কক্সবাজার, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে প্রত্যাশিত ফল পাইনি: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

গত চার বছরে রোহিঙ্গা সংকট ঘনীভূত হলেও মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক সরকার এই সমস্যা সমাধানে কার্যকর কোনও পদক্ষেপ নেয়নি বলে মনে করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মাদ শাহরিয়ার আলম। রবিবার (৮ নভেম্বর) বাংলা ট্রিবিউনকে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘২০১৬ ও ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা সমস্যা বড় আকারে দেখা দিয়েছে। তবে এটি সত্যি, এই সংকট সমাধানে আমরা প্রত্যাশিত ফল পাইনি। আমরা আমাদের বন্ধু রাষ্ট্রগুলোকে, বিশেষ করে আঞ্চলিক দেশগুলো ও জাতিসংঘকে বলেছি, এটি সমাধান করার দায়িত্ব তাদের।

মিয়ানমারে গণতন্ত্র অনেক বছর ছিল না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘গত নির্বাচনে সেটি পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ নির্বাচনে আমরা প্রত্যাশা করি গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত থাকবে।

গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হতে সময় দিতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারে দ্রুততম সময়ের মধ্যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে, এটি আমরা আশা করি। পৃথিবীর ক্ষমতাধর রাষ্ট্রগুলোর মতো বাংলাদেশেরও মিয়ানমারে গণতন্ত্র ফেরত আসুক এমন অবস্থান ছিল এবং সামনের দিনগুলোতেও থাকবে।

রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে কী করা হবে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের পরে আমরা প্রত্যাশা করি, যে-ই রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হোন, তাদের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করবো এবং বসবো। তারা অতীতে হওয়া চুক্তিগুলো অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন এবং ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অফ জাস্টিসের যে অন্তর্বর্তীকালীন আদেশগুলো আছে সেই অনুযায়ী মিয়ানমার ব্যবস্থা নেবে সেটি প্রত্যাশা করি।

রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে জানতে চাইলে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মোহাম্মাদ শহীদুল হক বলেন, ‘মিয়ানমারে নতুন সরকার এলেও পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে মনে হয় না।

২০১৫ সালে অং সান সুচি ক্ষমতায় আসার পরে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি তাদের রোহিঙ্গাবিরোধী অবস্থান আরও দৃঢ় হবে।

দরকষাকষির কোনও বিকল্প নেই স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘তবে এর ফলে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন হবে না।

সাবেক পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘বাস্তবতার আলোকে বলা যায়, আন্তর্জাতিক দায়বদ্ধতার যে কাঠামো রয়েছে সেটির ওপর বেশি জোর দেওয়া উচিত।’

উল্লেখ্য, ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অফ জাস্টিস ও ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্টে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যা এবং এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের মামলা কার্যক্রম চলমান আছে।

যুক্তরাষ্ট্রের জো বাইডেনের নেতৃত্বে নতুন সরকার রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা ধারণা করছি, মানবিক সহায়তার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক সমর্থন এখন আরও জোরালো হবে।

নতুন ভূমিকার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ডেমোক্র্যাটরা সব সময়ে মানবাধিকার, আইনের শাসন, গণতন্ত্রসহ অন্যান্য মূল্যবোধের বিষয় অনেক বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে। সেদিক থেকে বলা যায়, নতুন প্রশাসন রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

পাঠকের মতামত: