কক্সবাজার, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

টেকনাফে সাহেদের অন্যরকম প্রতারণা

কোথায় পা রাখেনি রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ করিম! রিকশার ভুয়া লাইসেন্স থেকে করোনার জাল সার্টিফিকেট বিক্রি, বিনিয়োগের নামে প্রতারণা, বছরের পর বছর বাড়িভাড়া না দেওয়া, প্রভাবশালী, ভিআইপি, মন্ত্রী-এমপিদের সঙ্গে পরিচয় এবং ওঠাবসার সুযোগে ব্যাপক তদবির বাণিজ্য কিংবা টকশো- সবখানেই তার বীরের মতো প্রতাপ। বিভিন্ন স্থানে দিত সুবিধাজনক পরিচয়। কখনো নিজেকে আমলা, সামরিক কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতা, মন্ত্রী-নেতাদের ঘনিষ্ঠ বলে জানাত। ছবি তোলাও ছিল তার প্রতারণার আরেক ফাঁদ। কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যংয়ের ঝিমংখালী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন ভবনের ছবি তুলেও প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।

জানা যায়, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে নির্মিত হোয়াইক্যংয়ের ঝিমংখালীর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন ভবনের কাজ পায় রাজধানীর ওয়াহিদ কনস্ট্রাকশন নামে একটি প্রতিষ্ঠান। অথচ দুবছর আগে ২০১৮ সালের এক শুক্রবার হোয়াইক্যংয়ে এসে সাহেদ জানায়, নির্মাণাধীন ভবনের ঠিকাদার গ্রুপের মালিক সে। ওইদিন জুমার নামাজ শেষে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নুর আহমেদ আনোয়ারী, ইউপি সদস্য শাহ আলম মেম্বার ও স্থানীয় প্রশাসনসহ গণ্যমান্যদের নিয়ে বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করে। এর পর সাহেদ উপস্থিত সবার সঙ্গে বেশকিছু ছবি তুলে চলে যায়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য শাহ আলম মেম্বার বলেন, ‘দুবছর আগে ঝিমংখালী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সাহেদ নামে ওই ব্যক্তির সঙ্গে দেখা হয়। তখন সবার সামনেই তিনি ওই কাজের ঠিকাদার বলে দাবি করেন। এর পর বেশকিছু ছবি তুলে চলে যান।

ঝিমংখালী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাকারিয়া মাহমুদ বলেন, ‘বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে স্কুলের নির্মাণাধীন ভবনের কাজ পায় ওয়াহিদ কনস্ট্রাকশন। যে ভবন নির্মাণের কাজ এখনো চলমান। তবে এর মধ্যে দুবছর আগে যেদিন সাহেদ নামের ওই ব্যক্তিটি ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের নামে ছবি তুলে সেদিন আমি ছিলাম না। পাশাপাশি ওয়াহিদ কনস্ট্রাকশনের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীও ছিলেন না। তবে সে (সাহেদ) কেন হুট করে এসে নিজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বলে সবার সামনে ছবি তুলে চলে গেল, তা আমি জানি না।

এদিকে ১১ বছর আগে ২০০৯ সালে সাহেদের মালিকানাধীন নিসর্গ নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কক্সবাজারে চাকরির ফাঁদে ফেলে স্থানীয়দের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে।

পাঠকের মতামত: