কক্সবাজার, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

পাহাড়ে আজ থেকে পর্যটন স্পট খুলছে

দীর্ঘ চার মাস ২০ দিন পর রাঙামাটির সব পর্যটন স্পটগুলো খুলছে আজ (বৃহস্পতিবার)। এতে করে পর্যটন ব্যবসায় নানাভাবে জড়িত সংশ্লিষ্টরা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।

এশিয়ার বৃহত্তম কৃত্রিম কাপ্তাই হ্রদ, নয়নাভিরাম রাঙামাটি পর্যটন ঝুলন্ত সেতু, সাজেক পর্যটন কেন্দ্র, ডিভাইন লেক আইল্যান্ড, পুলিশ পলওয়েল পার্ক, রাঙামাটি শিশু পার্ক, সুবলং ঝর্ণা, পেদা টিং টিং, টুক টুক ইকো ভিলেজ, বন বিহার, রাজবাড়ি, আরণ্যক, বড়গাঙসহ বিভিন্ন স্পটগুলো এখন আবার পর্যটকদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠবে।

করোনা মহামারির কারণে সরকারের নির্দেশনায় গত ৩১ মার্চ থেকে রাঙামাটি জেলা প্রশাসক রাঙামাটির সকল পর্যটন স্পট বন্ধ ঘোষণা করেছিলেন।

রাঙামাটির হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট মালিক ও পর্যটন স্পট ব্যবসার সাথে জড়িত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারি নির্দেশনা মেনে মাস্ক পরিধান এবং টুরিস্টরা যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেন সেদিকে লক্ষ্য রেখে তারা ব্যবসা পরিচালনা করবেন।

একসময় সারা বছরই পর্যটকদের পদচারণায় মুখর থাকতো পাহাড়ের বিনোদন স্পটগুলো। করোনার কারণে গত সাড়ে চার মাস ধরে সব বন্ধ থাকায় কোটি কোটি টাকার লোকসান গুনতে হচ্ছে সংশ্লিষ্টদের। কিন্তু এবার পর্যটন স্পটগুলো খুলে যাওয়ায় সংশ্লিষ্টদের মুখে হাসি ফুটেছে।

এরই মধ্যে হোটেল-মোটেল, রেস্তোঁরা, সরকারি-বেসরকারি পর্যটন স্পটগুলোর সাথে জড়িত মানুষদের মধ্যে কর্মচাঞ্চল্য ফিরতে শুরু করেছে। পর্যটকদের বরণে সকল ধরণের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে রাঙামাটির হোটেল-মোটেলগুলো। পর্যটকদের আগমন ঘিরে নিরাপদ ভ্রমণ ও নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ প্রয়োজনীয় সকল প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন পর্যটন ব্যবসা সংশ্লিষ্টরা।

রাঙামাটি পর্যটন নৌঘাট ইজারাদার সমিতির ম্যানেজার মো. রমজান আলী বলেন, গত সাড়ে ৪ মাসে আমাদের লাখ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। আজ (বৃহস্পতিবার) থেকে রাঙামাটির পর্যটন স্পটগুলো খুলে দেওয়ায় আমরা অত্যন্ত খুশি। কারণ আমাদের এখানকার টুরিস্ট বোটগুলোর সঙ্গে মালিক শ্রমিক মিলে প্রায় দেড়শ মানুষের রুটি রুজির স্বার্থ জড়িয়ে আছে।

তিনি বলেন, পর্যটন স্পট খুলে দেওয়ায় টুরিস্টরা নিয়মিত রাঙামাটি ভ্রমণ করলে আমাদের ব্যবসা বাণিজ্য ভালো হবে বলে আশা করছি।

রাঙামাটি আবাসিক হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মঈন উদ্দিন সেলিম বলেন, রাঙামাটিতে প্রায় ৫৫টি আবাসিক হোটেল-মোটেল রয়েছে। বিগত চার মাস ২০ দিন পর সরকারি নির্দেশনা অনুয়ায়ী রাঙামাটির সব পর্যটন কেন্দ্রগুলো খুলছে। সে অনুয়ায়ী আমরা হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ীরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যবসা পরিচালনা করতে সকল মোটেল মালিকদের অনুরোধ জানিয়েছি।

মঈন উদ্দিন সেলিম বলেন, বিগত চার মাস করোনার কারণে ব্যবসা বন্ধ থাকায় আমরা প্রায় ৬ কোটি টাকার মতো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। বিগত দেড় বছরে আমাদের প্রায় ১০ কোটি টাকার লোকসান গুনতে হচ্ছে। এত টাকার ক্ষতি কিভাবে কাটিয়ে উঠবো সেটা নিয়ে চিন্তায় আছি।

তিনি বলেন, সরকারি-বেসরকারিভাবে লকডাউনে অনেকে বিভিন্ন আর্থিক প্রণোদনা পেলেও এখানকার হোটেল-মোটেল এর কোন মালিক-শ্রমিক সরকারী কোন প্রণোদনা পায়নি।

রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক সৃজন বিকাশ বড়ুয়া বলেন, চার মাস পর রাঙামাটি পর্যটন স্পট খুলছে। আমরা এর মধ্যে সব প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে পর্যটকদের সেবা দিতে আমরা প্রস্তুত আছি।

তিনি বলেন, করোনায় পর্যটন কমপ্লেক্স বন্ধ থাকার ফলে বিগত চার মাসে রাঙামাটি পর্যটনের প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ টাকার মতো আর্থিকভাবে ক্ষতি হয়েছে। আমরা পর্যটন কমপ্লেক্সের আয় থেকে সরকারকে রাজস্ব প্রদান করে থাকি কিন্তু পর্যটন বন্ধ থাকায় রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হয়নি।

রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) থেকে সব পর্যটন স্পট খুলে দেওয়া হচ্ছে। যেসব পর্যটক রাঙামাটি পর্যটন কেন্দ্রগুলো ঘুরতে যাবেন তারা অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন। এটা নিশ্চিত করতে সংশ্লিস্ট সকল পর্যটন কেন্দ্রের কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে।

পাঠকের মতামত: