কক্সবাজার, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

সেপ্টেম্বরে শুরু হবে দেশের প্রথম পাতাল রেলের কাজ

আগামী সেপ্টেম্বরে শুরু হচ্ছে দেশের প্রথম পাতাল রেলের কাজ। যদিও প্রকল্পটি এ বছরের জুলাইয়ে শুরু হওয়ার কথা ছিল। এটি মেট্রো রেল লাইন-১ বা এমআরটি-১ নামে পরিচিত হবে। মেট্রো রেল লাইন-১-এ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত রেললাইন যাবে মাটির নিচ দিয়ে এবং নতুনবাজার থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত হবে উড়ালপথ। উড়াল ও পাতালপথের সমন্বয়ে নির্মিত হতে যাওয়া এমআরটি-১ এর দৈর্ঘ্য ৩১.২৪ কিলোমিটার। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৫২ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা। বহুল কাঙ্ক্ষিত এই প্রকল্পটি শুরু করতে যাচ্ছে ঢাকা মাস ট্রানজিট কম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)।

বুধবার (১৫ জুন) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এমআরটি লাইন-৬-এর অগ্রগতি ও সম্ভাবনা সংক্রান্ত সেমিনার এবং এমআরটি লাইন-১-এর লাইসেন্স হস্তান্তর শীর্ষক এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ডিএমটিসিএল। অনুষ্ঠান শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। এ সময় ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক বলেন, আগামী অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের (জুলাই-সেপ্টেম্বর) মধ্যে এমআরটি-১-এর মাঠ পর্যায়ের কাজ শুরু করা হবে। পাতাল রেলের ডিপোর মূল নির্মাণকাজ শুরুর জন্য জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) অনুমতি চাওয়া হয়েছে। তাদের অনুমতি পাওয়া গেলে কাজ শুরু হবে। এরপর প্রধানমন্ত্রী এই নির্মাণকাজের উদ্বোধন করবেন। প্রথম প্যাকেজে ডিপোর ভূমি উন্নয়ন ও আনুষঙ্গিক অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে। পুরো প্রকল্প ১২টি প্যাকেজে শেষ হবে।

এই পাতাল রেলের কাজ ডিএমটিসিএল করলেও সেতু বিভাগের অধীনে আরেকটি পাতাল রেল নেটওয়ার্ক তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। একই ধরনের কাজ দুই প্রতিষ্ঠান করছে। এতে সমন্বয়হীনতার অভাব রয়েছে, নাকি ডিএমটিসিএলের যোগ্যতার অভাব রয়েছে গণমাধ্যমের এমন প্রশ্নের জবাবে এম এ এন সিদ্দিক বলেন, আমাদের যোগ্যতার কোনো কমতি নেই। এমনকি আমাদের প্রতিষ্ঠানের লোকেরা বিদেশে গিয়েও মেট্রো রেল তৈরিতে কাজ করবে। সেতু বিভাগ চাইলে নিশ্চয়ই আলোচনা করে সমন্বয় করা হবে। এদিকে আগামী ডিসেম্বরে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত যাত্রী নিয়ে চলাচল করবে দেশের প্রথম মেট্রো রেল। এই মেট্রো রেল লাইন-৬-এর নির্মাণকাজের সার্বিক গড় অগ্রগতি হয়েছে ৮০.১০ শতাংশ।

ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমআরটি লাইন-৬-এর অগ্রগতি ও সম্ভাবনা সংক্রান্ত সেমিনারে বলেন, আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে ছয়টি এমআরটি লাইনের কাজ শেষ হবে। এই ছয়টি লাইনের কাজ শেষ হলে মেট্রো রেলে প্রতিদিন প্রায় সাড়ে ৫০ লাখ যাত্রী পরিবহন করা হবে। বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত থেকে জানা যায়, ঢাকা মহানগরীতে যানজট এবং এর প্রভাবে বার্ষিক প্রায় ৩.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বা বর্তমান রেটে প্রায় ৩৩ হাজার ৮৮৮ কোটি টাকা ক্ষতি হচ্ছে। অনুষ্ঠানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ঢাকাবাসীর জন্য এমআরটি প্রধানমন্ত্রীর উপহার। এই এমআরটি চালু হলে যানজট অনেকাংশেই কমে যাবে, তবে পুরোপুরি কমবে না। ট্রানজিট ওরিয়েন্টেড ডেভেলপমেন্ট করেই আমদের এই যানজট নিরসন করতে হবে। পরিকল্পনা প্রণয়নের সময়েই অংশীজনদের সমন্বয় হলে আরো বেশি সুফল পাওয়া যাবে।

এ সময় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কল্যাণে আর মাত্র ১০ দিন পরেই স্বপ্নের পদ্মা সেতু চালু হবে, মাত্র ১৮০ দিন পরেই চালু হবে মেট্রো রেল এবং ছয় হাজার ৯৩৫ দিন পরে বাংলাদেশ হবে উন্নত দেশ। মেট্রো রেল চালু হলে ঢাকার যোগাযোগব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। আমাদের মনে রাখতে হবে, মেট্রো রেলকেন্দ্রিক যে জীবনব্যবস্থা গড়ে উঠবে, তার সঙ্গে খাপ খাইয়ে আমাদের পরিকল্পনা করতে হবে।

পাঠকের মতামত: