কক্সবাজার, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

প্রবল ভাঙ্গনের মুখে সেন্টমার্টিন

হেলাল উদ্দিন সাগর::

বর্ষায় অতি বৃষ্টি, মৌসুমি বায়ুর তীব্র প্রভাব ও জোয়ারের পানি অস্বাভাবিকভাবে বাড়ার ফলে প্রবলভাবে ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন। জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে বৃদ্ধি পাওয়ায় এই ভাঙ্গনের মূল-কারন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সাগরের ঢেউয়ের আঘাতে পুরো দ্বীপেই প্রবল ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়েছে। দ্বীপের একমাত্র কবরস্থানও রেহাই পাইনি এই ভাঙ্গনের ছোবল থেকে। সদ্য নির্মিত পুলিশ ফাঁড়িসহ পুরো দ্বীপের চারপাশেই চলছে ভাঙ্গনের চরম রঙ্গ-খেলা। আবাদি জমিতে নোনা পানি ঢুকে ফসল ও মিষ্টি পানির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করছে।
এদিকে মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে গাছপালা, ঘরবাড়ি উপড়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে জনজীবন। সেন্টমার্টিন বি.এন হাই স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক মাস্টার শামসুল ইসলাম বলেন, জোয়ারের পানি বেড়ে যাওয়ায় দ্বীপের চতুর্থাংশ চরমভাবে ভাঙ্গনের শিকার হচ্ছে। এখনই এই দ্বীপকে রক্ষার্থে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। সেন্টমার্টিন ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতা ও বি.এন হাই স্কুলের শিক্ষক আয়াত উল্লাহ খোমেনি বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি, পরিবেশ ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এই দ্বীপকে রক্ষার্থে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নিয়েই খামখেয়ালি পদক্ষেপ নিয়ে জনমনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
তিনি বলেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপের ভাঙ্গন রোধ ও ভবিষ্যতে এর কি কি ক্ষতি সাধিত হতে পারে এর কোন কার্যকরী পদক্ষেপ না নিয়েই শুধু পর্যটক সীমিতকরণ বা পর্যটক শূন্য করার পায়তারা করছে পরিবেশ ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। এতে করে দ্বীপাঞ্চলের মানুষের মনে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। আরেক ছাত্রনেতা ও সেন্টমার্টিন বিডিনিউজ’র সম্পাদক কেফায়েত উল্লাহ বলেন, আমরা দ্বীপবাসী এই দ্বীপকে খুব কাছ থেকেই দেখতে পাই। বর্ষায় এই দ্বীপ তথা দ্বীপের মানুষের কি অবস্থা হয় তা আমরা হাড়েহাড়ে বুঝি। সকল প্রতিকূলতা ডিঙিয়ে আমরা এই দ্বীপকে বাঁচিয়ে জীবন পার করছি।
তিনি বলেন, কেউ যদি এসি রুমে বসে এই দ্বীপের ভবিষ্যৎ নিয়ে খামখেয়ালি সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে সেই সিদ্ধান্তকে দ্বীপের মানুষ এখনোই মেনে নিবেনা। তিনি আরও বলেন, এই দ্বীপকে রক্ষার্থে এই মুহুর্তে টেকসই বেরিবাঁধ’র কোন বিকল্প নেই।
এই বিষয়ে সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুর আহমদ বলেন, সাগরের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জোয়ারের পানি অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। বর্ষার সময় এই প্রভাব আরও বেগতিক হয়। ফলে প্রবলভাবে ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন।
তিনি বলেন, এই দ্বীপকে রক্ষার্থে এই মুহুর্তে টেকসই বেরিবাঁধ খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়ছে। অন্যথায়, এই দ্বীপ রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে বলে জানান তিনি।
প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনকে ভাঙ্গনের ছোবল থেকে বাঁচাতে এবং দ্বীপ রক্ষার্থে দ্বীপের চারপাশে টেকসই বেরিবাঁধ নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহবান জানান দ্বীপবাসী।

পাঠকের মতামত: