কক্সবাজার, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

ঢাকা-কক্সবাজার ট্রেন চলবে অক্টোবরে

ঢাকা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত যাত্রীবাহী ট্রেন যাবে এ বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে। চলতি বছরের জুন নাগাদ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ১০২ কিলোমিটার সিঙ্গেল লাইন ডুয়েল গেজ প্রকল্পের নির্মাণকাজ প্রায় শেষ হয়ে আসবে। আশা করা যায় এ বছরের জুনেই চট্টগ্রামের দোহাজারি থেকে সৈকত নগরী কক্সবাজার পর্যন্ত লাইনটি ট্রেন চালানোর উপযুক্ত হয়ে উঠবে। বর্তমানে এই মেগা প্রকল্পের এই অংশের কাজ প্রায় ৮০ শতাংশই শেষ। রেললাইনও এখন প্রায় ৭০ কিলোমিটারের বেশি দৃশ্যমান। এসব তথ্য ইত্তেফাককে জানিয়েছেন এই মেগা প্রকল্পের পরিচালক মফিজুর রহমান।

এদিকে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ কালুরঘাট সেতু সংস্কারসহ সেখানে আরও একটি সেতু নির্মাণের বিষয়টি স্টাডি করতে ৮ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের চিফ ইঞ্জিনিয়ার মো. আবু জাফর মিঞা ইত্তেফাককে বলেন, নতুন ব্রিজ নির্মাণ ও পুরোনো ব্রিজের কোথায় কোথায় সংস্কার প্রয়োজন তা স্টাডি করার দায়িত্ব বুয়েটের একটি বিশেষজ্ঞ দলকে দেওয়া হয়েছে। তারা তাদের কাজও শুরু করে দিয়েছে।

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সিঙ্গেল লাইন ডুয়েল গেজ রেলসংযোগ স্থাপন মেগা প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মফিজুর রহমান ইত্তেফাককে আরও বলেন, চলতি বছরের জুনেই কক্সবাজারে প্রধান রেল স্টেশনের নির্মাণকাজ শেষ হতে যাচ্ছে। দোহাজারি থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত বাকি আটটি রেল স্টেশনের নির্মাণকাজও শেষ হয়ে গেছে। ঐ আটটি স্টেশন স্থাপিত হয়েছে সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চকরিয়া, ডুলাহাজারা, ঈদগাও, রামু, কক্সবাজার সদর ও উখিয়া। তিনি বলেন, কক্সবাজার ঝিলংজা ইউনিয়নের হাজিপাড়া এলাকায় ২৯ একর জমির ওপর ঝিনুক আকৃতির নান্দনিক সৌন্দর্যমণ্ডিত প্রধান রেল স্টেশনটির নির্মাণকাজ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। ছয় তলাবিশিষ্ট স্টেশন ভবনটির আয়তন ১ লাখ ৮২ হাজার বর্গফুট। প্রতিটি ৬৫০ মিটার দীর্ঘ এবং ১২ মিটার প্রশস্ত মোট তিনটি প্ল্যাটফরমও থাকছে স্টেশনটিতে। তিনি জানান, প্রকল্পের ব্যয় ১৮ হাজার কোটি টাকাই থাকছে। ২০১৮ সালে শুরু হওয়া দোহাজারী-রামু-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পটি ২০২২ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা ছিল। চলতি বছর সিংহভাগ শেষ হচ্ছে। বাকি কিছু কাজের জন্য ২০২৪ সালের জুন পর্যন্তও সময় বাড়িয়ে নেওয়া হয়েছে।

প্রকল্পের অন্য একটি সূত্র জানায়, কক্সবাজার প্রধান রেল স্টেশনের পাশেই রেলওয়ের আবাসিক এলাকা গড়ে তোলা হয়েছে। সেখানে আটটি ভবনের নির্মাণকাজ সমাপ্তপ্রায়। স্টেশনটিতে আবাসিক হোটেল, ক্যান্টিন, লকার, গাড়ি পার্কিং ইত্যাদির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। পর্যটকরা স্টেশনের লকারে লাগেজ রেখে সারা দিন সমুদ্রসৈকতে এবং অন্যান্য দর্শনীয় স্থানে বেড়াতে পারবেন। এই স্টেশন দিয়ে দৈনিক ৪৬ হাজার মানুষ আসা-যাওয়া করতে পারবে। এই প্রকল্পের রেললাইন নির্মাণে সাঙ্গু, মাতামুহুরী ও বাঁকখালী নদীর ওপর নির্মাণ করা হয়েছে তিনটি বড় রেল সেতু। এই রেলপথে নির্মাণ করা হচ্ছে ৪৩টি ছোট সেতু, ২০১টি কালভার্ট এবং ১৪৪টি লেভেল ক্রসিং। সাতকানিয়ার কেঁওচিয়া এলাকায় তৈরি হচ্ছে একটি ফ্লাইওভার। রামু ও কক্সবাজার এলাকায় দুটি হাইওয়ে ক্রসিং। হাতি ও অন্যান্য বন্যপ্রাণীর চলাচলে ৫০ মিটারের একটি ওভারপাস ও তিনটি আন্ডারপাস নির্মাণ করা হচ্ছে।

এই প্রকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সরকার অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে জোগান দিচ্ছে ৬ হাজার ৩৪ কোটি টাকা। এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক দিচ্ছে ১২ হাজার কোটি টাকা।

পাঠকের মতামত: