কক্সবাজার, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

টেকনাফ: পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে লক্ষাধিক রোহিঙ্গা

ভারী বর্ষণে উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রিত ১২ লক্ষাধিক রোহিঙ্গার মধ্যে এক লক্ষাধিক রোহিঙ্গা পাহাড় ধসের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে। নতুন পুরনো মিলে উখিয়া টেকনাফে আশ্রিত ১২ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা ছয় হাজার একরের বেশি বনভূমি দখল করে ঝুপড়ি বানিয়েছে। এই বিশাল সংখ্যক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর আবাসস্থল বানাতে গিয়ে উঁচু-নিচু পাহাড়-টিলা কেটে সমতল করা হয়েছে। কিছু রোহিঙ্গা রয়েছে পাহাড়ের চূড়ায়। এসব পাহাড় ও বৃক্ষ কেটে সাবাড় করার কারণে ক্যাম্প অভ্যন্তরে কিছু সংখ্যক স্থানে ভারী বর্ষণের কারণে আশঙ্কা রয়েছে পাহাড় ধসের। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্ষায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।

কুতুপালং ক্যাম্পের একাধিক রোহিঙ্গা জানান, অল্প বৃষ্টিতেই আমাদের অবস্থা কাহিল হয়ে উঠেছে। উঁচু পাহাড়ে যারা আছে তাদের আর আমরা যারা নিচে আছি সবাই পাহাড় ধসের আতঙ্কে রয়েছি। উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, উচ্চ পাহাড়ের নিচু ঢালুতে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের সরে যাবার জন্য মাইকিং করা হয়েছে। কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ প্রত্যাবাসন কমিশনার শাহ রেজুওয়ান হায়াত বলেন, রোহিঙ্গাদের খালি জায়গায় নিয়ে যাওয়া হবে। কিন্তু আগেভাগে যারা পাহাড়ের উঁচু জায়গায় বসবাস করছে তাদের সচেতন থাকতে বলা হয়েছে। ইতিমধ্যে অনেক ঘর সংস্কার করা হয়েছে।

যে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় ক্যাম্পের অভ্যন্তরে থাকা মসজিদ, সাইক্লোন শেল্টার, আশপাশের স্কুলের ভবন প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, পাহাড়ের পাদদেশে বা চূড়ায় ঝুঁকিপূর্ণভাবে যারা বাস করছে তাদের সরিয়ে নিতে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলো তালিকা তৈরির কাজ করছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্প বালুখালী, হাকিমপাড়া, থাইংখালী, ময়নারঘোনা, চাকমারখোল, জামতলী, উনছিপ্রাং, মুছনী, শালবাগানে অতি ঝুঁকিপূর্ণ জায়গা রয়েছে। পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম. গফুর উদ্দিন চৌধুরী জানান, উখিয়া টেকনাফের ক্যাম্পগুলোর মধ্যে ২৬টি ক্যাম্প অতি ঝুঁকিপূর্ণ। যে কোন মূহুর্তে পাহাড় ধসে রোহিঙ্গাদের প্রাণহানি ঘটতে পারে। তিনি জানান, শনিবার বালুখালী ক্যাম্পের রহিম উল্লাহ (৪০) ও শাপলাপুর ক্যাম্পের নুর ফাতেমা (৩২) নামে দুই রোহিঙ্গা নারী পুরুষ পাহাড় ধসে মারা গেছে।

পাঠকের মতামত: