কক্সবাজার, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক স্থানান্তর করা হচ্ছে না : পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন করা ভাসানচর দ্বীপটি ৩০ বছরের পুরানো এবং নিরাপদ। সেখানে রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক স্থানান্তর করা হয়নি, দ্বীপটিতে বসবাসের উপযোগী সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে।

ভাসানচরে স্বাস্থ্যসেবা, পানীয় জলের ব্যবস্থা, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সুযোগ এবং ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রসহ বিভিন্ন সুবিধার কথা উল্লেখ করে আজ বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেছে। এতে আরো বলা হয়, ‘সেখানে যারা যাচ্ছেন তাদের এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য বল প্রয়োগ, ভয় দেখানো বা অর্থের ব্যবহারের কোনো প্রশ্নই আসে না।

দ্বীপটিতে রোহিঙ্গাদের অবাধ চলাচলের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা রয়েছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরো বলছে, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) এরই মধ্যে ভাসানচর ও নোয়াখালীর মধ্যে নিয়মিত সমুদ্র-ট্রাক পরিষেবা চালু করেছে।

বাংলাদেশ বলছে, রোহিঙ্গাদের নিয়ে সৃষ্ট সংকট মিয়ানমার তৈরি করেছে এবং এর সমাধান সম্পূর্ণ মিয়ানমারের মধ্যেই রয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, বাংলাদেশের ওপর অহেতুক ও অযৌক্তিক চাপ প্রয়োগের পরিবর্তে জাতিসংঘ/এনজিওগুলো/ আন্তর্জাতিক মানবতাবাদী ও মানবাধিকার সংস্থাসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে মিয়ানমারে রোহিঙ্গারা বংশ পরম্পরা ধরে যে বিপর্যস্ত মানবাধিকার লঙ্ঘনের মুখোমুখি হচ্ছে সেদিকে মনোনিবেশ করতে হবে।

মিয়ানমার থেকে নিপীড়িত রোহিঙ্গাদের অস্থায়ীভাবে আশ্রয় দেওয়ার পর অসংখ্য সমস্যা সৃষ্টি হওয়ার কারণে প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসনচরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা করতে বাধ্য হয় বাংলাদেশ।

পরিকল্পনা অনুসারে, কক্সবাজার থেকে প্রথম দফায় গত ৪ ডিসেম্বর এক হাজার ৬৪২ এবং দ্বিতীয় দফায় গত ২৯ ডিসেম্বর এক হাজার ৮০৪ জন রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নেওয়া হয়।

বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জাতিসংঘকে রোহিঙ্গাদের বর্তমান পরিস্থিতি দেখার জন্য মিয়ানমারে একটি কারিগরি  ও সুরক্ষা মূল্যায়ন দল পাঠানো এবং সেখানে প্রত্যাবাসনের প্রস্তুতিও পরিদর্শনে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, এটি মনে রাখা উচিত যে রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিক। শুধু মানবিক কারণ থেকে বাংলাদেশ অস্থায়ী ভিত্তিতে তাদের আশ্রয় দিয়ে আসছে। রোহিঙ্গারাও তাদের স্বদেশ মিয়ানমারে ফিরে যেতে চায় এবং সে লক্ষ্যে সবাইকে গঠনমূলকভাবে কাজ করা দরকার।

‘মিয়ানমারের নির্বাচন এখন শেষ হয়ে গেছে। আমরা মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত ও নিপীড়িত নাগরিকদের তাদের স্বদেশে দ্রুততার সঙ্গে প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমারের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃশ্যমান কর্মতৎপরতার প্রত্যাশায় রয়েছি’, যোগ করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

পাঠকের মতামত: