কক্সবাজার, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

রেডজোন কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজের ল্যাবে নমুনা জট

করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে ‘রেডজোন’ ঘোষিত দেশের প্রথম শহর কক্সবাজারের প্রায় ২ লাখ বাসিন্দার সময় কাটছে ঘরে বসে। কড়া লকডাউনের মাঝে হাসপাতাল ও ওষুধের দোকান ছাড়া সকল প্রকার ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ। হাটবাজারও খোলা হচ্ছে সপ্তাহে মাত্র দুইদিন; রবি ও বৃহস্পতিবার। এর মধ্যেও করোনা টেস্টের জন্য হাসপাতালে ভিড় কমছে না রোগীদের। ইতোমধ্যে কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজের ল্যাবে সৃষ্টি হওয়া নমুনা জট কমাতে উপজেলাগুলো থেকে দৈনিক ২০টির বেশি নমুনা না পাঠাতে রোববার (১৪ জুন) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রশাসকদের কাছে একটি পত্র পাঠিয়েছেন কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ।

কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজের (কমেক) আইডিসিআর এর ল্যাবে ২টি পিসিআর মেশিন দিয়ে দৈনিক সাড়ে ৫শ’র বেশি নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। তবু নমুনা জট সামাল দেয়া যাচ্ছে না। নমুনা জট কমাতে গত ৩ দিন আগে কক্সবাজার বিএফআরআই’র একটি পিসিআর মেশিন কমেক ল্যাবে আনা হলেও সেটি মানব শরীরের ভাইরাস পরীক্ষার জন্য উপযুক্ত নয় বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। বর্তমানে কমেকের ল্যাবে প্রায় দেড় হাজার নমুনা পরীক্ষার জন্য অপেক্ষমাণ রয়েছে বলে জানান কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজের (কমেক) অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. অনুপম বড়ুয়া। তিনি বলেন, নমুনা জট কমাতে আমরা কয়েক শিফটে কাজ করছি। প্রতিদিন সাড়ে ৬শ’র কাছাকাছি নমুনা আমরা পরীক্ষা করছি। তবে কক্সবাজার জেলা ছাড়াও বান্দরবান এবং চট্টগ্রামের রোগীদের জন্যও এখানে করোনা পরীক্ষার সুবিধা রয়েছে।

কক্সবাজারের আইডিসিআর এর ল্যাবে নমুনা জট কমাতেই উপজেলাগুলো থেকে নমুনা সংগ্রহ আপাতত কমানোর জন্য বলা হয়েছে বলে জানান সিভিল সার্জন ডা. মাহবুবুর রহমান। তিনি বলেন, গ্রামের তুলনায় শহরে সংক্রমণ অনেক বেশি। তাই গ্রাম এলাকা থেকে নমুনা সংগ্রহ আপাতত কমানোর জন্য বলা হয়েছে। শহর ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা হওয়ায় ভাইরাস সংক্রমণের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। কমেক এর আইডিসিআর এর ল্যাব থেকে রোববার রাত সাড়ে ১০টায় প্রকাশিত সর্বশেষ রিপোর্টে কক্সবাজার জেলায় আরো ৭০ জন করোনা পজিটিভ হয়েছেন। এ নিয়ে জেলায় ইতোমধ্যে ১ হাজার ৪৮৫ জন রোগীর শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। যার প্রায় অর্ধেকই কক্সবাজার শহরের বাসিন্দা বলে জানান কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজের (কমেক) অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. অনুপম বড়ুয়া।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, গ্রাম বা উপজেলাগুলোর তুলনায় শহরে করোনা সংক্রমণ বেশি। এইজন্য শহরকে রেডজোন ঘোষণা করা হয়েছে। করোনা সংক্রমণ রোধে আমাদের সবাইকে কড়াকড়িভাবে লকডাউন পালন করতে হবে।

সিভিল সার্জন জানান, করোনায় কক্সবাজার জেলায় এ পর্যন্ত ২৫ জন মারা গেছেন, যারমধ্যে ৩ জন রোহিঙ্গাও রয়েছেন। ইতোমধ্যে ৩২৮ জন রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
তিনি জানান, এ পর্যন্ত মোট ৩৮ জন রোহিঙ্গা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। ৩ জন মারা গেছেন, দুইজন সুস্থ হয়েছেন এবং বাকীরা চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
কক্সবাজারে প্রথম করোনারোগী ধরা পড়ে গত ২৪ মার্চ বিদেশ ফেরত বয়স্ক এক নারীর শরীরে। পরবর্তীতে তিনি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন। তবে করোনার চেয়ে করোনার উপসর্গ নিয়েই কক্সবাজারে মৃত্যুর হার অনেক বেশি বলে মনে করেন কক্সবাজার চেম্বারের সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী। তার মতে, কক্সবাজারে করোনার চেয়ে করোনার উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুর হার ৩/৪ গুণ বেশি।

পাঠকের মতামত: