কক্সবাজার, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

বাংলাদেশ আর অন্ধকারে পড়ে থাকছে না: প্রধানমন্ত্রী

বাংলাদেশ আর অন্ধকারে পড়ে থাকছে না। দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীরা বিশ্বের কাছে নিজেদের উপস্থাপন করতে পারছে। তাদের জ্ঞানের আলো উদ্ভাসিত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) মুজিববর্ষ উপলক্ষে জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি প্রকাশিত গ্রন্থসমূহের প্রকাশনা উৎসব, বঙ্গবন্ধুস্কলার বৃত্তি প্রদান এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কুইজের চূড়ান্ত পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

গত ১৩ বছরে সরকার দেশে বিরাট পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একদিকে যেমন দারিদ্র্যের হার কমাতে পেরেছি, সাক্ষরতার হার বাড়াতে পেরেছি। মানুষের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা দিতে পেরেছি। সেইসঙ্গে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের ওপর যে গুরুত্ব দিয়েছিলাম, সেখানেও আমরা যথেষ্ট সফল হয়েছি। বলতে গেলে প্রযুক্তির মাধ্যমে বিশ্বটা হাতের মুঠোয় চলে আসছে। বিশ্বকে জানার সুযোগ থাকছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। উন্নয়নশীল দেশ থেকে আমরা ধাপে ধাপে উন্নত দেশে উন্নীত হবো। সেটা করা খুব কঠিন কাজ না। সেটা করতে পারবো। জাতির পিতা সোনার বাংলা করার জন্য সোনার মানুষ চেয়েছিলেন। সোনার মানুষ এখন তৈরি হচ্ছে ।’

বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করে যারা লিখেছেন, তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘জাতির পিতার নামটা আসেলেই মুছেই ফেলা হয়েছিল পঁচাত্তরের পর। ভাষা আন্দোলন বা স্বাধীনতার সংগ্রামে এবং মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ে আমাদের যে ইতিহাস, সবই কিন্তু পরিবর্তন হয়ে গিয়েছিল, প্রায় ২১ বছর। আমাদের কয়েকটি প্রজন্ম আছে, হয়তো তারা কিছু জানতেই পারেনি। কিন্তু এই লেখার মাধ্যমে আজকের প্রজন্ম অনেক কিছু জানতে পারবে।’

তিনি বলেন, ‘দেশে শিক্ষা গবেষণা প্রয়োজনীয়তার কথা আমাদের শিখিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি শিক্ষাকে সবথেকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন। সত্তরের নির্বাচনে ইশতেহার ও ভাষণে তিনি বলেছিলেন, শিক্ষায় যে অর্থ ব্যয় হয়, সেটা হচ্ছে বিনিয়োগ। শিক্ষার্থীদের উপযুক্তভাবে গড়ে তুলতে পারলে তারা দেশগড়ার কাজে নিবেদিত হয়। দেশে অবদান রাখতে পারে। তাঁর চিন্তা চেতনা এই ধরণের ছিল। সঙ্গে বিজ্ঞান ও গবেষণাকেও তিনি গুরুত্ব দিয়েছিলেন।’

বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্ট্রের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘রেহানা ও আমি আমাদের যতটুকু সম্পদ, ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বাড়িটিসহ যা অর্থ পেয়েছিলাম সব দিয়ে একটি ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করি। এই ফান্ডের সবচেয়ে বড় কাজ ছিল ছেলেমেয়েদের শিক্ষা বৃত্তি দেওয়া। এর সঙ্গে আমরা অন্যদেরও সহযোগিতা করে থাকি।’

উচ্চ শিক্ষায় ও গবেষণায় ব্যবস্থা নেওয়া উচিত জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা যখন সরকার গঠন করেন, তখন উচ্চ শিক্ষা ও গবেষণায় আর্থিকভাবে সহায়তা করতেন। আলাদাভাবে টাকা দিতেন, এমনকি বিদেশেও পাঠাতেন। পঁচাত্তর-পরবর্তী যারা ক্ষমতায় এসেছিল, তারা সেটা বন্ধ করে দিয়েছিল। ক্ষমতায় আসার পরে প্রধানমন্ত্রী শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করি।’

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটিকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শুধু একটা কষ্ট থেকে গেলো। এ রকম চমৎকার অনুষ্ঠানে আমি নিজে সশরীরে উপস্থিত থাকতে পারলাম না। এটাই সব থেকে বড় কষ্ট। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অনুষ্ঠানে থাকতে না পারার বড়কষ্ট হয় না। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে সম্ভব হলো না। এটা দুর্ভাগ্য। শত প্রতিকূলতার মাঝেও কাজগুলো সুচারু ও সুষ্ঠুভাবে হয়েছে। আমি এবং রেহানার পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞা জানাই। আমার ছোটবোন রেহানার পক্ষ থেকেই এই জাতিকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।’

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের হাতে বঙ্গবন্ধু স্কলার বৃত্তি এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কুইজের চূড়ান্ত পুরস্কার তুলে দেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।

পাঠকের মতামত: