কক্সবাজার, মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪

মার্কেটে যারা আগুন দিয়েছে তাদের বিচার হবে : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মানুষ যখন ভালো অবস্থার দিকে যাচ্ছে, আর্থিকভাবে সচ্ছল হচ্ছে, সেই সময়ে আবার অগ্নিসন্ত্রাস, মার্কেটে আগুন, নানাভাবে মানুষকে ক্ষতি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এটা যারা করছে তাদের প্রতি জাতির ঘৃণা। যারা এ অপরাধ করছে তাদের বিচার হবে।

মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গণভবনে যান বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসন্ত্রাসে নিহত ব্যক্তিবর্গের পরিবারের সদস্য এবং আহতরা। এ সময় তাদের উদ্দেশে দেওয়া বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, কয়েকদিন ধরে হঠাৎ করে আগুনের ঘটনা বেড়ে গেল। আমার মনে সন্দেহ হচ্ছে, এটাও নাশকতা কি না। যারা জীবন্ত মানুষকে গাড়িতে আগুন দিয়ে, বাসে আগুন দিয়ে, রিকশায় আগুন দিয়ে পোড়াতে পারে, এরা মানুষের ক্ষতি করাটাই জানে। ঈদের সময় মানুষ ব্যবসা বাণিজ্য করবে, হয়ত সেই পথটাও বন্ধ করে দিতে চেয়েছিল। আমার মনে হয়, এখানেও একটা ঘটনা আছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, একদিন শুনলাম আমার কেউ নেই। আমরা দুইটা বোন বিদেশে এতিম হয়ে গেলাম। কী বর্বরভাবে আমার মা, বাবা, তিন ভাইকে হত্যা করা হয়েছে। আমি বাংলাদেশে ফেরার পর থেকে আপনাদের (বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসন্ত্রাসে নিহত ব্যক্তিবর্গের পরিবার) খোঁজ নিচ্ছিলাম। অনেককেই হত্যা করা হয়েছে। আমাদের গ্রামের লুৎফরকে ফিরে পেয়েছিলাম, তার ছেলে-মেয়েদের আমি দেখতাম। তারপর থেকে অনেক চেষ্টা করেছিলাম অন্যদের নাম জোগাড় করতে। স্বাভাবিকভাবে শুরুতে নামগুলো পাওয়া খুব কঠিন ছিল। পরে ধীরে ধীরে সেই নামগুলো খুঁজে বের করতে পেরেছি।

তিনি আরও বলেন, ১৫ আগস্টের পর থেকে বারবার সেনাবাহিনীর মুক্তিযোদ্ধা অফিসারদের হত্যা করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের অগণিত নেতাকর্মীদের হত্যা করেছে তারা। আমি যখন বিরোধী দলে ছিলাম এমন দিন ছিল না যে লাশ টানতে হয়নি? এরপরও কী করে মানুষ তাদের পাশে থাকে এটা আমি বুঝে উঠতে পারি না।

সরকারপ্রধান বলেন, দিনের পর দিন ফাঁসির যে কাহিনি এগুলো আমরা বিদেশে থেকেই শুনতাম। যেখানে কেন্দ্রীয় কারাগার নেতাদের হত্যা করা হলো। কোনো অপরাধ নেই, জানেও না তাদের কী অপরাধ ছিল। ধরে নিয়ে ফাঁসি দেওয়া হয়। পাকিস্তান হানাদার বাহিনী যেভাবে বর্বরতা করেছিল, বিএনপি জামায়াতও সেই একইভাবে বর্বরতা করেছে। জিয়াউর রহমান তো হাসতে হাসতে মানুষের ফাঁসির রায় লিখত। কোনো বিচার ছিল না। ফাঁসির রায় দেওয়া হয়ে গেছে, আর বিচার হয়েছে পরে। কী জুলুম, কী অত্যাচার, কী অন্যায়। ৩৫ বছর লেগেছে আমার বাবা-মার হত্যার বিচার করতে।

তিনি বলেন, অনেক বিচারক বিব্রত বোধ করে রায় দিতেন। যেখানে এতগুলো মানুষ হত্যা করল সেখানে বিচারকরাও রায় দিতে লজ্জা বোধ করেন, এটাও আমাকে দেখতে হয়েছে। এজন্য আমি আপনাদের কষ্ট বুঝি কারণ আমিও একই রকম কষ্ট পেয়েছি।

পাঠকের মতামত: