কক্সবাজার, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

বাঁশখালীতে নিহতদের পরিবারকে ৫ লাখ টাকা করে দেয়ার নির্দেশ

চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে সংঘর্ষের ঘটনায় নিহতদের পরিবারকে আপাতত পাঁচ লাখ টাকা করে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ওই ঘটনায় কেন বিচারিক অনুসন্ধানের নির্দেশ দেয়া হবে না- তা জানতে চেয়েও রুল জারি করেছেন আদালত।

পৃথক দুটি রিটের শুনানি নিয়ে আজ মঙ্গলবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।

গত ১৭ এপ্রিল সকালে বাঁশখালীর গন্ডামারায় সংঘর্ষে পুলিশের গুলিতে পাঁচজন নিহত হন। পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও দুজন মারা যান। আহত হন ৩ পুলিশসহ অন্তত ৩০ জন। ৫ তারিখের মধ্যে বেতন পরিশোধ, পবিত্র রমজান মাসে কর্মঘণ্টা ১০ ঘণ্টা থেকে কমিয়ে ৮ ঘণ্টা, শুক্রবার ৮ ঘণ্টা থেকে কমিয়ে ৪ ঘণ্টা করাসহ নানা দাবিতে বিক্ষোভ করেন বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণকাজের শ্রমিকেরা। বিক্ষোভের একপর্যায়ে পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন কিছু শ্রমিক। তখনই পুলিশ গুলি ছুড়তে থাকে।

ওই সংঘর্ষে বিদ্যুৎকেন্দ্রে ৭ শ্রমিক নিহত এবং প্রায় ৩০ জন আহত হওয়ার ঘটনায় যথাযথ পদক্ষেপ নিতে এবং হতাহত ব্যক্তিদের পরিবারের পরবর্তী নিরাপত্তা সুরক্ষা নিশ্চিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা-ব্যর্থতা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা–ও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।

হাইকোর্টের আদেশে ওই ঘটনায় পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের তদন্ত প্রতিবেদন ৪৫ দিনের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে। এছাড়া ওই ঘটনায় ভুক্তভোগী ও আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা ও চিকিৎসার খরচের বিষয়ে এস আলম গ্রুপ কী পদক্ষেপ নিয়েছে, সে বিষয়ে ৪৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

ওখানকার শ্রমিক ও এলাকবাসীকে যাতে কোনো ধরনের হয়রানি না করা হয়, তা নিশ্চিত করতেও নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি প্রত্যেক নিহত শ্রমিকের পরিবারকে তিন কোটি ও আহত শ্রমিকদের দুই কোটি টাকা করে যৌথভাবে ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, এ বিষয়েও রুল হয়েছে।

এর আগে চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার গন্ডামারায় নির্মাণাধীন কয়লাবিদ্যুৎকেন্দ্রের শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের তালিকা তৈরিসহ প্রকৃত ঘটনা উদ্‌ঘাটনে বিচারিক অনুসন্ধান কমিটি গঠনের নির্দেশনা চেয়ে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) গত মাসে একটি রিট করে। অন্যদিকে একই ঘটনায় ২৮ এপ্রিল অপর রিটটি করে পাঁচ সংগঠন। সংগঠনগুলো হচ্ছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা), বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), নিজেরা করি, সেফটি অ্যান্ড রাইটস ও অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি)।

আদালতে এই দুটি রিটের পক্ষে আইনজীবী জেড আই খান পান্না, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ও সৈয়দা নাসরিন শুনানি করেন। এস আলম গ্রুপের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আরশাদুর রউফ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দু কুমার রায় ও বিপুল বাগমার।

পাঠকের মতামত: