কক্সবাজার, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

তিনদিনের ছুটি, রেকর্ড পর্যটক

আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস এবং সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে তিনদিনের ছুটিকে কাজে লাগিয়ে কক্সবাজার বেড়াতে এসেছেন কয়েক লাখ পর্যটক। যার ফলে এবার কক্সবাজারে সমাগম হয়েছে রেকর্ড সংখ্যক পর্যটক। এ কারণে ৪৫০টির বেশি হোটেল, মোটেল ও কটেজের সব কক্ষই অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে। তাই হোটেল-মোটেলগুলোতে ঠাঁই মিলছে না পর্যটকদের।

গতকাল (শুক্রবার) কক্সবাজারে সমবেত হয় প্রায় দুই লাখ পর্যটক। আজ (শনিবার) এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে সংশ্লিষ্টদের ধারণা। গত সপ্তাহখানেক আগে থেকে আগাম বুকিং হয়ে আছে সাড়ে ৪ শতাধিক হোটেল-মোটেল-রিসোর্ট। এসব হোটেল-রিসোর্টে দেড় লাখ মানুষের রাত যাপনের সুযোগ থাকলেও বাকি পর্যটকরা কোথায় রাত্রি যাপন করবেন তা নিয়ে উৎকন্ঠা দেখা দিয়েছে। তিল ধারণের যেন ঠাঁই নেই কক্সবাজারে। পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সর্তক অবস্থায় দায়িত্বপালন করছে ট্যুরিস্ট ও জেলা পুলিশ। মোতায়েন রাখা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশও। যেকোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা রোধে সিসিটিভির আওতায় আনা হয়েছে পর্যটন স্পটগুলো। গোসল করাকালীন বিপদাপন্ন পর্যটকদের রক্ষার্থে সর্তক অবস্থায় রয়েছেন লাইফগার্ড কর্মীরা। পাশাপাশি করোনার সংক্রমণ রোধে পরামর্শ দিয়ে মাইকিং করছে জেলা প্রশাসনের বিচ কর্মীরা।

গাজীপুরের কালিগঞ্জ থেকে আসা পর্যটক জসিম উদ্দিন (৩৭) জানান, করোনা পরিস্থিতির দীর্ঘদিন কোথাও যাওয়া হয়নি। বাসায় থাকতে গিয়ে  পরিবারের সবাই বোরিং হয়ে গেছে। ভাষা দিবসের ছুটিসহ টানা বন্ধ পেয়ে বাড়ির সবাইকে নিয়ে কক্সবাজার এসেছি। এত লোকসমাগম হবে কল্পনাও করতে পারিনি।  হোটেল বিচ হলিডের মহাব্যবস্থাপক হাফিজুর রহমান লাভলু বলেন, ফাগুনের শুরুতে টানা তিনদিনের ছুটি পেয়ে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ভ্রমণ পিপাসী কক্সবাজারে এসেছে। এবারও টানা তিনদিন ছুুুটি পড়ায় সাড়ে ৪ শতাধিক হোটেল-মোটেল ও রিসোর্ট আগাম বুকিং হয়েছে।

কলাতলীর হোটেল সি-নাইটের ব্যবস্থাপক শফিক ফরাজী বলেন, হোটেল-মোটেলে যে পরিমাণ ধারণ ক্ষমতা তার চেয়েও লোকসমাগম বেশি বলে মনে হচ্ছে এবার। রুম বুকিং করে যারা এসেছেন, তারা ছাড়া বাকিরা ভোগান্তিতে পড়তে পারেন বলে মনে হচ্ছে।  কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার সৈয়দ মুরাদ ইসলাম বলেন, কক্সবাজারে প্রচুর লোকজন এসেছে। আমরা করোনার দ্বিতীয় ঢেউ রোধে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছি। যেকোনো ধরনের হয়রানি রোধে জেলা প্রশাসনের দুটি ভ্রাম্যমাণ আদালত হোটেল-মোটেল জোনে টহলে রয়েছে।

তারকা হোটেল ওশান প্যারাডাইসের পরিচালক আবদুল কাদের মিশু বলেন, ২০২০ সালটা সবকিছুকে স্তিমিত করে দিয়েছে। এবার ভাষা দিসব উপলক্ষ করে পর্যটক উপস্থিতি আমাদের আশান্বিত করছে।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের পুলিশ সুপার মো. জিল্লুর রহমান বলেন, ট্যুরিস্ট পুলিশের বিশেষ রেসকিউ টিম, ইভটিজিং কন্ট্রোল টিম, ড্রিংকিং জোন, দ্রুত চিকিৎসাসহ নানা পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে পর্যটকদের নিরাপত্তায়।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, কক্সবাজারে আসা পর্যটকদের সেবা দিতে প্রশাসন সার্বক্ষণিক প্রস্তুত থাকে। সৈকতের লাবনী, সুগন্ধা, কলাতলীসহ ১১টি পয়েন্টে স্থাপন করা হয়েছে তথ্য কেন্দ্র। পর্যটক হয়রানি বন্ধে মাঠে রয়েছে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে একাধিক ভ্রাম্যমাণ আদালত।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তায় সবসময় সর্তকাবস্থায় রয়েছে পুলিশ। পর্যটকদের অনাকাঙ্খিত হয়রানি রোধে, পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে এবং পর্যটক বেশেও পুলিশের নারী সদস্য সৈকতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।

পাঠকের মতামত: