কক্সবাজার, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

লাদাখ সীমান্তে মুখোমুখি দুই দেশের সেনা

হিমালয় অঞ্চলের লাদাখ সীমান্তে মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে আছে ভারত ও চীন। বুধবার দেশ দুটির সেনারা সীমান্তে পরস্পর থেকে মাত্র কয়েকশ’ মিটার দূরে অবস্থান করছিলেন। প্রায় ৪৫ বছর ধরে সমঝোতা অনুযায়ী আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার বন্ধ রেখেছেন দুই দেশের সেনারা। তবে সম্প্রতি লাদাখ সীমান্তে গুলির ঘটনা ঘটেছে। এ জন্য দু’দেশ একে অপরকে দায়ী করছে।

গত সোমবার ওই গুলির ঘটনা ঘটে। এরপর থেকেই পরমাণু শক্তিধর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা ফের বৃদ্ধি পেয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে দুই দেশের সেনাদের মুখোমুখি অবস্থান নেওয়ার খবর পাওয়া গেল।

নয়াদিল্লির এক সরকারি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, পরিস্থিতি খুবই উত্তেজনাপূর্ণ। লাদাখ সীমান্তের প্যাংগং সো হ্রদের দক্ষিণ পাশের অন্তত চারটি স্থানে ভারত ও চীনের সেনারা খুব কাছাকাছি অবস্থান নিয়ে আছেন। তবে উভয় দেশই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বা লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলের (এলএসি) নিজ নিজ পাশে অবস্থান করছে। চীন এবং ভারত, দু’দেশই প্যাংগং হ্রদের মালিকানা দাবি করে আসছে। নয়াদিল্লির আরেক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, রেজাং লা গিরিপথের কাছে ভারত ও চীনের বাহিনী মাত্র ২০০ মিটারের মতো দূরত্বে অবস্থান নিয়ে আছে।

সোমবার উপগ্রহ থেকে তোলা বেশকিছু ছবি দেশি-বিদেশি সংবাদমাধ্যকে দিয়েছে নয়াদিল্লি। ছবিগুলো প্যাংগং লেকের দক্ষিণ পাশের এলাকা থেকে তোলা। ছবিতে চীনের প্রায় দুই ডজন সেনাকে রাইফেল পিঠে ঝুলিয়ে লম্বা খুঁটির সঙ্গে বাঁধা ধারালো ফলক হাতে দেখা গেছে। তবে বার্তা সংস্থা রয়টার্স ছবিগুলোর সত্যতা স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি।

প্যাংগং হ্রদের উত্তরের ফিঙ্গার এলাকা থেকে সোমবার তোলা বেশকিছু ছবিও সরবরাহ করেছে নয়াদিল্লি। তাতে চীনা সেনাদের আগ্রাসী দেখা গেছে। চীনা সেনারা ফিঙ্গার এরিয়া-ফোরে ফিরে এসেছে বলে অভিযোগ করেছে নয়াদিল্লি। জুলাইয়ে চীনের সেনারা সেখান থেকে পিছু হটলেও, শক্তি বাড়িয়ে ফের ফিরে এসেছে তারা। এখন সেখানে দেড় কিলোমিটারজুড়ে চীনের সেনা ছাউনি দেখা গেছে। সামরিক যানও চলাচল করছে সেখানে। চীনা সংস্থা মেংশির তৈরি মেশিনগান সজ্জিত এসব সামরিক যান পার্বত্য এলাকায় দ্রুত যাতায়াত এবং লড়াইয়ের উপযোগী।

প্যাংগং হ্রদের দক্ষিণ দিকে ৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ তুষার আবৃত একটি নির্জন এলাকার উপত্যকা ও পাহাড়গুলোতে ভারতের প্রায় তিন হাজার সেনা অবস্থান নিয়ে আছে বলে জানিয়েছেন ভারতের একজন সরকারি কর্মকর্তা।

এর আগে গত মাসের শেষ দিকে লাদাখে ভারতীয় অংশের একটি পাহাড় দখলের উদ্যোগ নিচ্ছিল চীনা সেনারা। তাদের গতিবিধি থেকে এমন ধারণা হয় ভারতীয় সেনাদের। এরপর নয়াদিল্লি পাহাড়টি দখলে রাখতে অতিরিক্ত সেনা পাঠায়। এ ঘটনার পর থেকেই মূলত উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে ওই সীমান্তে। সূত্র: রয়টার্স ও আনন্দবাজার পত্রিকা।

পাঠকের মতামত: