কক্সবাজার, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪

‘প্রথম ধাপে ভাসানচরে যেতে চায় ৩শ’ রোহিঙ্গা পরিবার’

কক্সবাজারের ঘিঞ্জি শরণার্থী শিবিরগুলো থেকে ‘৩০০ রোহিঙ্গা পরিবার’ স্বেচ্ছায় ভাসানচরে যেতে ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। এসব পরিবারের জনসংখ্যা হাজারখানেক। এসব পরিবারকে সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে দ্রুতই সেখানে নিয়ে যাওয়া হতে পারে। শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয়ের একটি সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে। তবে এ বিষয়ে সরকারের কোনও কর্মকর্তা আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও তথ্য দিতে রাজি হননি। বিভিন্ন রোহিঙ্গা শিবিরে খোঁজ নিয়েও এমন তথ্যের সত্যতা মিলেছে। তবে শেষ সময়ে এই সংখ্যার হেরফেরও হতে পারে।

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অব্যাহত হামলা, নিপীড়ন ও হত্যার কারণে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয় সাড়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা। এছাড়াও এর আগে এসে আশ্রয় নিয়েছিল বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা। বর্তমানে তাদের সংখ্যা কমপক্ষে ১১ লাখ। বাংলাদেশ সরকার জাতিসংঘ ও অন্যান্য দেশের সহায়তায় কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে ক্যাম্প নির্মাণ করে তাদের আশ্রয় দিলেও তাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের প্রতি বরাবরই দাবি জানিয়ে আসছে। এ ব্যাপারে জোরালো আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। এরপরও আশ্রয় দেওয়ায় তাদের মানবিক নানা সুযোগ সুবিধার ব্যাপারও সরকারকে ভাবাচ্ছে। তাই এ পরিস্থিতির মধ্যেই রোহিঙ্গাদের উখিয়া ও টেকনাফের ঘিঞ্জি ক্যাম্পগুলো থেকে সরিয়ে আরও নিরাপদে রাখতে নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ ভাসানচরে নিজস্ব অর্থায়নে বিপুল ব্যয়ে আশ্রয় ক্যাম্প নির্মাণ করে সেখানে পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ভাসানচরের আশ্রয় ক্যাম্পে কমপক্ষে এক লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করতে পারবে।

জানা গেছে, সম্প্রতি রোহিঙ্গা নেতাদের ভাসানচরে নিয়ে গিয়ে দ্বীপটি এবং সেখানে নির্মিত অবকাঠামো তাদের ঘুরিয়ে দেখানো হয়। এরপর এসব নেতার অনেকে নানা ধরনের মত প্রকাশ করলেও ঘিঞ্জি বস্তিতে কষ্টে দিনযাপন করা রোহিঙ্গাদের অনেকেই ভাসানচরের আশ্রয় গ্রহণের ব্যাপারে ভেতরে ভেতরে আগ্রহ দেখাচ্ছেন এবং নিজেদের মধ্যে আলোচনা চালাচ্ছেন। বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গা নেতাও ভাসানচরে যাওয়ার ব্যাপারে তাদের লোকজনকে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন। এরপর অন্তত ৩০০ রোহিঙ্গা পরিবার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয়ে ধাপে ধাপে এসে ভাসানচরে যাওয়ার ব্যাপারে নিজেদের আগ্রহের কথা জানান। এরপরই তাদের সেখানে পাঠানোর বিষয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ অব্যাহত রেখেছে সরকার। একটি সূত্র জানায়, রোহিঙ্গাদের এই দলটিকে নিরাপদে ভাসানচরে পাঠাতে পারলে আরও অনেক পরিবার সেখানে যাওয়ার ব্যাপারে প্রকাশ্যে আগ্রহ প্রকাশ করবে বলে সরকার আশাবাদী।
ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের বসবাসের জন্য নির্মিত ঘর।

তবে ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের এই দলটিই প্রথম আশ্রয়ের জন্য যাচ্ছে না। এর আগে গত মে মাসে অবৈধভাবে সমুদ্রপথে মালয়েশিয়া পৌঁছানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে দুই দফায় নারী-শিশুসহ মোট ৩০৬ জন রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ফিরে আসেন। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সঙ্গনিরোধে রাখার কথা বলে সরকার তাদেরকে ভাসানচরে নিয়ে রেখেছে।

এদিকে, নতুন রোহিঙ্গা পরিবারগুলোকে ভাসানচরে পাঠাতে মঙ্গলবার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয়ের সরকারি ওয়েবসাইটে ভাসানচরের জন্য ফুড ও নন ফুড আইটেম চাহিদাপত্রের নমুনা সংযোজিত হয়েছে। এরইমধ্যে বিভিন্ন এনজিও ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের পর সম্ভাব্য সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রকল্প (ফুড ও নন ফুড) জমা দেওয়ার কথা সরকারকে জানিয়েছে।

এদিকে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থাগুলোর আপত্তির কারণে এখন পর্যন্ত কক্সবাজার থেকে সেখানে কোনো রোহিঙ্গা স্থানান্তর হয়নি। তবে কক্সবাজার থেকে ভাসানচরে যাবার জন্য প্রথম ধাপে প্রায় তিনশ রোহিঙ্গা পরিবারের হাজারখানেক মানুষ রাজি হয়েছে বলে জানিয়েছেন

সরকারের কর্মকর্তারা নাম প্রকাশ না করে জানিয়েছেন, টেকনাফ ও উখিয়ার ঘিঞ্জি জীবনযাপনের মধ্যে তাদের জন্য নির্মিত ভাসানচরে আবাসন প্রকল্প দেখে মুগ্ধ হয়ে রোহিঙ্গারা রাজি হচ্ছেন। ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের বসবাসের খুবই উপযোগী পরিবেশের সৃষ্টি করা হয়েছে। সেখানে তাদের স্বাচ্ছন্দ্য জীবনযাপন এবং জীবিকাসহ দুর্যোগ মোকাবিলায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রয়েছে। কক্সবাজারে বর্তমানে যেভাবে রোহিঙ্গারা মানবেতর জীবনযাপন করছে, তার চেয়ে ভাসানচরে তারা অনেক ভালো থাকবেন এমন দাবিও করেছেন সর

ভাসানচরে যেতে রাজি হয়েছে এমন পরিবারগুলোর একটি তালিকা পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন বাংলাদেশ শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই কর্মকর্তা বলেন, ‘ভাসানচর, রোহিঙ্গাদের কাছে যেটি ঠেঙ্গার চর নামে পরিচিত, ওই দ্বীপে যেতে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির থেকে এখন বেশ সম্মতি পাওয়া যাচ্ছে, এটি ভালো লক্ষণ। প্রথম দফায় তিনশ’ পরিবারের হাজারখানেক রোহিঙ্গাকে সেখানে নিয়ে যাওয়া হতে পারে। তবে এরজন্য দিনক্ষণ এখনও চূড়ান্ত হয়নি।

সর্বশেষ চলতি মাসের গত ১৬ নভেম্বর ২২টি এনজিওর কর্মকর্তাদের নিয়ে ৩২ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ভাসানচর ঘুরে এসে জানিয়েছিলেন, ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের বসবাসের খুবই উপযোগী পরিবেশের সৃষ্টি করা হয়েছে। সেখানে তাদের স্বাচ্ছন্দ্য জীবনযাপন এবং জীবিকাসহ দুর্যোগ মোকাবিলায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রয়েছে। কক্সবাজারে বর্তমানে যেভাবে রোহিঙ্গারা মানবেতর জীবনযাপন করছে, তার চেয়ে অনেক ভালো থাকবে ভাসানচরে।

সরকার কাউকে জোর করে ভাসানচর পাঠাবে না উল্লেখ করে অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ সামছু-দৌজা বলেন, ‘বিভিন্ন শরণার্থী শিবির থেকে স্বেচ্ছায় কিছু রোহিঙ্গা পরিবার ভাসানচরে যেতে রাজি হয়েছে। তাদের তালিকা করে আমরা গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছি। তাদের কখন ভাসানচরে হস্তান্তর করা হবে সে ব্যাপারে এখনও দিন ঠিক হয়নি। কিন্তু, কত পরিবার ভাসানচরে যেতে রাজি হয়েছে সেটি এখন নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না।

এদিকে গত ২০ নভেম্বর এক বিবৃতিতে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানায়, জাতিসংঘের মতে ভাসানচর এখনও মানুষের বসবাসের উপযোগী নয়। তবে এই দাবি নাকচ করেছে সরকার। সংস্থাটির এই দাবির জন্য সরকারের চিন্তা পরিবর্তন হবে না বলে গণমাধ্যমে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন। তার মতে, বিষয়টি নিয়ে এমন উদ্বেগের কোনও ভিত্তি নেই।

আরআরআরসি কার্যালয় থেকে জানা গেছে, ‘সরকার রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে পাঠানোর বিষয়টি অন্তত গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। ফলে রোহিঙ্গাদের বসবাস উপযোগী পরিবেশ গড়ে তুলতে সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করেছে। তারই অংশ হিসেবে ভাসানচরে হস্তান্তরের আগে সেখানকার নিরাপত্তা দেখভালের জন্য গত ১৪ নভেম্বর ওই দ্বীপের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দেখতে যান আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক (অ্যাডিশনাল আইজিপি) মোশারফ হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশ, এপিবিএন ও নৌ-পুলিশের মোট ১১ জন প্রতিনিধি দল।

এর আগে গত সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে নোয়াখালীর হাতিয়ার ভাসানচরের আবাসন ব্যবস্থা বসবাসের উপযোগী কি না তা দেখতে উখিয়া-টেকনাফ শিবিরের দুই নারীসহ ৪০ জন রোহিঙ্গা নেতাকে নিয়ে যায় সরকার। তারা ভাসানচরের আবাসন ব্যবস্থা দেখে ‘মুগ্ধ’ হলেও ফিরে এসে জানান, সেখানে বসবাসকারী রোহিঙ্গারা কক্সবাজারে আসার জন্য আকুতি জানিয়েছিলেন তাদের কাছে। এছাড়া গত ১৪ অক্টোবর সরকারের উদ্যোগে একদল দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমকর্মী ভাসানচর পরিদর্শন করেন। তবে সেসময় তাদের সঙ্গে সেখানে থাকা রোহিঙ্গাদের দেখা হয়নি।

উখিয়ার থাইংখালী রোহিঙ্গা শিবিরের হেড মাঝি মো. মুজিব উল্লাহ বলেন, ‘ভাসানচরের আবাসনের চিত্র দেখে তার শিবির থেকে স্বেচ্ছায় কিছু রোহিঙ্গা পরিবার যেতে রাজি হয়েছে। তাদের তালিকা ক্যাম্প কর্তৃপক্ষকে দেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত চল্লিশ পরিবারের নাম দেওয়া হয়েছে। তবে তাদের কখন নিয়ে যাওয়া হবে সেটি জানা যায়নি। এছাড়া তার আশপাশের ক্যাম্প থেকেও আরও কিছু রোহিঙ্গা যেতে রাজি হয়েছে বলে খবর রয়েছে তার কাছে।

ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের বরাদ্দ দেওয়ার ফর্দ। এনজিওগুলোও এ বরাদ্দ দেওয়ার কাজে নিয়োজিত হওয়ার জন্য করেছে আবেদন।
ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের বরাদ্দ দেওয়ার ফর্দ। এনজিওগুলোও এ বরাদ্দ দেওয়ার কাজে নিয়োজিত হওয়ার জন্য করেছে আবেদন।

উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের রশিদা খাতুন বলেন, ‘সাত মাস ধরে ভাসানচরে আটকা রয়েছে আমার দুই সন্তান। তাদের দেখতে খুব মন কাঁদে। এক মাস পার হয়ে গেছে তাদের সঙ্গে কথা হয় না, জানি না কেমন আছে?

তিনি বলেন, ‘সরকার ভাসানচরে লোকজন নিয়ে যাওয়ার তালিকায় আমার নাম দিয়েছি। কারণ সেখানে আমার সন্তানদের নিয়ে বসবাস করতে পারবো।’

শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের প্রতিনিধি ও উখিয়া বালুখালীর তানজিমা খোলা রোহিঙ্গা শিবিরের কর্মকর্তা পুলক কান্তি চক্রবর্তী বলেন, ‘তার শিবির থেকে কিছু রোহিঙ্গা পরিবার স্বেচ্ছায় ভাসানচরে যেতে রাজি হয়েছে। তাদের তালিকা তৈরি করে আরআরআরসি কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।
তবে কতজন পরিবার রয়েছে সেটি বলতে অপারগতা জানিয়েছেন তিনি।

সম্প্রতি ভাসানচর পরিদর্শন শেষে চট্টগ্রাম রেঞ্জের পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মো. আনোয়ার হোসেন বলেছেন, ‘ভাসানচরে নিরাপত্তার বিষয়টি পুলিশ দেখভাল করছে। ফলে সেখানে পুলিশের একটি ব্যাটালিয়ন নির্মাণ করা হবে। আরও নিরাপত্তা বাড়াতে দ্বীপ ঘুরে দেখে সেখানকার কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, কক্সবাজারের ঘিঞ্জি শরণার্থী শিবির থেকে এক লাখের মতো রোহিঙ্গাকে নোয়াখালীর হাতিয়ার ভাসানচরে সরিয়ে নেওয়ার জন্য নিজস্ব অর্থে সেখানে আবাসন ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের নেওয়ার কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

গত সেপ্টেম্বরে ভাসানচর ঘুরে আসা উখিয়া কুতুপালাং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নারী নেত্রী হামিদা বেগম বলেন, ‘তার ক্যাম্পসহ আশপাশের ক্যাম্প থেকে কিছু রোহিঙ্গা পরিবার ভাসানচরে যাচ্ছে বলে শুনেছি। এসব লোক কারা সে ব্যাপারে পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারেনি। তবে উখিয়ার মেগা ক্যাম্প থেকে বেশির ভাগ লোক যাচ্ছে বলে শুনেছি।

সফরকারী রোহিঙ্গা নেতারা ভাসানচরের সৌন্দর্য ও স্থাপনা দেখে খুশি হয়ে শিবিরে প্রচারণা জোরদার করায় রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় ভাসানচরে যেতে রাজি হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের প্রতিনিধি ও টেকনাফের শালবন ও জাদিমুরা রোহিঙ্গা শিবিরের কর্মকর্তা (সিআইসি) মোহাম্মদ খালিদ। তিনি জানান, ‘রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে নিয়ে যেতে সরকার আগে থেকেই কাজ করছিল। কেউ স্বেচ্ছায় রাজি না হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে এগোনো যায়নি। যেহেতু এবার রোহিঙ্গারা নিজে থেকেই সেখানে যেতে ইচ্ছে প্রকাশ করছে, তাই গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করছি এবং উৎসাহিত করা হচ্ছে তাদের।’

জানা গেছে, রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের জন্য নিজস্ব তহবিল থেকে দুই হাজার ৩১২ কোটি টাকা ব্যয়ে ভাসানচরে আশ্রয় প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে সরকার। জোয়ার ও জলোচ্ছ্বাস থেকে সেখানকার ৪০ বর্গকিলোমিটার এলাকা রক্ষা করতে ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ বাঁধ এবং এক লাখ রোহিঙ্গা বসবাসের উপযোগী ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। গত বছরের ডিসেম্বরে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের এক সভায় ভাসানচরের জন্য নেওয়া প্রকল্পের খরচ ৭৮৩ কোটি টাকা বাড়িয়ে তিন হাজার ৯৫ কোটি টাকা করা হয়। বাড়তি টাকায় বাঁধের উচ্চতা ১০ ফুট থেকে বাড়িয়ে ১৯ ফুট করা, আনুষঙ্গিক সুবিধা বৃদ্ধিসহ জাতিসংঘের প্রতিনিধিদের জন্য ভবন ও জেটি নির্মাণে খরচ হবে।

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে প্রথম ভাসানচরে শরণার্থীদের বসবাসের জন্য আবাসন গড়ার পরিকল্পনা করা হয়। সেসময় চরটিতে কোনও জনবসতি ছিল না। ২০১৭ সালের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর নতুন করে সহিংসতা বৃদ্ধির পর মিয়ানমার থেকে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা প্রাণভয়ে কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ায় পালিয়ে আসে। এরপর কক্সবাজারের ওপর চাপ কমাতে ভাসানচরে অবকাঠামো গড়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়।

পাঠকের মতামত: