কক্সবাজার, মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪

সিনহা হত্যার অভিযোগপত্র যেকোনো সময় : র‍্যাব

কক্সবাজারের টেকনাফে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মুহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার অভিযোগপত্র (চার্জশিট) চূড়ান্তের আনুষ্ঠানিক সব কাজ প্রায় সম্পন্ন করে এনেছে আলোচিত এই মামলার তদন্তকারী সংস্থা র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)।

পুলিশের এই এলিট ফোর্সের মহাপরিচালক (ডিজি) অভিযোগপত্রে স্বাক্ষর করলেই সেটি আদালতে দাখিল করা হবে বলে জানিয়েছেন সংস্থার আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ।

আজ শনিবার বিকেলে এনটিভি অনলাইনকে লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ বলেন, ‘অভিযোগপত্র প্রস্তুতের কাজ শেষ। যদি আগামীকাল (রোববার) র‍্যাব মহাপরিচালক অভিযোগপত্রে স্বাক্ষর করেন তাহলে কালই জমা দেওয়া যাবে। কিন্তু স্বাক্ষরের আগে এ বিষয়ে কিছু বলা যাবে না। তবে আমরা যেকোনো সময় অভিযোগপত্র আদালতে জমা দিব।’

এই মামলার মোট ১৪ আসামির মধ্যে অভিযোগপত্রে কতজনকে অভিযুক্ত করা হচ্ছে- এমন প্রশ্নের উত্তরে র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক বলেন, ‘তাও ডিজি স্যারের সিগনেচারের আগে বলা যাচ্ছে না।’

গত ৩১ জুলাই ঈদুল আজহার আগের রাত সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশ কর্মকর্তা লিয়াকত আলীর গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মুহাম্মদ রাশেদ খান।

এ ঘটনায় চার মাসের বেশি সময় ধরে চলা তদন্ত শেষে আলোচিত মামলাটির অভিযোগপত্র দাখিল করতে যাচ্ছে র‍্যাব। কক্সবাজার আদালতে অভিযোগপত্রটি দাখিল করার কথা রয়েছে।

এদিকে আগামীকাল রোববার অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মুহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলা বাতিল চেয়ে প্রধান আসামি বরখাস্ত পুলিশ কর্মকর্তা লিয়াকত আলীর পক্ষে করা রিভিশন আবেদনের ওপর শুনানির দিন রয়েছে। গত ৪ অক্টোবর এই রিভিশন আবেদনটি করা হয়। এরপর ২০ অক্টোবর সেটির ওপর শুনানির দিন ছিল। কিন্তু সেদিন মেজর সিনহার বোনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল ১০ নভেম্বর দিন ধার্য করেন। ১০ নভেম্বর আসামিপক্ষের আইনজীবী সময় প্রার্থনা করলে বিচারক ১৩ ডিসেম্বর (রোববার) দিন ধার্য করেন। সেই হিসেবে কাল এই রিভিশন আবেদনের শুনানি রয়েছে।

মেজর সিনহা হত্যার পর ৫ আগস্ট তাঁর বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে টেকনাফ থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশসহ নয়জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলায় প্রধান আসামি করা হয় বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক লিয়াকত আলীকে। ওসি (বরখাস্ত) প্রদীপ কুমার দাশকে করা হয় দুই নম্বর আসামি। মামলার তিন নম্বর আসামি করা হয় টেকনাফ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নন্দদুলাল রক্ষিতকে।

এরপর অভিযুক্ত সাত পুলিশ সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে তদন্তে নেমে র‍্যাব হত্যার ঘটনায় স্থানীয় তিনজন, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) তিন সদস্য এবং প্রদীপের দেহরক্ষীসহ মোট ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করে। এ ১৪ জনই বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।

কারাগারে থাকা অভিযুক্ত ১৪ জন হলেন- বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির তৎকালীন পরিদর্শক লিয়াকত আলী, টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, দেহরক্ষী রুবেল শর্মা, টেকনাফ থানার এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, এএসআই লিটন মিয়া, এপিবিএনের এসআই মো. শাহজাহান, কনস্টেবল মো. রাজীব ও মো. আবদুল্লাহ, পুলিশের মামলার সাক্ষী টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের মারিশবুনিয়া গ্রামের নুরুল আমিন, মো. নিজামুদ্দিন ও আয়াজ উদ্দিন।

পাঠকের মতামত: