কক্সবাজার, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

চেয়ারম্যান প্রার্থী শফিকের প্রচেষ্টায় মোর্শেদ হত্যা মামলার প্রধান আসামী গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক::

কক্সবাজার সদরের খরুলিয়ায় কথাকাটাকাটির জেরে ছুরিকাঘাতে খুন হওয়া মোর্শেদ কামাল হত্যা মামলার প্রধান আসামি কফিল উদ্দিন (১৫)কে ধরে পুলিশে সোপর্দ করেছে ঝিলংজার চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী শফিকুল ইসলাম।

মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) ভোররাতে গোপন সংবাদ পেয়ে সাথে সাথে প্লানিং করে চট্রগ্রাম থেকে ফাঁদ পেতে এনে রামুর জোয়ারিয়ানালা সংলগ্ন এলাকা থেকে আসামী কফিল উদ্দিনকে
ধরে ফেলে শফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে
স্থানীয় যুবকরা।

কফিল উদ্দিন ঝিলংজার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের খরুলিয়ার কোনারপাড়া গ্রামের গরু ব্যবসায়ী ফরিদুল আলমের পুত্র।

এবিষয়ে ঝিলংজা ইউনিয়ন পরিষদের সম্ভাব্য চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী শফিকুল ইসলাম বলেন, খরুলিয়ার আলোচিত মোর্শেদ কামাল হত্যা মামলার প্রধান আসামী কফিল উদ্দিন গভীর রাতে চট্রগ্রাম থেকে ট্রাক যোগে কক্সবাজার আসার এমন খবর নিশ্চিত হওয়ার পর, উক্ত ট্রাকের নম্বর ও একজন পরিচিত ড্রাইভার আজিমসহ খুনি কফিল উদ্দিনকে ধরার জন্য রওনা হন। তার পূর্বে কক্সবাজার সদর থানা পুলিশকে অবহিত করলে তারা জানান,ওই এলাকাটা আমাদের থানার এলাকার বাইরে, থানার আওতাধীন হলে আমরা অভিযান পরিচালনা করবো।

এরপর আমিসহ স্থানীয় কয়েকজন যুবক মিলে আসামির অবস্থান নিশ্চিত করে রওনা দিই তাকে ধরতে।আমাদের টিম সাতকানিয়া যাওয়ার পর তার অবস্থান সম্পূর্ণ নিশ্চিত করি এবং উক্ত ট্রাকের পিছু পিছু কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে আমরাও পিছু পিছু রওনা হই।

দীর্ঘ ৬ ঘন্টা পর আসামি কফিল উদ্দিন রামুর জোয়ারিয়ানালা সংলগ্ন এলাকায় পৌঁছলে আমাদের অবস্থান টের পেয়ে ট্রাক থেকে নেমে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাকে ধরে ফেলি পরবর্তী আসামি কফিল উদ্দিনকে নিয়ে খুরুলিয়ায় চলে আসি।

বিষয়টি তৎক্ষণাৎ কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলামকে ফোনে বিষয়টি অবহিত করলে এএসআই ফরিদ এর নেতৃত্বে সদর থানার পুলিশের একটি টিম খরুলিয়া আসলে তাদের হাতে মোরশেদ হত্যা মামলার প্রধান আসামি কফিল উদ্দিনকে সোপর্দ করি।

তিনি আরো জানান, এভাবে মোরশেদ কামাল হত্যার প্রধান আসামিকে আটক করার মত সকল অপরাধ কর্মকাণ্ডে ইনশাআল্লাহ আমার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে, অপরাধমুক্ত মাদকমুক্ত ও সন্ত্রাসমুক্ত ঝিলংজা ইউনিয়নকে সাজাতে এবং ঝিলংজার মানুষের অন্তরে স্বস্তি ফিরিয়ে আনার লক্ষে আমার যতটুকু সম্ভব আমি চেষ্টা চালিয়ে যাব, মাদক সেবনকারী, মাদক কারবারি সহ কোন অপরাধীদের সাথে আমার কোন আপোষ নাই। অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়তে ঝিলংজা ইউনিয়ন বাসীসহ সকলের দোয়া প্রত্যাশা করেন তিনি।

এদিকে হত্যা মামলার প্রধান আসামি কফিল উদ্দিনকে শফিকের প্রচেষ্টায় গ্রেফতার করলেও বিষয়টি অন্য একটি পক্ষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন স্থানে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

এবিষয়ে আসামির প্রথম সন্ধানদাতা নুরুল আজিম নামে এক যুবক বলেন, আমি প্রথমে আমার এক পরিচিত ট্রাক ড্রাইভারে মাধ্যমে খবর পাওয়ার সাথে সাথে বিষয়টি আমাদের এলাকায় চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী শফিকুল ইসলাম ভাইকে অবগত করি। তার সাথে আমরাসহ আরো কয়েকজন মিলে তাকে ধরার উদ্দেশ্য রওনা দিই।কিন্তু এখানে একটি চক্র তারা নিজেদের ক্রেডিট
নেওয়ার জন্য কফিল উদ্দিনকে তাদের মধ্যমে আটক করেছে বলে সম্পূর্ণ ভিন্ন ভাবে উপস্থাপন করে সংবাদ পরিবেশন করছে যা সত্যি দুঃখজনক।

এসময় তিনি আরো বলেন, আলোচিত এই হত্যা কাণ্ডে জড়িত আসামিকে ধরে দিলে ঝিলংজা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান টিপু সুলতান এর ঘোষণাকৃত পুরুষ্কার বাস্তবায়নের দাবি জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, গত ২৬ জুন বিকেলে কক্সবাজার সদরের খরুলিয়া ঘাটপাড়া এলাকার ছলিমের দোকানের সামনে কফিল উদ্দিন ও মোর্শেদ কামালের মধ্যে ঠাট্টার ছলে কথা কাটাকাটি হয়। এসময় একে অন্যজনকে তিরস্কার করেন। এই সামান্য বিষয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে মোর্শেদ কামালের পেটে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায় কফিল উদ্দীন। এতে মোর্শেদ গুরুতর জখম হন।

দ্রুত তাকে উদ্ধার করে লিংকরোডস্থ মেরিন সিটি হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন।

সেখানে নেয়ার পথে ডুলাহাজারা পর্যন্ত গেলে গাড়িতে মোর্শেদ কামালের মৃত্যু হয়। নিহত মোর্শেদ ঘাটপাড়া এলাকার সৈয়দ আলমের পুত্র।

এ ঘটনায় নিহত মোর্শেদ কামালের মা মোস্তফা বেগম বাদী হয়ে কফিল উদ্দিনকে প্রধানসহ ৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জন কে আসামী করে সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মনির উল গিয়াস বলেন, গ্রেফতারকৃত কফিল ঝিলংজা ইউনিয়নের খরুলিয়ায় মোর্শেদ হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামীকে। তাকে প্রচলিত নিয়মে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হবে।

এব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম জানান, খরুলিয়া শফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির ফোন পেয়ে তাতক্ষণিক পুলিশের টিম ঘটনাস্থল গিয়ে ঐ আসামিকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে।

পাঠকের মতামত: