কক্সবাজার, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪

রোহিঙ্গা বিষয়ে চীনকে কতটা বিশ্বাস করা যায়?

বিচারপতি, শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক::

ঘুম ভাঙতেই শুনলাম এক সুসংবাদ। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানিয়েছেন মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ চীনকে আশ্বাস দিয়েছেন তারা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেবেন। সেদিন খবরটি ছিল ঐশ্বরিক বর্ষণের মতো। কিন্তু তার কদিন পরই আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য শুনে কিছুটা হতাশ হলাম।

তিনি চীনসহ কয়েকটি দেশের নাম উল্লেখ করে বললেন, বিশ্বের দেশগুলো রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত নেওয়ার ব্যাপারে যথোপযুক্ত প্রচেষ্টা চালাচ্ছে না। রোহিঙ্গা সমস্যার চাবিকাঠি যে আসলে চীনের হাতে এ ব্যাপারে দ্বিমত পোষণ করার অবকাশ নেই। চীন যে এ সমস্যা জিইয়ে রাখার পেছনে একটা বড় গুণনীয়ক তা ভাবার পেছনে শক্তিশালী যুক্তি রয়েছে। রোহিঙ্গা বিষয় যতবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে উঠেছে চীন ততবারই মিয়ানমারের পক্ষে নস্যাৎকারী ভোট বা ভেটো দিয়ে তা খ-ন করে দিয়েছে। চীন এবং রাশিয়া মিয়ানমারের পক্ষে ভেটো প্রয়োগ না করলে ২০১৭ সালে নিরাপত্তা পরিষদেই রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান হয়ে যেত। কেবল একমাত্র নিরাপত্তা পরিষদেরই রয়েছে প্রয়োগ ক্ষমতা। চীন ও রাশিয়া পরিষদের পাঁচটি স্থায়ী সদস্যভুক্ত হওয়ায় তাদের হাতে ভেটো ক্ষমতা রয়েছে।

২০০৭ সালে চীন প্রথমবারের মতো মিয়ানমারের পক্ষে নিরাপত্তা পরিষদে ভেটো প্রয়োগ করে। সঙ্গে আর এক স্থায়ী সদস্য রাশিয়া ছিল। ২০০৭-এর মার্কিন প্রস্তাবে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার কথাসহ মিয়ানমারের কর্মকান্ডের সমালোচনা ছিল। ভেটো প্রদানের পক্ষে চীনের যুক্তি শুধু হাস্যকরই ছিল না, এটি ছিল জাতিসংঘ সনদ, আন্তর্জাতিক আইন, নিরাপত্তা পরিষদের বিধি এবং ‘রেসপনসিবিলিটি টু প্রটেক্ট’ (সংক্ষেপে
R2P) নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। চীন বলছে, কোনো রাষ্ট্রের মানবাধিকার-সংক্রান্ত প্রশ্ন নাকি নিরাপত্তা পরিষদে আলোচনার বিষয় হতে পারে না। ২০১৭ সালে চীন-রাশিয়া পুনরায় নিরাপত্তা পরিষদে মিয়ানমারের পক্ষে ভেটো প্রয়োগ করে বিশ্বসংস্থায় রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের পথ আবার রুদ্ধ করে দেয়। ২০১৭ সালে উত্থাপিত প্রস্তাবে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়া এবং তাদের নাগরিকত্ব নিশ্চিত করার কথা ছিল। ২০১৬-তে নিরাপত্তা পরিষদে রোহিঙ্গা সমস্যার ওপর একটা ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়েছিল, যাতে জাতিসংঘের রাজনৈতিক বিষয়ের প্রধান জেফরি ফেল্টম্যান রচিত রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিস্তারিত উপস্থাপনের কথা ছিল। কিন্তু চীন ও রাশিয়া ব্রিফিংটি বন্ধ করে দিয়েছিল। ব্রিফিংয়ে ভেটোর বিধান নেই, তবে নয়টি সদস্য রাষ্ট্রের সমর্থন ছাড়া ব্রিফিং হতে পারে না।

২০১৮-এর অক্টোবরে আরও এক দফা ব্রিফিংয়ের আয়োজন করলে চীন-রাশিয়া সেটি ঠেকাতেও মরিয়া হয়ে যায়। কিন্তু নয়টি সদস্য রাষ্ট্র ব্রিফিংয়ের পক্ষে অবস্থান নিলে চীন-রাশিয়ার দুরভিসন্ধি-মূলক অপচেষ্টা ব্যর্থ হয়। এর আগে জাতিসংঘ দূত ক্রিস্টেন স্কেলার বার্গনারের নেতৃত্বে একটি দলকে মিয়ানমারে পাঠানো হয়েছিল ১২ দিনব্যাপী রোহিঙ্গা বিষয়ে তদন্তের জন্য। ২০১৮ সালের অক্টোবরের ব্রিফিংয়ের আগে জাতিসংঘ কর্মকর্তা মার্জুরি ডরুসম্যান সাংবাদিকদের বলেন, রোহিঙ্গা নির্যাতনের ঢল অবিশ্রান্তভাবে চলছে। ব্রিফিংয়ে বার্গনারের তদন্ত প্রতিবেদন উপস্থাপিত হয়। এতে প্রস্তাব ছিল মিয়ানমারে সামরিক সরঞ্জাম পাঠানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং নির্যাতনকারীদের বিচারের জন্য অস্থায়ী ট্রাইব্যুনাল সৃষ্টি অথবা বিচারের জন্য তাদের আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালতের কাঠগড়ায় তোলার। সে প্রস্তাবসমূহ নিরাপত্তা পরিষদে গৃহীত হলে সেদিনই মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হতো, কেননা এতে স্বয়ং সু চিসহ জেনারেলদের হয় অস্থায়ী ট্রাইব্যুনাল অথবা আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হতো, যা ঘটানোর ক্ষমতা একান্তভাবেই নিরাপত্তা পরিষদের। যুক্তরাষ্ট্র, ফরাসি, যুক্তরাজ্যের সঙ্গে যোগ হয়েছিল ছয়টি অস্থায়ী সদস্য ব্রিফিংয়ের পক্ষে। কিন্তু প্রস্তাবসমূহ নিরাপত্তা পরিষদে উত্থাপিত হলে চীন-রাশিয়া তাতে ভেটো দেবে জেনে এটি আর নিরাপত্তা পরিষদের বিবেচনার জন্য তোলা হয়নি। উল্লেখ্য, ব্রিফিংয়ের সিদ্ধান্ত নিরাপত্তা পরিষদের সিদ্ধান্ত না হলেও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এগুলোর প্রভাব অনস্বীকার্য, যার জন্য চীন-রাশিয়া ২০১৮-এর ব্রিফিং ঠেকাতে চেষ্টার ত্রুটি করেনি।
একই বছর সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন রোহিঙ্গা নির্যাতনের আলামত সংগ্রহের জন্য তদন্ত দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়, যাতে আলামতসমূহ সম্ভাব্য বিচারে ব্যবহার করা যায়। এ জন্য অর্থ বরাদ্দের প্রস্তাব করা হলে চীন-রাশিয়া যারপরনাই চেষ্টা করে সেটি প্রতিরোধ করতে, কিন্তু ব্যর্থ হয়। জাতিসংঘের বাজেট কমিটি ২৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্দ করে আলামত সংগ্রহ তদন্তের জন্য। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, সুইজারল্যান্ড ছাড়াও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশসমূহ এবং ওআইসির পক্ষে কুয়েত প্রস্তাবের পক্ষে অবস্থান নেয়।

২০১৯ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে, যেখানে ভেটো চলে না, মিয়ানমারের সমালোচনায় একটি প্রস্তাব উত্থাপিত হলে গতানুগতিকভাবে চীন-রাশিয়া তা খ-ন করতে চেষ্টায় ব্যর্থ হলে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে প্রস্তাবটি গৃহীত হয়। কিন্তু নিরাপত্তা পরিষদের মতো সাধারণ পরিষদের প্রয়োগ বা পুলিশি ক্ষমতা না থাকায় সাধারণ পরিষদের সিদ্ধান্ত সমালোচনার মধ্যেই সীমিত থাকে। ২০০৫ সালে বিশ্বের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ এক মহাসম্মেলনে মিলিত হয়ে এই মর্মে এক অভূতপূর্ব ঐকমত্যে পৌঁছেছিলেন, প্রতিটি দেশের দায়িত্ব তার বাসিন্দাদের গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ, সংখ্যালঘু নিধন এবং মানবতাবিরোধী অপরাধ থেকে রক্ষা করা। এ তত্ত্বটি R2P নামে পরিচিতি লাভ করে। বিশ্ব নেতৃবৃন্দ এ মর্মে ঐকমত্যে পৌঁছেছিলেন যে, কোনো রাষ্ট্র যদি তার বাসিন্দাদের এহেন প্রতিরক্ষা প্রদানে অক্ষম বা অপারগ হয় তাহলে নিরাপত্তা পরিষদের মাধ্যমে দোষী রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে হস্তক্ষেপসহ অন্যান্য ব্যবস্থাও নেওয়া যেতে পারে। আগে নেলসন ম্যান্ডেলা এবং কফি আনান দৃঢ় ভাষায় বলেছিলেন, কোনো রাষ্ট্র সার্বভৌমত্বের মোড়কে ব্যাহ্যিক হস্তক্ষেপ ঠেকাতে পারে না যদি সে রাষ্ট্র ওই চারটি অপরাধ থেকে তার বাসিন্দাদের রক্ষায় ব্যর্থ হয়। এই R2P যদিও আইন নয়, তবু বিশ্বের শীর্ষ নেতাদের সম্মিলিত ঐকমত্যের তত্ত্ব হিসেবে এর প্রয়োগে নৈতিক বাধ্যবাধকতা অপরিসীম। তা ছাড়া প্রয়োজনীয় পরিস্থিতিতে হস্তক্ষেপের ক্ষমতা নিরাপত্তা পরিষদের এমনিতেই রয়েছে। যেহেতু নিরাপত্তা পরিষদের মৌলিক দায়িত্ব পৃথিবীতে শান্তিভঙ্গ রোধ করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা, সে কারণে কোনো রাষ্ট্রে গণহত্যা বা ওই ধরনের অপরাধ রোধকল্পে নিরাপত্তা পরিষদ নিশ্চিতভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। কেননা একটি রাষ্ট্রে ওই ধরনের পরিস্থিতি প্রতিবেশী দেশসমূহে শান্তি বিঘিœত করতে পারে। নিরাপত্তা পরিষদ রুয়ান্ডা, বসনিয়া প্রভৃতি দেশে এ ধরনের পরিস্থিতিতে প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপ করেছে এবং অপরাধীদের বিচারের জন্য অস্থায়ী ফৌজদারি ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠা করেছে যথা আইসিটিআর, আইসিটিওয়াই। সুতরাং কোনো রাষ্ট্রের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিরাপত্তা পরিষদের সিদ্ধান্তের বিষয় হতে পারে না বলে চীন বারবার যে অজুহাতের অবতারণা করেছে তা ফাঁকা বুলি বই কিছু নয়। আসলে যে কোনো মূল্যে মিয়ানমারকে নিরাপত্তা পরিষদের নাগাল থেকে রক্ষা করার জন্যই চীনের এ অজুহাত। মিয়ানমারকে অন্ধ সমর্থন দেওয়ার পেছনে চীনের বিরাট স্বার্থ রয়েছে। প্রথমত বহুকাল ধরেই মিয়ানমার বহির্বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন একটি দেশ, যার একমাত্র বন্ধু দেশ ছিল চীন।

বর্তমানে সে অবস্থার পরিবর্তন হলেও এখনো মিয়ানমারের ওপর চীনের প্রভাব এতটাই নিরঙ্কুশ যে, চীনকে মিয়ানমারের রক্ষাকর্তা বলা ভুল হবে না। রাশিয়ার উল্লেখযোগ্য বাণিজ্য স্বার্থ রয়েছে তবে চীনের মতো নয়।
তা ছাড়া সম্প্রতি চীনের নতুন কিছু স্বার্থ যোগ হয়েছে যার অন্যতম হলো, চীনের ওয়ান বেল্ট প্রকল্পে রাখাইন অঞ্চলে চীনের জন্য ভূমি অপরিহার্য। তার ওপর দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের বেআইনি একক সার্বভৌমত্ব দাবির বিরুদ্ধে সে অঞ্চলের দেশগুলোর সম্মিলিত প্রতিরোধের কারণে চীনের আন্তর্জাতিক কনভেনশনবিরোধী দাবি, যা আনক্লোজ-৩ নামক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের ফসল, হুমকির মুখে পড়ায় আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য চীনের প্রয়োজন বিকল্প ব্যবস্থা। আর সে কারণেই চীন রাখাইন এলাকায় বন্দর নির্মাণ করছে যাতে চীনের স্টেক বৃহৎ, অনেকটা শ্রীলঙ্কার হাম্বানটোটা ও পাকিস্তানের গোয়াদর এলাকায় চীন নির্মিত বন্দরের মতো। চীনের আমদানি-রপ্তানি সামগ্রী চীনা শহর কমিং থেকে রাখাইন এলাকার কিয়াফকিউ নামক বন্দর হয়ে বঙ্গোপসাগরের মধ্য দিয়ে চলাচল করবে আর তাই চীনের চাই জনশূন্য রাখাইন যেটি রোহিঙ্গাদের আবাসস্থল। মিয়ানমার চীনের ওপর এতটাই নির্ভরশীল যে, চীনের কথা অবজ্ঞা করার অবস্থানে দেশটি নেই। গত বছর আন্তর্জাতিক আদালত কয়েকটি অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশনা দিলেও মিয়ানমার তা পালন করছে না, যদিও আইনত মিয়ানমার তা মানতে বাধ্য। যেহেতু আন্তর্জাতিক আদালতের নির্দেশনা ভঙ্গ করলে তার বিরুদ্ধে প্রতিকার চাওয়ার একমাত্র ফোরাম হচ্ছে নিরাপত্তা পরিষদ, তাই এ ব্যাপারেও চীন-রাশিয়ার ভূমিকা হবে সিদ্ধান্তকরী। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালতও তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু করেছে যার ফলে খোদ সু চি এবং জেনারেলদের কাঠগড়ায় দাঁড় হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে এবং সেখানেও নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হিসেবে চীন-রাশিয়ার ওপরই মিয়ানমার নির্ভর করতে চাইবে ত্রাণকর্তা হিসেবে। চীন নিরাপত্তা পরিষদে মিয়ানমারের পক্ষে অন্ধ অবস্থান না নিলে, সম্ভবত রাশিয়াও তার অবস্থান পরিবর্তন করতে পারে। সুতরাং চীন যদি মন থেকে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে মিয়ানমারকে চাপ দেয় বা নিরাপত্তা পরিষদে ভেটো দেওয়া থেকে বিরত থাকে তাহলে রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়া ছাড়া মিয়ানমারের কাছে কোনো বিকল্প থাকবে না। প্রশ্ন হচ্ছে, চীন এ ব্যাপারে কতটুকু প্রত্যয়ী। এও খেয়াল রাখতে হবে, রোহিঙ্গাদের সংখ্যা নিয়ে মিয়ানমার যেন শুভঙ্করের ফাঁক খুঁজতে না পারে।

মার্কিন উপপররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাম্প্রতিক ঢাকা সফর নিশ্চিতভাবে চীনকে শঙ্কিত করেছে এই ভেবে যে, বাংলাদেশ কোয়াড বা ইন্দো-প্যাসিফিক মোর্চায় থাকবে কিনা। এটা মনে করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে যে, এভাবে শঙ্কিত হয়েই চীন সময় ক্ষেপণ না করে রোহিঙ্গা ফেরতের কথা বলছে। সুতরাং নিশ্চিত করে বলা যায়, এ হচ্ছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিচক্ষণ কূটনৈতিক চিন্তা-চেতনার ফসল।

তবে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন যে, বিষয়টি যেখানে মিয়ানমার ও বাংলাদেশের সেখানে রোহিঙ্গা ফিরিয়ে নেওয়ার কথা মিয়ানমারের মুখ দিয়ে না এসে চীন, অর্থাৎ একটি তৃতীয় দেশের মুখ থেকে কেন এলো? চীন একটি বিশ্বাস-অযোগ্য দেশ। ১৯৫৯ সালে চীনা প্রধানমন্ত্রী চৌ এন লাই ভারতে গিয়ে হিন্দি-চিনি ভাই ভাই বলে এর দুই বছর পরই আকস্মিক ভারত আক্রমণ করে বিশ্বাসঘাতকতার চরম নজির সৃষ্টি করেছিলেন। সম্প্রতি শ্রীলঙ্কাকে ঋণ জালের ফাঁদে ফেলে সে দেশের হাম্বানটোটা বন্দরটি ৯৯ বছরের ইজারায় নিয়ে নেয়, যেটিকে শ্রীলঙ্কা সরকার এখন ভুল সিদ্ধান্ত বলে স্বীকার করেছে। একইভাবে চীন মালদ্বীপীয় ভূমি দখলের পাঁয়তারা করছিল যার থেকে এখন মালদ্বীপ বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছে। এসব ঘটনা বিবেচনা এবং রোহিঙ্গা বিষয়ে চীনের অতীত কার্যকলাপ বিশ্লেষণ করলে স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে, চীনকে আসলেই রোহিঙ্গা বিষয়ে বিশ্বাস করা যায় কি? সময়ই এর উত্তর দেবে।

লেখক : আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি।

পাঠকের মতামত: