কক্সবাজার, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

প্রাপ্তবয়স্ক ও সুস্থদের রোজা পালন ফরজ

মুসলিম উম্মাহর ঘরে ঘরে রাহমাত, মাগফিরাত ও নাজাতের পয়গাম নিয়ে আবার হাজির হল মোবারক মাস রমজান। গতকাল সন্ধ্যায় বাংলাদেশের আকাশে পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখা গেছে। এ মাসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য সম্পর্কে কুরআনুল কারিম ও হাদিসে রাসুলে বিস্তারিত নির্দেশনা রয়েছে। এ মাসে প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক ও সুস্থ মুসলিম নর-নারীর জন্য রোজা পালন ফরজে আইন বা অবশ্য কর্তব্য।

রোজা ইসলামের তৃতীয় স্তম্ভ। রোজা হচ্ছে সুবহে সাদিক হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত ইসলামী শরিয়তের বিধান মোতাবেক যাবতীয় পানাহার ও স্বামী-স্ত্রীর যৌনাচার থেকে নিয়ত সহকারে বিরত থাকা। আল্লাহ পাক আল কোরআনে ইরশাদ করেছেন, “হে ঈমানদারগণ! তোমাদের প্রতি সিয়াম সাধনা ফরজ করা হল যেভাবে ফরজ করা হয় তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর; উদ্দেশ্য হল তোমরা তাকওয়ার নীতি অবলম্বন করবে।” (সুরা আল বাকারা : ১৮৩)।

রমজান শুরুর প্রথম দিকে এ মাসের গুরুত্ব ও বরকত ফুটিয়ে তুলে রাসুলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহাবিদের উদ্দেশে ইরশাদ করেন, “তোমাদের উপর এমন এক মহান মর্যাদা ও বরকতপূর্ণ মাস আসছে যাতে এমন একটি রাত রয়েছে যা হাজার মাস থেকে উত্তম। আল্লাহ তায়ালা এ মাসের দিবাভাগে উপবাস ফরজ করে দিয়েছেন আর রাত্রিজাগরণ তথা সালাতুত তারাবিকে সুন্নাত করে দিয়েছেন। আর যে ব্যক্তি এ মাসে সানন্দে স্বেচ্ছায় কোন একটি নেক আমল করবে সে অন্য মাসে ফরজ আদায়ের সাওয়াব হাসিল করবে আর যে ব্যক্তি এ মাসে একটি ফরজ আদায় করবে আল্লাহ পাক তাকে অন্য মাসে ৭০টি ফরজ আদায় করার সমতুল্য সাওয়াব দান করবেন।” (মেশকাত শরীফ)।

মহানবী (সা.) আরো বলেছেন, “যখন রমজান মাস আসে তখন জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়, জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেয়া হয় এবং শয়তানকে শৃঙ্খলিত করে রাখা হয়।” ইমাম তিরমিযীর বর্ণনায় উল্লেখিত হাদীসটির শেষাংশে আরো যোগ করা হয়েছে, “একজন ফিরিশতা রমজানে ডেকে বলে- হে কল্যাণ অন্বেষু! তুমি এগিয়ে যাও; আর হে অনিষ্টাচারী! তুমি নিবৃত্ত হও। এভাবে শেষ রমজান পর্যন্ত চলতে থাকে।” (বুখারী ও মুসলিম শরীফ)

মাহে রমজানে মহাগ্রন্থ আল কুরআনসহ সকল আসমানী গ্রন্থ ও সহিফা নাজিল হয়। যাকাত-ওশর, দান-সাদাকা, সবর, সহানুভূতি ও সহমর্মিতা প্রদর্শনের মাধ্যমে আত্মশুদ্ধি অর্জন সম্ভব হয় এ মাসে। তাসবীহ, তাহলীল, দোয়া-দরুদ ও গভীর মুনাজাতে আত্মমগ্ন হয়ে এ পবিত্র মাসে রোজাদার আল্লাহ পাকের সান্নিধ্য লাভ করেন। নবীজী ইরশাদ করেছেন, “যে ব্যক্তি সাওয়াবের আশায় ঈমানসহ রমজানের রোজা রাখবে তার অতীতের সকল গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে।” (বুখারী শরীফ)।
রাসুলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ মাসে নিজেও বেশি বেশি ইবাদত করতেন এবং সাহাবীদেরও কোমর বেঁধে ইবাদতের জন্য উৎসাহ যোগাতেন।

পাঠকের মতামত: