কক্সবাজার, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

রংপুরে অসময়ে বন্যা, আতঙ্কিত মানুষ

রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নে তিস্তা ব্যারেজ সেচ ক্যানেলের পাড় ভেঙে ১০টি গ্রামের প্লাবিত হয়েছে। এতে পানির নিচে তলিয়ে গেছে গ্রামের রাস্তা-ঘাটসহ প্রায় ৩০০ হেক্টর ফসলি জমি । গতকাল রবিবার সকালে তারাগঞ্জ উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নে আকস্মিকভাবে তিস্তা ব্যারাজ সেচ ক্যানেলের প্রায় ৫০ ফুট পাড় ভেঙে যায়।

এতে ক্যানেলের পার্শ্ববর্তী কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়। খবর পেয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারাসহ স্থানীয় প্রশাসন, সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেনে। এতে ৩ নম্বর অনন্তপুর ওয়ার্ডের মিস্ত্রীপাড়া, দক্ষিণপাড়া, ডাঙ্গাপাড়া, হাজিপাড়া, বড়বাড়ি, আখিরারপাড়সহ ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়। তারাগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী অফিসার জানান, পানি নামতে শুরু করেছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সকল কর্মিদের ব্লিচিং পাউডার চিটানোর কাজে লাগানো হয়েছে। এদিকে এলাকার কয়েক হাজার পরিবার এমনিতে নভেল করোনা আতংক অপরদিকে অসময়ে বন্যার কবলে পড়ে আতংকিত হয়ে পড়েছে বলে সাধারণ মানুষ।

স্থানীয় ২ নম্বর কুর্শা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আফজালুল হক সরকার জানান, পাড় ভেঙ্গে যাবার পর থেকে পানির তীব্র স্রোতে এই এলাকার বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত হয়। এর ফলে তার নিজ বসতবাড়িসহ গ্রামের অসংখ্য ঘরবাড়িতে পানি ঢুকেছে। রাস্তাঘাট, ছোট ছোট ব্রিজ ও কালভার্ট স্রোতের তোড়ে ভেঙ্গে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।

তিনি জানান, সেচ ক্যানেলের ফিটের মতো অংশ ভেঙ্গে গেছে। এতে অন্তত ১০ গ্রামের নিচু এলাকাগুলো প্লাবিত হয়েছে। ভেসে গেছে ৫০টি পুকুরের মাছ, এতে প্রায় ৫ কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে । এদিকে স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন অভিযোগ করেছেন, সেচ ক্যানেলের পাড়ের নীচের দিকে মাটি নরম হওয়ায় পাড় ভেঙ্গে গেছে। এতে জমি, ২ টি ইটভাটা, মাছের খামার, সড়ক পানিতে তলিয়ে যায়।

তারাগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অশোক কুমার জানান, তিস্তা সেচ ক্যানেল ভেঙ্গে নীচু এলাকাসহ অন্তত ৩০০ হেক্টর কৃষি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা জরিপ করে জানা যাবে। তারাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানান, কুর্শা ইউনিয়নের অন্ততপুর ওয়ার্ডে সেচ ক্যানেলের একাংশের পাড় ভেঙ্গে কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড সেচ প্রকল্পের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আব্দুস শহীদ জানান, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ভেঙ্গে যাওয়া অংশ মেরামতের চেষ্টা চলছে। ক্যানেলটি মজবুত ছিল, বিভিন্ন এলাকার মানুষ ক্যানেল ফুটো করে জমিতে চুরি করে পানি নেয়ায় এবং ইঁদুরের গর্তের কারণে ক্যানেলটি ভেঙ্গে যেতে পারে। আমরা সেচ ক্যানেল ভেঙ্গে যাওয়ার কারণ অনুসন্ধান করে দেখব।

পাঠকের মতামত: