কক্সবাজার, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশের নাগরিক শনাক্ত করায় নারী কাউন্সিলর কারাগারে

পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ায় গ্রেফতার রোহিঙ্গা নাগরিককে বাংলাদেশি নাগরিক শনাক্ত করায় এক নারী কাউন্সিলরকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।

সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) আদালতে হাজির হয়ে ওই কাউন্সিলর জামিন আবেদন করলে বিচারক মো. মহিউদ্দিন তার জামিন আবেদন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

গ্রেফতার রোহিঙ্গা জামালের বাবার নাম- আমির হোসেন ও মায়ের নাম বেলুয়া বেগম। তারা রাখাইনে ডোমিনা জেলার রাম্যখালি থানার বাসিন্দা। রোহিঙ্গা জামালের রিফিউজি নম্বর- ১৩২২০১৮০১২০১৪৫৮৫২।

কারাগারে পাঠানো বেবী আক্তার- ভান্ডারিয়া পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর।

মামলার বাদী পিরোজপুর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক দেলোয়ার হোসেন জসিম জানান, রোহিঙ্গা সদস্য জামাল তার অপর দুই ভাই আবু তৈয়ব (১৩), আবু হায়াত (১০) এবং তিন বোন রুখাইয়া (২২), জামালিডা (১৬) এবং সোমাকে (৮) নিয়ে ২০১৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে আসেন। এরপর তারা কক্সবাজার জেলার বালুখালী ক্যাম্পে আশ্রয় নেন।

একমাস আগে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিক জামাল ক্যাম্প থেকে পালিয়ে ভান্ডারিয়ায় আসেন। এরপর রোহিঙ্গা নাগরিক জামালকে স্থানীয় শাহীনুর বেগম আশ্রয় দেন এবং তার সন্তান হিসেবে পরিচয় দিয়ে জন্ম সনদ সংগ্রহ করে দেন। জামালকে বাংলাদেশি প্রমাণ করতে ভান্ডারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে বয়সের সনদ এবং রাজাপুর উপজেলার কানুদাসকাঠী-নলবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ২০০৯ সনের অষ্টম শ্রেণি পাসের সার্টিফিকেটও সংগ্রহ করেন।

আর জন্ম সনদে নারী কাউন্সিলর বেবী আক্তার জামালকে ভান্ডারিয়া পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের নাগরিক বলে শনাক্ত করেন। পরে জামালকে জাতীয় পরিচয়পত্র (নম্বর-১৯৯৭৭৯১১৪১১০০০৫১০) সহায়তা করেন কাউন্সিলর শাহীনুর বেগম।

পরে মো. মিজান সিকদার ও শাহীনুর বেগমকে বাবা-মা পরিচয় দিয়ে ১৬ ফেব্রুয়ারি দুপুরে পিরোজপুরের আঞ্চলিক কার্যালয়ে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করে জামাল। তবে আঙুলের ছাপ দিতে গেলে জানা যায় সে মিয়ানমারের নাগরিক।

ওই দিন পিরোজপুর ডিবি পুলিশের এক টিম জামালকে ভান্ডারিয়া থেকে আটক করে। এরপর ১৮ ফেব্রুয়ারি ভান্ডারিয়া থেকে জামালের কথিত মা শাহীনুর বেগমকে আটক করে ডিবি পিরোজপুর আদালতের পাঠালে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন হয়।

এর ধারাবাহিকতায় আজ নারী কাউন্সিলরকেও আদালত কারাগারে পাঠিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আসামি পক্ষের আইনজীবী আবুল কালাম আকন।

এ বিষয়ে পিরোজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসণ) জানান, এ ঘটনায় জামালসহ তিনজনকে আটক করে আদলতে পাঠানো হয়েছে। এর সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

পাঠকের মতামত: