কক্সবাজার, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

বাতিল হচ্ছে সু চির রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন!

মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) নিবন্ধন বিলুপ্ত করতে চায় জান্তা নিযুক্ত নির্বাচন কমিশন। এক নির্বাচন কমিশনারের বরাত দিয়ে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স এই খবর প্রকাশ করেছে।

খবরে বলা হয়, গত বছরের নভেম্বরে মিয়ানমারে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগে এনএলডির বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন এমন ব্যবস্থা নেবে। মিয়ানমারের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এক বৈঠকে এনএলডির নিবন্ধন বিলুপ্ত করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। তবে এনএলডিসহ দেশটির অনেকগুলো রাজনৈতিক দল ওই বৈঠক বর্জন করে।

জান্তা-সমর্থিত দেশটির ইউনিয়ন নির্বাচন কমিশনের (ইউইসি) চেয়ারম্যান থেইন সোর ভোট জালিয়াতিকে বিশ্বাসঘাতক উল্লেখ করে বলেন, এনএলডি নির্বাচনে যে জালিয়াতি করেছে, তা অবৈধ। সুতরাং তাদের দলটির (এনএলডি) নিবন্ধন বিলুপ্ত করতে হবে।

এ ব্যাপারে মন্তব্য জানতে চাইলে মিয়ানমারের জান্তার মুখপাত্র তাৎক্ষণিকভাবে কোনো উত্তর দেননি। এনএলডির কাছ থেকেও কোনো মন্তব্য তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। তবে সেনা-সমর্থিত ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির এক মুখপাত্র বলেছেন, ওই বৈঠকে তাদের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষ হয়নি। বৈঠকের ফলাফল সম্পর্কে তিনি অবগত নন।

গত বছরের নভেম্বরে মিয়ানমারে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে সু চির এনএলডি বিপুল জয় পায়। নির্বাচন স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ হয়েছে বলে দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক সংস্থা জানায়। কিন্তু এই নির্বাচনে কারচুপি-জালিয়াতির অভিযোগ তোলে সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনীর অভিযোগ নাকচ করে তৎকালীন নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনে কথিত জালিয়াতির অজুহাতে দেশটির সেনাবাহিনী গত ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থান করে। তারা সু চির নির্বাচিত সরকার উৎখাতের মাধ্যমে দেশটির ক্ষমতা দখল করে। একই সঙ্গে সু চিসহ রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেপ্তার করে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী দেশটিতে জরুরি অবস্থা জারি করে।

সেনা অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারে বিক্ষোভ শুরু করেন গণতন্ত্রপন্থীরা। সেনাশাসনবিরোধী চলমান এই বিক্ষোভে জান্তার নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে এখন পর্যন্ত আট শতাধিক বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অনেকে। এ ছাড়া হাজারো বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একই সময় দেশটির সংখ্যালঘু নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর সশস্ত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে সেনাবাহিনীর লড়াই তীব্রতর হয়েছে।

মিয়ানমারে গণতন্ত্র পুনর্বহালের পাশাপাশি সু চিসহ গ্রেপ্তার বেসামরিক ব্যক্তিদের মুক্তি দিতে দেশটির জান্তার ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বহাল রয়েছে। তবে দেশটির সামরিক জান্তার এখন পর্যন্ত গণতন্ত্রপন্থীদের সঙ্গে সমঝোতায় আসার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।

পাঠকের মতামত: