কক্সবাজার, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

মূল্যস্ফীতি ৯ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ

গত মে মাসেই মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশ ছাড়িয়ে গিয়েছিল। জুন মাসে তা আরও বাড়ল। ফলে দেশের মূল্যস্ফীতির হার এখন ৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ। বলা হয়ে থাকে, মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশ অতিক্রম করা মানেই দুঃসংবাদ। এতে সীমিত আয়ের মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় অসহনীয় হয়ে ওঠে। এর আগে ২০১৩ সালের জুলাই মাসে ৭ দশমিক ৮৫ শতাংশ মূল্যস্ফীতি হয়েছিল। অর্থাৎ বিগত ৯ বছরে এই জুন মাসের মতো এত মূল্যস্ফীতি আর হয়নি।

মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) মূল্যস্ফীতির হালনাগাদ এ তথ্য প্রকাশ করেছে।

গত ছয় মাস ধরে মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার কারণে গত অর্থবছরের মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৪ শতাংশে ধরে রাখার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছিল। কিন্তু ২০২১-২২ অর্থবছরে (জুলাই-জুন) গড়ে ৬ দশমিক ১৫ শতাংশ মূল্যস্ফীতি হয়েছে। এর মানে, মূল্যস্ফীতির লক্ষ্য ঠিক থাকেনি। নতুন ২০২২–২৩ অর্থবছরে অর্থমন্ত্রী মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৬ শতাংশে রাখবেন বলে বাজেট বক্তৃতায় বলেছিলেন।

মূলত মূল্যস্ফীতির এই উর্ধ্বগতি গত পাঁচ মাস ধরেই ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে। গত জানুয়ারি মাসে মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের নিচে ছিল। ফেব্রুয়ারি মাসে তা ৬ শতাংশ অতিক্রম করে। এরপর থেকেই ধারাবাহিকভাবে বেড়ে চলেছে মূল্যস্ফীতির হার। তবে অর্থনীতিবিদেরা মনে করেন, ৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ নয়, প্রকৃত মূল্যস্ফীতি আসলে আরও বেশি। বিশেষ করে গরিব মানুষের ওপর এই মূল্যস্ফীতির চাপ ১০ শতাংশের বেশি।

রেকর্ড মূল্যস্ফীতি সম্পর্কে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজার পরিস্থিতির কারণে দেশে মূল্যস্ফীতির চাপ বেড়েছে। তবে ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতির হার কম।’

তিনি আরও বলেন, বর্ষাকালে বিশেষ করে জুলাই থেকে অক্টোবর সময়ে মূল্যস্ফীতি একটু বাড়ে। কারণ, এ সময়ে উৎপাদন ব্যাহত হয়। ধান, শাকসবজির মৌসুম নয় বলে বাজারে এসবের দাম কিছুটা বাড়ে। মূল্যস্ফীতির চক্র বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, এ সময় সাধারণত খাদ্যমূল্য কিছুটা বৃদ্ধি পায়।

কয়েক মাস ধরেই বাজারে চাল, ডাল, তেল, চিনিসহ নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে বাজারে। বাজারে সব ধরনের পণ্যেরই দাম বাড়তি আছে। এর ফলে গরিব ও সীমিত আয়ের মানুষকে ভুগতে হচ্ছে। এসব কারণে কয়েক মাস ধরে মূল্যস্ফীতি সাধারণ মানুষের জন্য আবারও মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। উচ্চমূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এখন অর্থনীতির প্রধান চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে।

বাজার পর্যালোচনা করে জানা যায়, মোটা চালের দাম কেজিতে ৫ থেকে ৮ টাকা বেড়ে এখন ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ভোজ্যতেলের দাম লিটারপ্রতি দাম ২০০ টাকা পেরিয়েছে। আর ডালের দাম গড়ে ১০ টাকা বেড়েছে। চিনির দামও কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে। প্রায় সব ক্ষেত্রেই রয়েছে মূল্যবৃদ্ধির চাপ। খাদ্যপণ্যের বাইরে গিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিশেষত খাতা-কলম, পোশাক, পরিবহন খরচ—সবই বেড়েছে।

পাঠকের মতামত: