কক্সবাজার, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪

‘ভয়াবহ পরিণতি নিয়ে আসবে ডেঙ্গু’

করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির মধ্যেই কিছুদিন ধরে রাজধানীতে ডেঙ্গুর প্রকোপও বেড়েছে। দুই সিটি করপোরেশন ডেঙ্গু জ্বরের বাহক এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করলেও প্রতিদিন রেকর্ডসংখ্যক মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে। ডেঙ্গু পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে জানিয়ে চিকিৎসকেরা বলছেন, প্রতিদিন যে হারে মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে, তাতে ডেঙ্গু ভয়াবহ পরিণতি নিয়ে আসতে পারে। করোনায় আক্রান্ত ১০ জন রোগীকে একজন চিকিৎসক দেখভাল করতে পারেন। কিন্তু ডেঙ্গু রোগীর অবস্থা খারাপ হলে একজন রোগীর জন্য একজন চিকিৎসকের প্রয়োজন হয়।

রাজধানী ঢাকায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। ডেঙ্গু ডেডিকেটেড স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালে বর্তমানে ১৫৪ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে। এ হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘এডিস মশাকে বলা হয় “ঘরকুনো মশা”। এরা আপনার বিছানার নিচে, সোফার কুশনের নিচে, পর্দার ভাঁজে এমনকি বিভিন্ন আসবাবের খাঁজে কিংবা ফাঁকফোকরে লুকিয়ে থাকতে পারে। লকডাউনে শিশুরা সব সময় বাসায় থাকায় এডিস মশার কামড়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে। তাই প্রত্যেককেই যার যার বাসাবাড়ি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।’

ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মিটফোর্ড হাসপাতালে ভর্তি হওয়া আদাবরের বাসিন্দা মো. নাসির বলেন, ‘একই ওয়ার্ডে আমরা সবাই ডেঙ্গু রোগী। কেননা, ঘরে মশা, বাইরে মশা।

চারদিকে শুধু মশা আর মশা। কয়েল জ্বালিয়ে আর মশারি টানিয়ে কতক্ষণ থাকা যায়। এলাকায় সিটি করপোরেশন ঠিকমতো কীটনাশক দেয় না, স্প্রে করে না।’

মিটফোর্ড হাসপাতালের সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. মিজানুর রহমান বলেন, ‘এক দিনের রোগীর সংখ্যা হিসাব করে বলা যাচ্ছে না, আগামী দিনে ডেঙ্গুর প্রকোপ কতটা ভয়াবহ হবে। তবে সিটি করপোরেশনকে আরও তৎপর হতে হবে ডেঙ্গুর উৎপত্তিস্থল বিনাশ করতে। তা না হলে ডেঙ্গু আমাদের জন্য ভয়াবহ পরিণতি নিয়ে আসবে।’

তিনি আরও বলেন, গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৩৪ জন ডেঙ্গু রোগী সুস্থ হয়ে এ হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছে আর নতুন ভর্তি হয়েছে ২১ জন। ডেঙ্গু প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই বেশি দরকার। ডেঙ্গু প্রতিরোধের জন্য সচেতনতার বিকল্প নেই।

ডা. মিজানুর বলেন, ‘ডেঙ্গু আক্রান্তের প্রথম থেকে ঠিকমতো চিকিৎসা করালে এবং রোগীকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে সেবা দিলে অল্প সময়ে ডেঙ্গু জ্বর সম্পূর্ণ ভালো হয়। মিটফোর্ড হাসপাতালের চিকিৎসকেরা নিরলসভাবে পরিশ্রম করছেন। এই হাসপাতাল দেশের অন্যতম প্রধান ডেঙ্গু ডেডিকেটেড হাসপাতাল। এখানে ডেঙ্গুর জন্য আলাদা ইউনিট করা হলেও নতুন ডাক্তার নিয়োগ দেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছে, আগামী শনিবারের মধ্যে আটজন নতুন চিকিৎসক নিয়োগ দেবে। আজকের পত্রিকা

পাঠকের মতামত: