কক্সবাজার, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

দুই বাংলাদেশিকে অপহরণ করে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের

টেকনাফ প্রতিনিধি::

কক্সবাজারের টেকনাফে বাড়ি থেকে দুই বাংলাদেশিকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা। একইসঙ্গে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছে তারা।

শুক্রবার (২৯ জুলাই) রাত ১১টার দিকে এ অপহরণের ঘটনা ঘটে। শনিবার (৩০ জুলাই) রাত ১১টা পর্যন্ত ওই দুই বাংলাদেশি যুবককের সন্ধান পাওয়া যায়নি। তবে শনিবার সন্ধ্যায় মুক্তিপণ দাবি করেছে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা।

অপহৃতরা হলেন- টেকনাফ উপজেলার শামলাপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নোয়াহালী পাড়ার মো. ইলিয়াসের ছেলে মোহাম্মদ মুমিনুল (২৫) একই পাড়ার মোহাম্মদ ইসমাইলের ছেলে মোহাম্মদ নূর (২০)।

মুমিনুলের বাবা ইলিয়াস বলেন, শুক্রবার রাত ১১টার দিকে আমার বাড়িতে কয়েকজন ব্যক্তি এসে দরজা খুলতে বলে। দরজা খুললে কথা আছে বলে তারা আমার ছেলেকে ডেকে পাহাড়ের দিকে নিয়ে যায়। এরপর বিষয়টি প্রতিবেশীদের জানাই। তখন প্রতিবেশী ইসমাইল জানান তার ছেলেও নিয়ে গেছে তারা।

তিনি বলেন, ঘটনার পর থেকে ছেলের সন্ধান পাইনি। শনিবার সন্ধ্যায় আমার মোবাইলে কল দিয়ে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী আলিয়াকিন গ্রুপ পরিচয় দিয়ে ১০ লাখ টাকা দাবি করে। টাকা দিলে ছেলেকে জীবিত ফিরিয়ে দেবে বলে জানায় রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা। যদি পুলিশ কিংবা র‌্যাবকে জানাই তাহলে ছেলেকে মেরে ফেলবে বলে হুমকি দিয়েছে তারা।

মোহাম্মদ নূরের বাবা ইসমাইল জানিয়েছেন, শুক্রবার রাত ১১টার দিকে তার ছেলেকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা। এরপর রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী আলিয়াকিন গ্রুপ পরিচয় দিয়ে তার কাছেও ছেলের মুক্তির জন্য টাকা দাবি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শামলাপুর পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা দুই বাংলাদেশিকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করেছে। পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় সেখানে অভিযান চালানো কঠিন। তবু তাদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।’

শামলাপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য (মেম্বার) ইলিয়াস হোসেন বলেন, শুক্রবার রাত ১১টার দিকে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী আলিয়াকিন গ্রুপের সদস্যরা আমার ওয়ার্ডের দুই বাসিন্দাকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে। তাদের এখনও খোঁজ পাইনি।

তিনি বলেন, এর আগেও বিভিন্ন সময়ে আমার ওয়ার্ডের কয়েকজনকে অপহরণ করেছিল রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী আলিয়াকিন গ্রুপের সদস্যরা। র‌্যাব, পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালালে শামলাপুর নোয়াহালী বনের মাঝখানে অবস্থান নেয় তারা। মাঝেমধ্যেই ঘটছে অপহরণের ঘটনা। কোনোভাবেই তাদের কার্যক্রম থামানো যাচ্ছে না। বিষয়টি আমি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে একাধিকবার বলেছি। তারপরও প্রতিকার পাচ্ছি না। আমরা খুব আতঙ্কে আছি।

দুই জনকে অপহরণের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে উল্লেখ করে টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, ‘অপহৃতদের উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। একইসঙ্গে অপহরণকারীদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’

পাঠকের মতামত: