামুহুরী নদীর ওপর মাতামুহুরী সেতুর আটটি পিলারের মধ্যে সাতটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। এখন চলছে গার্ডার ও স্ল্যাব বসানোর কাজ। আগামী সপ্তাহে বাকি থাকা পিলারটির নির্মাণকাজও সম্পন্ন হবে। আগামী জুন মাসের মধ্যে শঙ্খ, মাতামুহুরী ও ইন্দ্রপুল সেতুর তিন লাইন যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। পরে বিদ্যমান পুরনো সেতুগুলো ভেঙে বাকি তিন লাইনের কাজ শেষে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে তিন সেতুর ছয় লাইন দিয়েই চলাচল করবে যানবাহন। অপরদিকে উপজেলার মাজার পয়েন্ট সেতুর ছয় লাইনের কাজ একেবারে সম্পন্ন করে আগামী জুলাই মাসের মধ্যে যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার আশা করছি। পূর্বকোণ

পাঠকের মতামত: