কক্সবাজার, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

নিস্তরণ: রফিকুল ইসলাম রাইসুল

‘নিস্তরণ’

মন পুড়েছে মস্তিষ্ক তো পুড়েনি,
এমন ভালোবাসাহীন মনে স্থিরতা বড় নড়বড়ে।
আমার পৃথিবীর আশপাশ জুড়ে যেন আমাকে ঘিরে রেখেছে একটি কালো গুরগুটে অবয়ব।
আমি বাঁচতে চাই,
বাঁচতে চেয়ে এই অন্ধকার ডিঙিয়ে বহুবার পালাতে চেয়েছি।

কিন্তু আমার জরাজীর্ণ দেহের
যে সবলতা, তা অন্ধকার প্রেতাত্মা নিমিষেই কব্জা করে নেয় আমাকে।
তাতেই আমার কি দোষ বলো?
কষ্টরা আমার হৃদপিণ্ড পুড়িয়ে করেছে নষ্ট।

আমি ডালপালাহীন একটি দ্রুম,
যার কোন শাখা প্রশাখা নেই,

পরিপূর্ণ বাঁচার কোন সক্ষমতা নেই।
আমি এক মন্দকপালী, তোমাদের এই মুখর সভা বৈঠকের অব্যক্ত রুপোলি।
আমি ভেবেছিলাম, অপেক্ষার শেষ ট্রেনে তুমি ফিরবে আমার জং ধরা জংশনে।
কিন্তু খামখেয়ালি স্থাবর মস্তিষ্ক তোমাকে ফিরতে দেয়নি।
বরং রুদ্ধদ্বারে তুমি থেকে গেলে!
ফিরলে না বসলে না আমার হৃদপিণ্ডের ইস্টিশনে।

আমি চেয়েছিলাম,
তোমার সাথে নজরুলময় বিদ্রোহী গল্প হউক,
রবি ঠাকুরের শেষের কবিতা’র অমিত লাবণ্য ঘেঁষে ফাল্গুনের আবরণে শুদ্ধতা মিলুক।
আমি চেয়েছিলাম,
রূপসীর কবি জীবনানন্দের সবুজের সযত্নে,প্রেমানলে,কিরণে বরণে আবরণে তোমাকে খুব করে ডাকুক।
হুমায়ুনের হিমু বেশে একটি বিকেলের স্বর্ণালি সমঝোতায় ট্যানিক এসিডের দ্বারস্থ হয়ে আড্ডা হউক।

আমি প্রীতির ক্ষুদিরাম হয়ে এই কল্পনাবিলাসী তোমাকে,
মানুষকে বদলাতে চেয়েছিলাম।
তবে নিয়তির অদ্ভুত সীমারেখায় বিষাদের ভেজা মাদুরে তুমি আমায় ডুবালে।

আমি এখন খুব একটা মানুষ নই,
চোয়াল-ভাঙা জিব-কাটা শব্দহীন কবি,
পৃথিবী ভেদ করে নিরুপায়ে বসবাস ধরা বেখাপ্পা নির্বোধ রবি।

আমি চোখ মেলে দেখেছি,
আমার এই তির্যক রোদে পুড়া কঠিনচিত্তে কেউ অন্তর্দাহের সুরে দুঃখবোধ করেছে কিনা?
সন্তপ্তে নয়,তাচ্ছিল্যের ছলে
কেউ একটি সাড়াশব্দও করেনি।
অবহেলার পুরনো আঁধারের দেয়াল ডিঙিয়ে কেউ আসেনি।

বরং অবজ্ঞার চৌকাঠে আমাকে আটকিয়ে বন্দি করেছে উপেক্ষার আসরে।
আধেক সুকণ্ঠে চিৎকার দিয়ে বলি,
এই জন্মের মুক্তি মিলুক
তোমাদের অন্তর্জগৎ জাঁকালো শহরে।

লেখক:
কবি রফিকুল ইসলাম রাইসুল
ছাত্র, চট্টগ্রাম সিটি কলেজ
মোবাইল নং: ০১৮৭২-৯০৬১৯৮
ই-মেইল: raisulbd98@gmail

পাঠকের মতামত: