কক্সবাজার, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

সৈকতে স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না পর্যটকরা

আবু তাহের, কক্সবাজার::

বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজারে এখন পর্যটকের ভিড়। প্রতিদিন হাজারো পর্যটকের পদভারে মুখর হয়ে ওঠে সৈকতের বালুচর। কিন্তু এই করোনা পরিস্থিতির মাঝেও মাস্ক পরা বা স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই নেই বেশিরভাগ পর্যটকের মধ্যে৷

সৈকতের সুগন্ধা ও লাবণী পয়েন্টে নিয়মিতই মাইকিংয়ের মাধ্যমে পর্যটকদের সচেতন করে চলেছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। জেলা প্রশাসনের কয়েকজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভিযান পরিচালনা করছেন। জরিমানাও করা হয়। কিন্তু এরপরও পরিস্থিতির কোনো উন্নতি নেই। ম্যাজিস্ট্রেট দেখলে কেউ মাস্ক বের করেন, একটু পরে সেই মাস্ক গড়াগড়ি খায় সৈকতের বালুতে। আর এই মাস্ক কুড়াতেই হিমশিম খাচ্ছেন সৈকতের অর্ধশত পরিচ্ছন্নতাকর্মী।

করোনা সংক্রমণ বাড়তেই থাকায় স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদের নেতৃত্বে এক সপ্তাহ ধরে শহরজুড়ে ব্যাপক অভিযান চালাচ্ছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে উদাসীনতার অভিযোগে করা হচ্ছে মামলা ও জরিমানা। তার পরও পরিস্থিতির উন্নতি নেই।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাদিয়া সুলতানা জানান, প্রতিদিন লক্ষাধিক পর্যটক কক্সবাজারে আসছেন। ফলে কক্সবাজারে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি।

পর্যটকসহ সবাইকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে বলা হচ্ছে। মাস্ক যত্রতত্র না ফেলতে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। মাস্ক ছাড়া চলাফেরা না করতে মাইকিং করে বলা হচ্ছে। সাদিয়া বলেন, জরিমানা করা আমাদের মূল উদ্দেশ্য নয়। জনসচেতনতা বাড়ানোই আসল লক্ষ্য।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. আমিন আল পারভেজ বলেন, দেশব্যাপী করোনা সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ জন্য কক্সবাজারে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। এখানে আসা পর্যটকদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু অনেকেই স্বাস্থ্যবিধি মানতে চান না।

সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে এ প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় চট্টগ্রাম থেকে আসা পর্যটক অনিকের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘মাস্ক সঙ্গে এনেছিলাম। এখন পানিতে নামব, তাই ফেলে দিয়েছি। পানিতে নামলে তো মাস্কটা ভিজে যাবে। পরে মাস্ক কিনে পরব।’

রাজধানীর মিরপুর থেকে আসা পর্যটক ওয়াজেদ ইসলাম বলেন, ‘বাসায় থাকতে থাকতে বিরক্ত হয়ে গেছি। তাই কক্সবাজার ছুটে আসা। এখানে স্বাস্থ্যবিধি কেউ মানছে না।’

মাস্ক ব্যবহার নিয়ে নানা অজুহাত দিচ্ছেন পর্যটকরা। কিন্তু এর পর সবকিছু যেন স্বাভাবিক। পানিতে, বালিয়াড়ি ও কিটকটে (ছাতায়) বসে আনন্দ আর হৈ-হুল্লোড়ে মেতে রয়েছেন সবাই।

সি-সেইভ লাইফ গার্ডের ইনচার্জ সাইফুল্লাহ সিফাত বলেন, ‘করোনার সংক্রমণ বাড়ার কারণে লাইফ গার্ডের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি পর্যটকদের মাস্ক ব্যবহারে উৎসাহিত করছি। কিন্তু কে শোনে কার কথা। পর্যটকরা মাস্ক ব্যবহার না করে তা ফেলে দিচ্ছেন সৈকতের বালুচরে।’

ট্যুরিস্ট পুলিশের উপপরিদর্শক এরশাদ হোসেন বলেন, প্রতিদিনই সৈকতে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। আগে পর্যটকদের নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করতাম। এখন করোনা পরিস্থিতিতে পর্যটকদের সচেতন করতে মাইকিং, লিফলেট বিতরণ করছি।

পাঠকের মতামত: